• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

তীব্র খরায় বিপাকে কৃষক ও চিংড়ি চাষিরা

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২২  

বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের রামপাল ও মোংলা। এই দুই উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার অর্ধেক আসে কৃষি থেকে। বাকী অর্ধেক আসে চিংড়ি চাষ করে। একদিকে সাদা সোনা খ্যাত চিংড়িতে ভাইরাস, অন্যদিকে এই শ্রাবণ মাসেও তীব্র খরা ও লবণাক্ততার কারণে এই দুই উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে কৃষকরা বৃষ্টি না হওয়ায় ধান চাষ করতে পারছে না।

শ্রাবণ মাসেও কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা ধানের বীজতলাও তৈরি করতে পারছে না। এই অবস্থায় তীব্র লবণাক্ত পানির প্রভাবে জমির উর্বরতা শক্তি কমে এ অঞ্চলের কৃষিকে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। মোংলার সাহেবের মেঠ গ্রামের কৃষক ও চিংড়ি চাষি দেলোয়ার হেসেন জানান, আমার ৫ একর জমিতে চিংড়ির পাশাপাশি ধান চাষ করে থাকি। এবার তীব্র খরায় ভাইরাস লেগে সব চিংড়ি মরে গেছে। এই শ্রাবণ মাসেও কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় মৎস্য খামারের পানিতে তীব্র লবণাক্ত থাকায় ধান চাষের জন্য বীজতলাও তৈরি করতে পারছিনা। চিংড়ি মরে শেষ হয়েছে। এবার ধান চাষ করতে পারলে এবার না খেয়ে মরতে হবে।

রামপালের বড়দিয়া গ্রামের কৃষক মোন্তাজ মোল্লা জানান, প্রতি বছর আমি চিংড়ি চাষের পাশাপাশি কয়েক বিঘা জমিতে আগমনের আবাদ করি। এখন শ্রাবণ মাসেরও অর্ধেক চলে গেছে। বীজ, সার এনে ঘরে রেখেছি ২ মাস ধরে। বৃষ্টি হচ্ছে না। তীব্র খরার কারণে ভাইরাস লেগে মেরে গেছে চিংড়ি, করা যাচ্ছেনা না ধান চাষ। এমন উবয় সংকটে পড়েছেন কৃষক ও চিংড়ি চাষিরা। এই অবস্থায় কি হবে জানিনা তারা, একই কথা বলেন পেড়িখালী গ্রামের এরশাদ হাকিম জুয়েলও।

রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী মন্ডল জানান, নদী বেষ্টিত এই উপকূলীয় অঞ্চলে অপরিকল্পিত ভাবে নদী খালে বাঁধ দিয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পেয়েছে। কৃষি প্রধান এই এলাকার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। এই শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি না হওয়ায় লবণাক্ত জমিতে এবার আমন আবাদ কঠিন হয়ে পড়বে। অনেক জমি অনাবাদী পড়ে থাকার শঙ্কার কথা জানান এই কর্মকর্তা। 

রামপাল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, তীব্র খরাসহ তাপ মাত্রা বৃদ্ধি ও ভাইরাসের কারণে রামপাল ও মোংলা উপজেলায় চিংড়ি চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এমনটি অব্যাহত থাকলে খামারিদের মৎস্য চাষ আগামীতে আরও কঠিন হয়ে পড়বে।  

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ