• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

মোংলা কাস্টমসের নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতার ৭টি পে-অর্ডারই জাল

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২১  

পে-অর্ডার জালিয়াতির ঘটনায় তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ছাড়াও কালো তালিকাভুক্ত করেছে মোংলা কাস্টমস হাউস। এ সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ৫৬  কোটি টাকার আমদানিকৃত গাড়ি ও বাণিজ্যিক পণ্যের নিলামে অংশ নিতে পে-অর্ডার জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার নবীনগর এলাকার সিদ্দিক টেডিং, ধানমন্ডি এলাকার মোনালিসা আক্তার সুমা ও বংশাল এলাকার বশির আহম্মেদ নামের এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ৭টি পে-অর্ডারে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার জাল পে-অর্ডার জমা দেন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিষ্ঠান ৩টির স্বত্বাধিকারী মোঃ জাহিদ সিদ্দিক রেজা, মোনালিসা আক্তার সুমা ও বশির আহম্মেদের নামে এজাহার দায়ের দিয়েছে মোংলা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ। একই সাথে এই চক্রটি ইতোপূর্বে মোংলা কাস্টমসে একাধিকবার নিলামে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়ে পণ্য খালাসও নিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। 
মোংলা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের ১৩ জুন ৪০টি লটের অনুকূলে নিলাম দরপত্র আহŸান করে সংস্থাটি। এতে একাধিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করেন। গত ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত নিলামে ৫টি লটের অনুকূলে (আমদানিকৃত গাড়ি ও বাণিজ্যিক পণ্য) ৫৫ কোটি ৯৫ লাখ ৮ হাজার ৬৪৩ টাকার সর্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হয় ঢাকার নবীনগর এলাকার সিদ্দিক ট্রেডিং, ধানমন্ডি এলাকার মোনালিসা আক্তার সুমা ও বংশাল এলাকার বশির আহম্মেদ নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান। নিলাম পাওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার আগে দরপত্রের সাথে জমা দেয়া ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ৭টি পে-অর্ডারগুলো চেক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। যাচাই-বাছাইয়ে ৭টি পে-অর্ডারের মধ্যে ৫টি আইএফআইসি ব্যাংকের হলেও কোন শাখার নাম উলে­খ নেই। আইএফআইসি ব্যাংকের ৩১ মার্চ ইস্যু করা ৪টি পে-অর্ডারে ১৪ লাখ ও ২৮ জুলাই ইস্যু করা একটি পে-অর্ডারে ২০ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার পে-অর্ডার দুইটিতে ১ লাখ ৩০ হাজার ও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আইএফআইসি ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার অনুসন্ধান করলে ব্যাংক দু’টি থেকে জানানো হয় ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ৭টি পে-অর্ডারই জাল। এ ঘটনার পর ২২ আগস্ট মোংলা কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ রুম্মান আলী বাদী হয়ে মোঃ জাহিদ সিদ্দিক রেজা, মোনালিসা আক্তার সুমা ও বশির আহম্মেদ নামে মোংলা থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। 

এ বিষয়ে সিদ্দিক ট্রেডিং-এর স্বত্বাধিকার জাহিদ সিদ্দিক রেজা বলেন, নিলামের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। যে যার মতো ডকুমেন্টস জমা দিবে কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করবে। তবে এটা কোন ফৌজদারি অপরাধ না। আমাকে কর্তৃপক্ষ অফিসিয়ালি নোটিশ দিলে আমি তার জবাব দিবো। আমার প্রতিষ্ঠান কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, এটা তাদের বিধানে থাকলে আমার কোন আপত্তি নেই। 
মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার হোসেন আহমেদ বলেন, নিলামে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হওয়ার পর ৩টি প্রতিষ্ঠানের ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ৭টি পে-অর্ডার জাল ধরা পড়েছে। আমরা জাল পে-অর্ডারের বিষয়ে থানায় এজাহার করেছি। ওই প্রতিষ্ঠান ৩টিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। 
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অভিযোগটি ত্র“টিপূর্ণ হওয়ায় সংশোধন করে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এজাহারে সংশোধিত কপি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ