• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বঙ্গবন্ধু টানেল : বছর ঘুরলেই স্বপ্ন পূরণ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১  

বছর ঘুরলেই চালু হতে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বহুল প্রত্যাশিত দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ। আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে স্বপ্নের এই টানেল চালু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে টানেল নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে স্বপ্নের এই টানেল চালু হতে পারে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে কাজের গতি কিছুটা মন্থর হয়ে গেলেও প্রকল্প এলাকার বর্তমান চিত্র পুরোটাই অন্যরকম। ২৪ ঘণ্টা বিরামহীনভাবে কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এরইমধ্যে বাড়তি জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রপাতি ও মেশিনারিজ। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী বছরই নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণ যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। আর এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম টানেল।

প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘সময়সূচি অনুযায়ী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। করোনার দ্বিতীয় টেউয়ের কারণে আমাদের পরিকল্পনা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’

জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের দুই প্রান্তের যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি কক্সবাজারের সঙ্গে সড়কপথে দূরত্ব কমে আসবে। সেইসঙ্গে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গেও আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানায়, ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার ও ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। টানেলটি চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কর্ণফুলী নদীর অপর পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখানের সড়কের সাথে যুক্ত হবে। টানেলে যানবাহন চলাচল শুরু হলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা গাড়িগুলোকে আর চট্টগ্রাম নগরীতে প্রবেশ করতে হবে না। পতেঙ্গার আউটার রিংরোড হয়ে টানেলের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। এতে চট্টগ্রাম নগরীর ওপর বাড়তি যানবাহনের চাপ অনেকটাই কমে আসবে। ইতিমধ্যে টানেলের দুইটি টিউবের মধ্যে একটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। দুই লেন বিশিষ্ট টিউব দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি ও ভারী গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে চীন সরকার।

এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। চীনের সাংহাই নগরীর আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ ধারনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হচ্ছে এই টানেল। প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হলে পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতি। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম হয়ে উঠবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় স্থান।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ