• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জ ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ বেড়েছে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২৩  

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায়  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্ববধানে ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ বেড়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, তরমুজ, সবজি, ডাল ও তেল ফসল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক ইঞ্চি জমিও আনাবাদি না রেখে আবাদের আওতায় আনার আহবান জানান। এ আহবানে সাড়া দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস বিভিন্ন ফসলের আবাদ বৃদ্ধির জন্য গত বছরের নভেম্বর থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করেন। তারা কৃষকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ, প্রণোদনার বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করেন। এছাড়া কৃষকের ক্ষেত সরেজমিনে পরিদর্শন করে তারা কৃষককে পরামর্শ দিয়েছে। কৃষকও আনাবাদি  জমি চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা মাঠে নেমে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৩০০ হেক্টর জমিতে ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাফরোজা আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করি। কৃষকদের বিনামূল্যে প্রণোদনার বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করি। চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করি। কৃষক আমাদের আহবানে সাড়া দিয়ে ফসল আবাদ করেছে। কৃষকের মাঠে গিয়ে আমরা সরেজমিনে পরামর্শ দিয়েছি। তাই  তারা ৩০০ হেক্টর জমিতে  বিভিন্ন ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করেছে। এরমধ্যে কৃষক ১৩৪ হেক্টরে বোরোধান, ১০৪ হেক্টরে সবজি,  ৩৮ হেক্টরে ডাল, ১৯ হেক্টরে তরমুজ ও ৫ হেক্টরে তেল ফসলের আবাদ  করেন। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩০০ হেক্টরে ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ উপজেলায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্বতী বৈরাগী বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা মাঠে মাঠে গিয়েছি। আনাবাদি  জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছি। তারা আমাদের আহবানে ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। তাই আনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এ কাজ করতে গিয়ে কৃষকদের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরো নীবিড় হয়েছে। ভবিষ্যতে এ সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে আমরা তাদের দিয়ে আরো ভালো কাজ করাতে পারব। তারা আরো বেশিবেশি করে সোনার ফসল ফলাতে পারবেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদীঘলিয়া গ্রামের কৃষক চয়ন ভূইয়া বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনাবাদি ২ একর জমিতে পেঁেপর আবাদ করেছি।  পেঁপে গাছের অবস্থা বেশ ভালো। এছাড়া বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছি। এ ব্যাপারে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস আমাদের সব ধরণের সহযোগিতা দিয়েছে। তাই আনাবাদি অন্তত ৪ একর জমিতে সবজি ও ফলের আবাদ করেছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার  গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক হাবিব শেখ বলেন, আমার ২ বিঘা জমি আছে। বছরে এ ২ বিঘা জমিতে ২ বার ফসল ফলাই। বছরের অন্য সময় জমি পানির নিচে থাকে। আমার বাড়ির পাশের ৩০ শতাংশ বসত বাড়ির জমি সারা বছর পতিত থাকে। তাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ পতিত জমিতে ফসল চাষাবাদে আমাকে উদ্বুদ্ধ করে। তাদের কাছ থেকে বীজ পেয়ে প্রথম লাল শাক আবাদ করি। শাল শাক বিক্রির পর লাউ চাষ করি। লাউ শেষ হলে সেখানে ডাটার চাষ করেছি। এখান থেকে এখন ডাটা তুলে বাজারে বিক্রি করছি। গত ৫ মাসে এ জমি থেকে উৎপাদিত শাক, সবজি দিয়ে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পুরণ করেছি। বাড়তি শাক, সবজি বাজারে বিক্রি করে অন্তত ৩০ হাজার টাকা আয় করেছি। আমার দেখাদেখি প্রতিবেশিরা বাড়ির পাশের পতিত জমি চাষাবাদের উদ্যোগ নিয়েছেন। অনেকে চাষাবাদ শুরু করেছেন। এভাবে চাষাবাদ বাড়লে দেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে আমাদের মত কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে। 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ