• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বেইজিংকে সব সময় পাশে চায় ঢাকা

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২২  

বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনকে অব্যাহতভাবে পাশে চায় বাংলাদেশ। একইসঙ্গে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে চায় ঢাকা। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সফরকালে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনাকে অগ্রাধিকার দেবে ঢাকা। সবদিক বিবেচনায় এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন নীতি নির্ধারকরা।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার (৬ আগস্ট) দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে চীনা মন্ত্রীর।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনকে অব্যাহতভাবে পাশে চাই এবং আমরা চীনের বিনিয়োগ বেশি করে চাই। আমাদের দিক থেকে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা অগ্রাধিকারে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে চীন থেকে ১৪০ কোটি ডলার এবং হংকং থেকে ১২০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ বাংলাদেশে এসেছে। চীনের সহযোগিতায় আনোয়ারায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে।

চীন বা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি অস্বাস্থ্যকর না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের বাণিজ্য সুবিধা আছে এবং সেটিকে আরও বেশি করে ব্যবহার করতে হবে।  এজন্য বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।’

প্রসঙ্গত, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ১২০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ প্রায় ৭০ কোটি ডলারের মতো পণ্য ওই দেশে রফতানি করে থাকে।

এদিকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন  বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে চীনের যেসব কার্যক্রম রয়েছে, সেগুলোর আলোকে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ।’

খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা

কোভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে সারা বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানি সমস্যা দেখা দিয়েছে এবং এর ফলে দুটি পণ্যের দাম অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ কী ভাবছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের উদ্যোগ যদি আমাদের জন্য সহায়ক হয়, তবে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাবো।’

তিনি বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশীয় আঙ্গিকে অনেক উদ্যোগ আছে এবং ওইসব বিষয়ে তারা যদি আমাদেরকে সহযোগিতা করতে পারে, বা তাদের যে উদ্যোগ আছে, সেখান থেকে আমরা যদি কিছু পাই, তা আমাদের জন্য সহায়ক হবে।’ মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘সেগুলো আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় থাকবে। তবে তাদের যদি ভূ-কৌশলগত উদ্যোগ থাকে, সেটি আমাদের আরও দেখতে হবে।’

তাইওয়ান ও ভূ-কৌশল

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যানসি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে চীন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিও প্রকাশ করে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘তাইওয়ান বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে তারা (চীন) তুলবে এবং ওয়ান-চায়না নীতি আমাদের আছে।’

চীনের নতুন দুটি উদ্যোগ গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে— কোভিডের থেকে উত্তরন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট এবং এগুলো নিয়েই আমরা বেশি ব্যস্ত রয়েছি। বিভিন্ন পরাশক্তির মধ্যে যে দ্বন্দ্ব সেটিতে জড়ানোর খুব একটা আগ্রহ নেই।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চীনের সঙ্গে অনেকদিন ধরে কাজ করছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে তাদের জোরালো ভূমিকা চায় ঢাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি না হলে প্রত্যাবাসন হবে না। এ বিষয়ে তাদের (চণি) জোরালো ভূমিকার বিষয়ে বলবো।’

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ