• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

তিন হাজার কি.মি পাড়ি দিয়ে নিউজিল্যান্ডে অ্যান্টার্কটিক পেঙ্গুইন!

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২১  

একটি পেঙ্গুইন অ্যান্টার্কটিকার প্রাকৃতিক আবাস থেকে অন্তত তিন হাজার কিলোমিটার দূরে নিউজিল্যান্ডে এসে পৌঁছেছে। এটি একটি অ্যাডেলি পেঙ্গুইন, তবে স্থানীয়রা স্নেহকরে তাকে পিংগু নামে ডাকে। উপকূলে এটিকে একা ঘুরে বেড়াতে দেখযায়। পরে হ্যারি সিং নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা তাকে উদ্ধার করেন। তিনি বলেছিন, তিনি প্রথমে পেঙ্গুইনটিকে "নরম খেলনা" বলে মনে করেছিলেন। নিউজিল্যান্ডের উপকূলে অ্যাডেলি পেঙ্গুইন পাওয়ার এটি তৃতীয় ঘটনা।

মিস্টার সিং এবং তার স্ত্রী ক্রাইস্টচার্চ শহরের দক্ষিণে অবস্থিত বার্ডলিংস ফ্ল্যাটে সমুদ্র সৈকতে দিনের কাজ শেষে হাঁটতে বেরিয়ে প্রথম পেঙ্গুইনটির দেখা পান। মিস্টার সিং বিবিসিকে বলেন, "প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি  একটি নরম খেলনা, হঠাৎ পেঙ্গুইনটি তার মাথা নাড়াল। তাই আমি বুঝতে পেরেছি যে এটি বাস্তব।"

মিস্টার সিং-এর ফেসবুক পেজে পোস্ট করা পেঙ্গুইনির ফুটেজে এটিকে পথ হরানো এবং একা দেখা যাচ্ছে। "এটা এক ঘন্টার জন্য নড়ল না... শুধু তাকিয়ে ছিল, ও অনেক ক্লান্ত" মিস্টার সিং বলেন। মিঃ সিং পেঙ্গুইন উদ্ধারকারীদের ডাকতে যান, কারণ তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন যে পেঙ্গুইনটি পানিতে নামছে না, যার ফলে এটি সমুদ্র সৈকতে ঘোরাফেরা করা অন্যান্য শিকারী প্রাণীদের জন্য একটি সম্ভাব্য লক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে। "আমরা এটার জীবন কুকুর বা বিড়ালের পেটে শেষ করতে চাইনি," তিনি বলেন।

অবশেষে তিনি থমাস স্ট্র্যাকের কাছে যান, যিনি প্রায় ১০ বছর ধরে নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপে পেঙ্গুইনদের পুনর্বাসন করছেন। মিঃ স্ট্র্যাকে অবাক হয়েছিলেন যে পেঙ্গুইনটি একটি অ্যাডেলি পেঙ্গুইনের একটি প্রজাতি যা একচেটিয়াভাবে অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে বাস করে। মিঃ স্ট্র্যাক, একজন পশুচিকিৎসক সহ  সেদিনই সন্ধ্যায় পেঙ্গুইনটিকে উদ্ধার করেন।

কম ওজন এবং ডিহাইড্রেটেড

পিংগুর রক্ত ​​পরীক্ষায় দেখা গেছে তার ওজন কিছুটা কম এবং পানিশূন্যতায় ভুগছিল। তারপর থেকে তাকে তরল খাবার দেওয়া হয়েছে এবং একটি ফিডিং টিউবের মাধ্যমে এটিকে খাওয়ানো হচ্ছে। পাখিটিকে অবশেষে ব্যাঙ্কস উপদ্বীপের একটি নিরাপদ সমুদ্র সৈকতে ছেড়ে দেওয়া হবে, যেটি কুকুর মুক্ত।

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ এবং ১৯৬২ সালের দুটি পেঙ্গুইন উদ্ধারের পর নিউজিল্যান্ডের উপকূলে এটি অ্যাডেলি পেঙ্গুইন পাওয়া যাওয়ার ইতিহাসের তৃতীয় উদাহরণ। অ্যাডেলি পাওয়া নিউজিল্যান্ডে বিরল, তবে ভবিষ্যতে যদি তাদের আরো বেশি দেখা যায় তবে এটি একটি উদ্বেগজনক লক্ষণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।

ওটাগো ইউনিভার্সিটির প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ফিলিপ সেডন নিউজ সাইট দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, "আমি মনে করি যদি আমরা অ্যাডেলি পেঙ্গুইনের বার্ষিক চলাচল গবেষণা শুরু করি, তবে এর চলাচলের পথ সম্পর্কে আমারা ধারণা পেতাম। সমুদ্রে এমন কিছু পরিবর্তন হয়েছে যা আমাদের বোঝা দরকার।" "আরো অধ্যয়ন আমাদের আরো বুঝতে সাহায্য করবে, পেঙ্গুইনরা কোথায় যায়, তারা কী করে, সংখ্যার প্রবণতা কেমন - তারা সাধারণভাবে সেই সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমাদের কি কিছু বলতে চলেছে?"

সূত্র: এমটিভি।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ