• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

রঙিন ফুলে রঙিন জীবনের হাতছানি

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  

দূর থেকে তাকালেই দেখা যায় মাচায় সবুজের সঙ্গে দুলছে রঙিন ফুল। সাদা এবং বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুলে প্রকৃতি যেন একাকার। মৌসুম শুরুর আগেই এমন মনোরম দৃশ্য দেখা দিয়েছে উত্তরের কৃষিসমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার শিম বাগানে। ছড়াচ্ছে অপরূপ সৌন্দর্য। আর হাতছানি দিচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার এক অন্যরকম দৃশ্য। আগাম শিম চাষ করে উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন এখানকার কৃষকেরা।

জানা গেছে, এ জেলার শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম শিমের আবাদ। বিগত কয়েক বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। ভালো ফলন ও লাভের আশায় চাষিরা খরিপ-২ মৌসুমেও শিমের আবাদ করছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন এই আবাদে ঝুঁকছেন এখানকার চাষিরা। 

সম্প্রতি সদর উপজেলার সাবেক গাড়াতি ছিটমহল ও হাড়িভাসা এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, শীত শুরু না হতেই ফুলে ভরা শীতকালীন সবজি শিমের বাগান। পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আগে বাজারে নামাতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে, এমন প্রত্যাশা তাদের। তাই মৌসুম শুরুর আগেই অনেকটা প্রতিযোগিতার মতোই শিমের আবাদ করছেন তারা। 

কথা হয় হাড়িভাসা ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া এলাকার চাষি রবিউল ইসলামের সঙ্গে। দুই একর জমিতে শিমের আবাদ করেছেন তিনি। বাগানে ছোট ছোট ফল নামতে শুরু করেছে। ভালো দাম পেলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি।

পাইকানীপাড়া এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, গত বছর দুই বিঘা জমি থেকে দেড় লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছিলেন। এবছরও দেড় বিঘা আবাদ করেছেন। এতে খরচ করেছেন ৩৫ হাজার টাকার মতো। ভালো দাম পেলে লাখ টাকারও বেশি বিক্রির প্রত্যাশা তার।

হাফিজাবাদ ইউনিয়নের কামারপাড়া এলাকার কৃষক ওমর ফারুক বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে জমি থেকেই শিম নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। তবে আমদানি বাড়লে নেমে আসে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। তারপরও ভালো লাভ হয়।

এদিকে, ভালো ফলনের প্রত্যাশা করলেও হতাশায় ভুগছেন নিচু জমির শিম চাষিরা। গত কয়েক দিন আগের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিম বাগান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর রবি মৌসুমে এ জেলায় পাঁচ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক সবজির আবাদ হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ২০০ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৩৩ হাজার ১০০ মেট্রিকটন শাক সবজি। এ বছর এখনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়নি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান বলেন, পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা শিম চাষের জন্য বেশ সম্ভাবনাময়ী। এটা শীতকালীন সবজি হলেও এখন প্রায় সব মৌসুমেই হচ্ছে। ভালো উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অফিস।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ