• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

রেলপথের দৈর্ঘ্য বেড়ে ২৯৫৬ কি.মি, ছড়িয়ে যাবে সারা দেশে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০২০  

বাংলাদেশ রেলওয়েকে গণপরিবহনের নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, যুগোপযোগী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে রেলপথ বিভাগকে ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর একটা স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ে উন্নীত করা হয়। রেল যোগাযোগ ও পরিবহন পরিসেবার মানোন্নয়নে ৭ম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প ২০২১ শীর্ষক জাতীয় দলিলে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্গমানে রেলওয়ের উন্নয়নে জন্য অধিক অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওেয়ের হিসাবে রেলওয়ের দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৯৫৬ কিলোমিটার। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার।

মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এক বছরে ৭৯ কিলোমিটার নতুন রেলপথ যুক্ত হয়েছে। নতুন অনুমোদিত রেলওয়ের মহাপরিকল্পনায় জুলাই ২০১৬ থেকে জুন ২০৪৫ পর্যন্ত ৬টি পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ২৩০ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত আছে। বর্তমানে ৪৪টি জেলায় রেলপথ রয়েছে। ২০৪০ সালে ভোলা জেলা ছাড়া বাংলাদেশের ৬৩টি জেলা রেলপথে যুক্ত করা হবে। তবে বরিশাল থেকে কীভাবে ভোলা জেলাকে যুক্ত করা যায় সেই বিষয়েও স্ট্যাডি চলমান।

নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর কল্যাণে সরাসরি রেলপথ যাবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। এরপর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার। প্রথম ধাপে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে অনেক জেলা রেলপথে যুক্ত হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমরা ৩৩০ দশমিক ১৫ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন নির্মাণ, ২৪৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেল লাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করেছি। ফলে আমাদের মোট রেলপথের দৈর্ঘ্যও বেড়েছে। আমরা রেলপথকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ২০৪০ সালে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ভোলা বাদে সব জেলাকে রেলপথে কানেক্ট করতে পারবো। এরপরেই আমাদের অন্যতম উদ্যোগ হবে রেলের সেবা বৃদ্ধি করা। আমাদের মাস্টারপ্ল্যান আছে। সবা জেলায় আমরা রেলপথ নিয়ে যাবো। পদ্মাসেতু হয়ে গেলে বরিশাল বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় রেলপথ চলে যাবে। মাদারীপুর, বরগুনা ও ঝলাকাঠি জেলায়ে রেলপথ চলে যাবে। এছাড়াও ভোলাকে কীভাবে রেলপথে যুক্ত করা যায় সেই পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হচ্ছে।’

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়,  ৩১০টি স্টেশনসহ বর্তমানে মিটার গেজ রেলপথের দৈর্ঘ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৪৬ কিলোমিটার। অন্যদিকে ১৫৬টি স্টেশনসহ ব্রডগেজ রেলপথের দৈর্ঘ্য বেড়ে ৬৭৭ কিলোমিটার হয়েছে। ৪৩৩ টি স্টেশনসহ মোট ডুয়েলগেজের দৈর্ঘ্য ৪৬৬ কিলোমিটার।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ রেলওেয়ের নতুন নতুন লোকোমেটিভ ও ওয়াগন পুনর্বাসন, রেললাইন সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসন,  রেলস্টেশন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, কম্পিউটার বেইজড সিগনালিং ব্যবস্থা প্রবর্তন,  ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট নতুন রেলওয়ে সার্ভিস উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্জিত সাফল্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৩৩০ দশমিক ১৫ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন নির্মাণ, ২৪৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেল লাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা। এছাড়াও ১ হাজার ১৩৫ কিলোমিটার রেল লাইন পুনর্বাসন, পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। ৯১টি স্টেশন বিল্ডিং নতুন ভবন, ১১৭টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন, ২৯৫টি নতুন রেল সেতু নির্মাণ, ৬৪৪টি রেল সেতু পুনর্বাসন, ৪৬টি লোকোমেটিভ, ২০ সেট ডেমু সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও ২৭০টি যাত্রীবাহী কোচ, ৪৩০টি কোচ পুনর্বাসন, ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন, ৩০টি ব্রেক ভ্যান, ২৭৭টি মালবাহী ওয়াগন, ৯০টি স্টেশন সিগন্যালিং ব্যবস্থা উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। ৯টি স্টেশন সিগন্যালিং ব্যবস্থা পুনর্বাসন, ১২৭টি নতুন ট্রেন চালুকরণ, ৩৮টি চলমান ট্রেন সার্ভিস বৃদ্ধির কাজও করা হয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ