মুজিববর্ষের উপহার: নতুন ঘর পাচ্ছেন ১৩৭৪ গৃহহীন পরিবার

মুজিববর্ষে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩৭৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে নতুন ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। চট্টগ্রামের ৮ উপজেলায় যাদের জমি এবং ঘর নেই- স্থানীয় প্রশাসনের তত্বাবধানে তাদের এসব ঘর মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুচ্ছগ্রাম (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী এবং ফটিকছড়ির ১ হাজার ৩৭৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার ৬৫টি, পটিয়ার ৫০২টি, চন্দনাইশের ৫টি, সাতকানিয়ার ১৩৪টি, লোহাগাড়ার ১৮টি, বাঁশখালীর ২৫টি এবং ফটিকছড়ির ৬০০টি গৃহহীন পরিবার ২ শতাংস খাস জমির বন্দোবস্তসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকার এসব নতুন ঘর পাবেন।

প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৩৭৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ২৩৮টি পরিবারকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ২ শতাংস জমি বন্দোবস্তসহ নতুন ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বাকিরা পর্যায়ক্রমে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত ও নতুন সেমিপাকা ঘর পাবেন।

এই সময়ে নতুন ঘর পাওয়াদের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার ১০টি, পটিয়ার ৬০টি, চন্দনাইশের ৫টি, সাতকানিয়ার ২৫টি, লোহাগাড়ার ১৮টি, বাঁশখালীর ২৫টি এবং ফটিকছড়ির ৭০টি গৃহহীন পরিবার রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে ২৩৮টি পরিবারকে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) অনুকূলে ৪০ কোটি ৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

ইটের দেওয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি এসব সেমিপাকা ঘরে ২টি শয়ন কক্ষ, ১টি খোলা বারান্দা, ১টি রান্না ঘর এবং ১টি শৌচাগার থাকবে।

চট্টগ্রামের ৮ উপজেলার মধ্যে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ঘর পাচ্ছেন ফটিকছড়ি উপজেলার ভূমি ও গৃহহীন মানুষেরা। এই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফীন জানান, সরকারি নির্দেশনা পেয়ে ভূমি ও গৃহহীন মানুষের জন্য নতুন ঘর নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছি আমরা।

তিনি বলেন, উপজেলার যেসব সরকারি খাস জমিতে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হবে, সেসব জমি ঘর নির্মাণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলার ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। সরকার নির্দেশিত সময়েই ঘর নির্মাণ করে আমরা তাদের বুঝিয়ে দেবো।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম জাকারিয়া জানান, মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে সরকার ক ক্যাটাগরিতে যারা ভূমি ও গৃহহীন তাদের এবং খ ক্যাটাগরিতে যাদের ভূমি আছে কিন্তু গৃহ নেই তাদের নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ক ক্যাটাগরির অন্তর্ভূক্ত ভূমি ও গৃহহীন চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩৭৪টি পরিবারের তালিকা আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৩৮টি পরিবারকে জমি বন্দোবস্ত ও ঘর নির্মাণ করে দিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের পর্যায়ক্রমে জমি বন্দোবস্তসহ ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

‘মুজিববর্ষে দেশের সব গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন। চট্টগ্রামে সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। ’ যোগ করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে একজন মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকেন- সেই লক্ষ্যে কাজ করছে ভূমি মন্ত্রণালয়। আগামী ২ মাসের মধ্যে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রায় ৩ হাজার ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে জমি বন্দোবস্তসহ নতুন ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রাথমিকভাবে এসব পরিবার জমি বন্দোবস্তসহ নতুন ঘর পাবেন। পর্যায়ক্রমে সব ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে এর আওতায় আনা হবে। ভূমি ও গৃহহীন সব মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার যে যুগান্তকারী উদ্যোগ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিয়েছেন মুজিববর্ষেই তা বাস্তবায়ন করবো আমরা।