• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন নেতৃত্ব খুঁজে বের করবো

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় বিতর্কিতদের দলের কোনো পর্যায়ে ঠাঁই না দেয়ার কথা জানিয়ে দলটির নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং আস্থা রয়েছে- এমন নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে চান তিনি।

‘আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গাউডলাইন অনুযায়ী আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য সুসংগঠিত করার জন্য; যারা নেতা-কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য, দলের ভাবমূর্তি যাদের দিয়ে রক্ষা হবে, তাদের দলের নেতৃত্বে আনবো। যাদের দ্বারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ-মাদক-দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তারা দলের কোনো পর্যায়ে নেতা হতে পারবে না। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এটা।’

সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজের বাসভবনে একান্ত আলাপে এই লক্ষ্যের কথা জানান এস এম কামাল হোসেন।

মিষ্টভাষী, সদালাপী, একজন সাবেক সফল ছাত্রনেতা, মেধাবী ও আধুনিক চিন্তামনষ্ক রাজনীতিবিদ হিসাবে পরিচিতি পাওয়া এস এম কামালকে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে সাংগঠনিক পদে পদোন্নতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির তকমা পাওয়া এই নেতা পদ পেয়ে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন নেত্রীকে। জানিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা এবং তার চাওয়ার প্রতি নজর রাখতে দলকে শক্তিশালী করতে নিজেকে উজাড় করে দিতে চান।

তৃণমূল শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিজের দায়িত্বের কথা জানাতে গিয়ে এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘নেত্রী আমাদের সাংগঠনিক পদে যাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, আমরা যদি আন্তরিক হই আমি মনে করি তৃণমূলে দল গোছাতে আমাদের কোনো কষ্ট হবে না। নেত্রীর গাইডলাইন অনুযায়ী তৃণমূল থেকে সংগঠন করে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নে সম্মেলনগুলো করতে হবে। দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। এখানে আমাদের নিজস্ব কোনো এজেন্ডা নেই। আমাদের এজন্ডো হচ্ছে দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা দলকে শক্তিশালী করা।’

‘আমরা মানুষের প্রত্যাশা ও ভালোবাসা...যেটি আমাদের নেত্রী বলেছেন, যাদের ওপর মানুষের আস্থা থাকবে, গ্রহণযোগ্যতা থাকবে; তাদের খুঁজে বের করে নেতৃত্ব আনার চেষ্টা করবো। আমরা কোনো ব্যক্তির ওপর দুর্বল নই, আবার কোনো ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষ বা বিরাগও নই। যারা দলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, মানুষের ভালোবাসা ও আস্থা যারা অর্জন করতে পারবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন যারা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে তাদেরকে দলের নেতৃত্বে এনে দলকে সুসংগঠিত করবো।’

দলকে ভালোবেসে তৃণমূল কাজ করে, তাদের চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘তৃণমূলের নেতকর্মী নিজেদের জন্য কিছু চায় না। তারা চায় দলটা ভালো থাকুক। এলাকার উপজেলার চেয়ারম্যান আছেন, সংসদ সদস্য আছেন, কেন্দ্রীয় নেতা আছেন; তারা তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুক। তাদের সুখ দুঃখে পাশে থাকুক। এটাই তাদের প্রত্যাশা।’

‘তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আহামরি চাওয়ার কিছু নেই। তারা মনে করে জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন আমরা সবাই ভালো আছি। তারা মনে করে যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, দলের কোনো পর্যায়ে তাদের নেতৃত্বে রাখার প্রয়োজন নেই। তৃণমূলের  নেতাকর্মীরা যা মনে করে আমাদের নেত্রীও সেই চিন্তা করে। আমরা মাঝখানে যারা নেতৃত্ব দেই আমাদের ভালো হতে হবে। সততা ও দক্ষতার সঙ্গে দলকে শক্তিশালী করতে হবে’, বলেন এস এম কামাল হোসেন।

শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন এক এবং অভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া যেমন উন্নয়ন ভাবা যায় না, তেমনি উন্নয়ন জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া ভাবা যায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তারা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি, নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। সেটা জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বা খালেদা জিয়া; তারা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। আর শেখ হাসিনা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। পার্থক্য হলো এটি। শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ আর উন্নয়ন এক ও অভিন্ন।’

তিনি বলেন, ‘দেশের যা কিছু ভালো অর্জন তা কিন্তু আওয়ামী লীগের মাধ্যমে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে মানুষের রায় এনেছেন। রায় আনার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর একক নির্দেশেনা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তার সততা, তার দক্ষতা, তার দেশপ্রেম-এসব গুণের কারণে বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষের আস্থা বিশ্বাস তৈরি হয়েছিলো। আবার বঙ্গবন্ধুরও মানুষের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস ছিল- সেই দুটো জিনিস এক হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। আওয়ামী লীগে, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু-তিনটি এক ও অভিন্ন। একটি বাদ দিয়ে আরেকটির কথা চিন্তা করা যায় না।’

‘বঙ্গবন্ধু দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়টি যখন বাস্তবায়ন করতে গিয়েছিলেন, তখন তাকে হত্যা করা হলো। তাকে হত্যা করার পর শেখ হাসিনাই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে এনেছেন, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে স্বপ্ন দেখেছেন; সেই অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষে জননেত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন’, বলেন আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক।

ব্যক্তিগত পরিচিতি: এস এম কামাল হোসেন ৩১ জানুয়ারি ১৯৬০ সালে গোপালগঞ্জ জেলার, কাশিয়ানী থানার জোনাসুরে গ্রামে জন্মগ্রহণ  করেন। পিতা মরহুম বাকা মিয়া এবং মাতা মরহুমা আবেজা খাতুন। ওরাকান্দি মিড হাইস্কুল থেকে এসএসসি, খুলনা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। মাস্টার্স শেষ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সিটি ল কলেজ থেকে এলএলবি পাস করে ঢাকা বারের সদস্য হন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে এস এম কামাল এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক। স্ত্রীর নুরানী আক্তার ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলের শিক্ষিকা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ