• সোমবার ০২ অক্টোবর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৭ ১৪৩০

  • || ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

আর্জেন্টিনায় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২৪.৪ শতাংশ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

আর্জেন্টিনায় গত মাসে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ১২৪ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। এ হার ১৯৯১ সালের পর সর্বোচ্চ। এতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির নাগরিকদের জীবনযাত্রায় চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়ছে দেশটির আসন্ন প্রেসেডেন্সিয়াল নির্বাচনে। খবর: রয়টার্স ও আল জাজিরা।

আর্জেন্টিনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রত্যাশিত হারকে ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে ক্রেতারা এক দোকান থেকে আরেক দোকানে একটু ছাড়ের আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত মাসে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায় ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। এতে দেশটির ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে যাবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং অক্টোবরের নির্বাচন ঘিরে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

রাজধানী বুয়েন্স আইরেসের তাপিয়ালাস এলকার একটি মুদি দোকানে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা লরা সেলিক বলেন, খুব কঠিন সময় পার করছি। প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমরা একটু কম দামের আশায় দোকানে দোকানে ঘুরছি। এক দোকানে কোনো পণ্য সস্তায় পাচ্ছি তো, আরেক পণ্যে হাত দিতে পারছি না। তারা স্বামী এ সময় ক্যালকুলেটরে ফল ও সবজির দাম হিসাব করছিলেন। তিনি বলেন, এভাবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। কেনাকাটা একেবারে কমিয়ে দিয়েছি।

আর্জেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্লেষকদের এক জরিপে দেখা গেছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ১৬৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত মাসের পূর্বাভাসে যা ১৪১ শতাংশ বলা হয়েছিল। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, মাসের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি যথাক্রমে ১২ ও ৯ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

রয়টার্স বলছে, আর্জেন্টিনা অর্থনৈতিক সংকটের চক্রে পড়ে গেছে। এ সংকটের মূল কারণ দেশটির মুদ্রা পেসোর অস্বাভাবিক অবমূল্যায়ন বা দরপতন, মূল্যস্ফীতি ৩ সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ তলানিতে নামা এবং খরার কারণে শস্য উৎপাদন কম হওয়া।

এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ঋণচুক্তির আওতায় আর্জেন্টিনার ৪৪ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪০০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা। এটি সংস্থার বৃহত্তম সহায়তা প্রকল্প। তবে এই চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় রয়েছে। সংস্থা মনে করে, আর্জেন্টিনার সামষ্টিক অর্থনীতি এখনও ভারসাম্যহীন, এখনও ভঙ্গুর। দেশটির সরকারের উচিত, মূল্যস্ফীতি হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া এবং রিজার্ভ সংগ্রহে জোর দেয়া।

প্রায় এক দশক আগে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানি ওয়াইপিএফের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ১৬ বিলিয়ন বা এক হাজার ৬০০ ডলারের মামলা করা হয়। সম্প্রতি সেই মামলার রায় প্রকাশিত হয়েছে। নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের বিচারক লরেটা প্রেসকা রুল জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, আর্জেন্টিনাকে অবশ্যই ১৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। তেল অনুসন্ধানে ত্রুটি থাকায় দেশটিকে এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

কয়েক বছর ধরে মূল্যস্ফীতিতে নাকাল আর্জেন্টিনার জনগণ। তবে দুই দশকের মধ্যে প্রথম গত মাসে মূল্যস্ফীতি দুই সংখ্যা পেরিয়ে গেছে। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, চলতি মাসেও একই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

এর মধ্যেই অর্থমন্ত্রী সার্জিও মাসা দেশবাসীর কাছে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে কট্টর দক্ষিণপন্থি জেভিয়ের মিলেই গত মাসের প্রাইমারি নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েচেন। প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে তাকেই ফেভারিট মনে করা হচ্ছে।

মূল্যস্ফীতির কারণে নির্বাচনের আয়োজন করা অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। এর আগে ১৯৮০ সালে ‘হাইপার ইনফ্লেশন’ ছিল দেশটিতে।

ল্যাটিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতি এককের ঘরে অবস্থান করছে। জুলাই থেকে গুরুর মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৭০ শতাংশ।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ