• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে নতুন জাতের উচ্চফলনশীল আম ‘মেহেদী-২’

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবর ২০২০  

বাংলাদেশ নতুন নাবি জাতের (লেট ভ্যাইটি) আম মেহেদী-২। চলতি বছর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারে এ জাতের আম উদ্ভাবিত হয়েছে।  অক্টোবরের শুরুতেই এ জাতের আম পেকেছে। দেশে নতুন জাতের এ আমের বাণিজ্যিক চাষাবাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টার সূত্র জানিয়েছে।

কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “ফল উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশবাসীর পুষ্টির চাহিদা পূরনের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ গ্রহণ করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী  মাসুদ দেড় বছর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন এ জাতের আমের একটি ডাল এনে আমাকে দেন। আমি কাশিয়ানী হর্টিকালচারে  ডালটি এনে কলম করে রোপন করি। নিয়মিত যত্ন ও পরিচর্যা করতে থাকি। এ বছর এপ্রিল মাসে গাছে ফুল আসে। এ ফুল থেকে গাছে ৬টি আম ধরে। আক্টোবরে শুরুতেই এ আম পেকেছে। এ আমে রোগ বালই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই। আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী এ আমটি আকারে বড়। প্রতিটি আমের ওজন কমবেশি ৫ শ’ গ্রাম। আমে আঁশ নেই, আঁটি ছোট। সুগারের পরিমাণ ২২ ভাগ। খেতে সুস্বাদু। আমের ৮৮%-ই খা্ওয়া যায়।”

তিনি আরও বলেন, এ জাত বছরে দু’ বার আম দেবে।  অক্টোবরে গাছ থেকে আম সংগ্রহ করার পর আবার নভেম্বর-ডিসেম্বরে গাছে ফুল আসে। মার্চ-এপ্রিল মাসে গাছ থেকে আবার পাকা আম পাওয়া যাবে। ৫ বছর বয়সী এ জাতের একটি আম গাছ থেকে বছরে ২ থেকে ৩ মণ আম পাওয়া সম্ভব। দেশে প্রচলিত আমের তুলনায় এ জাতের আম অনেক বেশি ফলন দিতে সক্ষম। নাবি জাতের  (লেট ভ্যারাইট) আম হিসেবে বাজারে প্রতি কেজি আম ২ থেকে ৩ শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। নতুন জাতের এ আম চাষ করে কৃষক লাভবান হবেন। এ আম  দেশের বিশাল জনগোষ্ঠির পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে। তাই দেশে এ জাতের আমের বাণিজ্যিক আবাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা হর্টি কালচার সেন্টারে আমসহ বিভিন্ন ফলের চারা উৎপাদনের করে গোপালগঞ্জ সহ আশপাশের জেলায় ফলের উৎপাদন বাড়িয়েছি। উৎপাদিত ফল থেকে এসব জেলার বিশাল জনগোষ্ঠী পুষ্টি পাচ্ছেন। এছাড়া সারাদেশে মেহেদী-১, মেহেদী-২, কার্টিমন, গৌড়মতি, তাইওয়ান গ্রিন, ব্যানানা, তোতাপরি, সূর্যডিম,বারি-৪,হাড়িভাঙ্গা, সুরমাই ফজলি, হিমসাগর আমের চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। আমরা ইতিমধ্যে কৃষকদের দিয়ে গোপালগঞ্জ জেলায় বেশ কয়েকটি উচ্চফলনশীল উন্নতজাতের  আমের প্রদর্শনী প্লট করিয়েছি। এখানে আম উৎপাদন শুরু হয়েছে। 

এছাড়া, এ বছর কাশিয়ানী হর্টিকালচার  সেন্টারে দেশি আমবীজ থেকে ১ লাখ রুটস্টক করা হয়েছে। এসব রুটস্টকের মাথায় গ্রাফটিং করে উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের আমের চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব চারা সরকার নির্ধারিত সুলভ মূল্যে বিক্রয় করা হবে। এখান থেকে সৌখিন ও বাণিজ্যিক কৃষকরা চারা সংগ্রহ করে আমের চাষ করে লাভবান হতে পারবেন।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ