• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

নৌকার বিজয় হলে বাংলাদেশ বিজয়ী হয় : সাবের হোসেন চৌধুরী

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৮  

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, নৌকার বিজয় হলে বাংলাদেশ বিজয়ী হয়, নৌকা এগিয়ে গেলে বাংলাদেশের মানুষও এগিয়ে যায়। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসন থেকে নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নৌকার বিজয়ের মাধ্যমে আমরা যদি পরবর্তী সরকার গঠন করতে পারি তাহলে বিগত ১০ বছরে এই এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে সেই উন্নয়নের ধারা আমরা বজায় রাখব।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁও তিলপাপাড়া এলাকায় পূর্ব খিলগাঁও সমাজকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলমগীর চৌধূরী, খিলগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি লায়ন শরীফ আলী খান, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মতবিনিময় সভায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে রাস্তাঘাট সংস্কার, পার্ক নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবির কথা তুলে ধরা হয়। সাবের হোসেন চৌধুরী তাদের দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে পূরণ করার আশ্বাস দেন।
আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জাতীয়ভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলেই স্থানীয়ভাবে আমরা উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আজকে আমরা যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হাতে নিচ্ছি তার ৭০ ভাগ প্রকল্পের অর্থায়ন আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে করছি। অর্থাৎ কোনো বৈদেশিক সাহায্যের দিকে এখন আর আমাদের তাকিয়ে থাকতে হয় না। এটা সম্ভব হয়েছে পরপর দুই মেয়াদে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বলে। তিনি যদি পরপর দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী না থাকতেন তাহলে আজকে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে যে উন্নয়ন আমরা দেখছি সেটা সম্ভব হতো না।
তিনি আরো বলেন, আগে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ ছিলাম, সেখান থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে থাকবে। আমরা যদি সেই উন্নত বাংলাদেশের প্রত্যাশা করি, তাহলে আমাদের প্রথম কাজ হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই এলাকা থেকে নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা। ভোটার হিসেবে আপনারা যদি আপনাদের দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করেন তাহলে এই এলাকা থেকে নৌকার বিজয় কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। ৩০ ডিসেম্বর নৌকার বিজয় নিশ্চিত হলে জানুয়ারি থেকে আগামী ৫ বছর প্রতিটি দিন এই এলাকাকে কীভাবে আরো উন্নত করা যায়, শান্তিময় করা যায় আমরা সবাই মিলে সে বিষয়টি নিশ্চিত করব। আর তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই এলাকা থেকে নৌকাকে বিজয়ী করার আহবান জানান সাবের হোসেন চৌধুরী।
এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বিগত ১০ বছরে এই এলাকার মানুষের মৌলিক চাহিদা ও সমস্যাগুলো কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়টি আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। এক সময় এই এলাকায় (খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা) তীব্র পানির সংকট ছিল। গত ১০ বছরের এই এলাকায় আমরা সর্বোচ্চসংখ্যক ৬৪টি পানির পাম্প স্থাপন করেছি। যার ফলে ৭ লাখ ২০ হাজার মানুষ পানির সুবিধার আওতায় চলে এসেছে। অতীতে বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং হতো, সেটি এখন আর নেই। এলাকার মানুষের শতভাগ বিদ্যুতের চাহিদা আমরা নিশ্চিত করেছি। এ এলাকার মানুষকে আগে চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হতো। কিন্তু এখন নিজ এলাকায় তারা উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে পারছেন। এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে মুগদায় ৫০০ বেডের আধুনিক সরকারি হাসপাতাল আমরা করেছি। একই সঙ্গে অত্যাধুনিক মেডিকেল কলেজ ও নার্সেস ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। এই হাসপাতাল থেকে গত ৫ বছরে ১৭ লাখ ৪৮ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন। অল্প সময়ে এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে এটি একটি বড় অর্জন। এলাকাবাসীর কল্যাণে খিলগাঁও এলাকায় আমরা কবরস্থান করেছি। বাংলাদেশের প্রথম ফ্লাইওভার আমাদের এই নির্বাচনী এলাকায়। কিন্তু ফ্লাইওভারের মূল নকশা থেকে বাসাবো থেকে মতিঝিলে যাওয়ার লুপটি একটি গোষ্ঠী বাদ দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাদ দেয়া লুপটি আমরা নির্মাণ করেছি। এখন অনায়াসে যে কেউ এই লুপ ব্যবহার করে বাসাবো থেকে মতিঝিলে যেতে পারছেন।
তিনি আরো বলেন, যত দিন যাচ্ছে এলাকাবাসীর চাহিদা তত বাড়ছে। বিগত ১০ বছরে এলাকার ৪৫ হাজার ছাত্রছাত্রীকে সরকারি স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছি। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের অত্যাধুনিক সুবিধা সংবলিত সরকারি স্কুল ও কলেজ আমরা সবুজবাগে প্রতিষ্ঠা করেছি। এই প্রতিষ্ঠানে সব এলাকার শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনার সমান সুযোগ পায় সে জন্য প্রত্যেক এলাকার জন্য আলাদা কোটা সংরক্ষণ করেছি। এই এলাকায় একটি এইচআর কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, সেখানে এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য বিশেষ কোটার ব্যবস্থা করা হবে। আগামীতে এই এলাকায় একটি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। খিলগাঁও এলাকা একটি পরিকল্পিত এলাকা উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এ এলাকার মাস্টার প্লানে যে সুযোগ সুবিধাগুলো ছিল আগামীতে সেগুলো আমরা নিশ্চিত করব।
এলাকার মানুষের সার্বিক নিরাপত্তার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও মাদকের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। যদি কেউ আমার দলের বা অঙ্গসংগঠনের নাম ব্যবহার করে অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দেয়া আছে। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান আপসহীন ও সুস্পষ্ট।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ