বাংলাদেশি তালেবান
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
যে তালেবান দলের হাতে আমি ২০০১ সালের যুদ্ধের সময় আটক হয়েছিলাম, সেই দলের কমান্ডার বাংলাদেশ কোথায় তা চেনেন না। তাকে আমি এবং তার কিছু সহকর্মী বুঝিয়েছি যে এটা বার্মার পাশে, ভারতের পাশের মুসলিম রাষ্ট্র। অথচ ‘বাংলাদেশি তালেবানরা’ এখন আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা দখলে লাফাচ্ছে। এ ঘটনার কথা বলায়, টকশোতে হোস্ট আমাকে প্রশ্ন করলেন, আপনি বলছেন তালেবান বাংলাদেশ চেনে না আর আমরা শুনছি বাংলাদেশে তালেবানের ঘাঁটি আছে; সেটা কীভাবে সম্ভব?
বাংলাদেশে কি আসলে তালেবানের ঘাঁটি আছে? আমার দৃষ্টিতে নেই। না থাকার কারণ হচ্ছে তালেবানের আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। তাদের উদ্বেগ ও আগ্রহ এখন আফগানিস্তানকেন্দ্রিক, সেখানে কীভাবে আগের চেয়ে বেশি প্রভাব নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে। কারণ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তারা আফগানিস্তানে যতটা এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে এবার তার থেকে বেশি এলাকা তাদের দখলে। এবার কান্দাহার নয়, কাবুলে তাদের সরকারের কেন্দ্রীয় দফতর। বলতে গেলে পুরো আফগানিস্তান এখন তাদের হাতের কব্জায়, যদিও পানশির উপত্যকা এখন পর্যন্ত তাদের দখলে এসেছে কি না তা নিরপেক্ষ সোর্স থেকে জানা যাচ্ছে না।
২০০১ সালে তালেবান যখন ক্ষমতাচ্যুত হয় তখন একটি প্রখ্যাত বিদেশি ম্যাগাজিন আজগুবি সংবাদ পরিবেশন করে বলে যে, একটি বিশেষ জাহাজ একদল তালেবান যোদ্ধাকে বাংলাদেশের টেকনাফে রেখে গিয়েছিল। আমি তখনও এটিকে একটি গাঁজাখুরি গল্প বলেছিলাম। কারণ যে ধরনের চেহারা এবং শারীরিক কাঠামো তালেবানের রয়েছে সেটা আমাদের থেকে অনেক ভিন্ন; অন্য একটি জনপদে মিশে যাওয়ার মতো ভাষাগত সমস্যা তো রয়েছেই। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে গাঢাকা দেওয়াটা যতটা সহজ সেটা তালেবান বা অন্য কোনো গোষ্ঠীর পক্ষে দলবেঁধে এসে মিশে যাওয়া সম্ভব নয়।
তালেবান আমাদের এখানে আসার সুযোগ নেই কিন্তু আমাদের এখান থেকে আফগানিস্তানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আছে কি না? এ প্রশ্নটা বারবার আসে। কারণ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আফগানদের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে বা পাকিস্তানে শিক্ষারত অনেক বাংলাদেশি যুদ্ধ করার জন্য গিয়েছিল। কিন্তু সেই বাস্তবতা এখন নেই। এখন কেন বাংলাদেশি যোদ্ধা তালেবানের প্রয়োজন হবে বা বাংলাদেশি কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে তারা ট্রেনিং দিতে যাবে? ভারতের কাশ্মিরে মুসলমানরা যেভাবে সরকারের নির্যাতনের শিকার বা চীনের উইঘুর মুসলিমরা যেসব নির্যাতন ভোগ করছে কিংবা রাশিয়ায় চেচেন মুসলিমদের যে বিদ্রোহ চলছে- সে রকম কোনো ধর্মীয় নিপীড়নের ঘটনা তো বাংলাদেশে নেই।
এটাও রটেছিল যে, ২০০১ সালের আফগানযুদ্ধে তালেবানের পক্ষে কিছু বাংলাদেশিও আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়ছে। আমি কিন্তু তারও কোনো সত্যতা পাইনি তখন। তালেবান বাহিনী অস্বীকার করেছে বরং বলেছে, দু-একজন বাবুর্চি থাকতে পারে। একই কথা আমাকে পাকিস্তানের স্বনামধন্য সাংবাদিক হামিদ মীরও বলেছিলেন, যিনি আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাৎকার নিয়ে বিখ্যাত তখন। আমার ধারণা এসব বাংলাদেশি বাংলাদেশ থেকেও যায়নি।
পাকিস্তানে অনেক বাংলাদেশি বাবুর্চি পেশায় কাজ করে। তাদের কেউ যেতে পারে। আফগান সীমান্ত শহর চমনে কিছু বাংলাদেশি বাবুর্চি কাজ করে, আমাকে আমার হোটেলের ম্যানেজারও বলেছিলেন। এমনকি চমনের সাধারণ পাকিস্তানিরাও বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন ওয়াকিবহাল নয়। তবে তারা সবাই বাংলাদেশকে চেনে, আগে পাকিস্তানের অংশ ছিল সেটাও জানে। ক্রিকেটারদের চেনে এবং খেলা দেখার সময় টিভিতে স্টেডিয়ামের বাইরে ক্যামেরায় ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যাম এবং রিকশা দেখেছে বলে জানায়।
তালেবান বাংলাদেশে আসার বা বাংলাদেশিরা আফগানিস্তানে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে আসার কোনো সম্ভাবনা এখন নেই। তাহলে তালেবান উত্থানে বাংলাদেশের শঙ্কার জায়গাটা কোথায়? অবশ্যই শঙ্কার কারণ রয়েছে এবং ব্যাপক সতর্কতার প্রয়োজন পড়েছে। কারণ আশির দশকে আফগানিস্তানে ভ্রমণকারী ইসলামী মৌলবাদীরা পরে দেশে ফিরে এসে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি) এবং জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) সহ জঙ্গিগোষ্ঠী গঠন করে।
আফগানিস্তান থেকে আশির দশকে যারা ফেরত এসেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম দুজন হলেন আব্দুর রহমান ও মুফতি আব্দুল হান্নান। জঙ্গি তৎপরতার দায়ে এই শীর্ষ দুজনসহ ১৬ জনের ফাঁসি হয়েছে। জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদে ১৪ জন আফগানফেরত ছিল। এরাই নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির বাইরে গিয়ে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করেছিল বলে তালেবানের উত্থান নতুন শঙ্কার বিষয় হয়েছে।
এরা বোমা পুঁতে শেখ হাসিনাকে মারার ষড়যন্ত্র করেছিল, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল, জেএমবি ১৬ বছর আগে দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছিল এবং সর্বশেষ গুলশানে হোলি আর্টিসান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা করে সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশের মাথা হেট করে দিয়েছিল। হোলি আর্টিসানের ঘটনার পরই সরকার জঙ্গি দমনে আন্তরিকভাবে তৎপর হয়েছে। আজ দেশে অনেক স্বস্তি এসেছে।
সরকারের কাছে কারা কারা আফগানিস্তান থেকে ফেরত এসেছিল, তাদের সঠিক তালিকাও নেই। কারণ তখন সরকারি মদতেই পাকিস্তান, সৌদি আরব ও মার্কিন গোয়েন্দাদের তৈরি আফগান মুজাহিদীনে যোগ দিতে গিয়েছিল। শুধু আফগানিস্তান নয়, কসোভো যুদ্ধ এবং সিরিয়ায় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের যুদ্ধেও বাংলাদেশের অনেক যুবক অংশ নিয়েছে, যদিও সবাই দেশ থেকে যায়নি, প্রবাস থেকে যোগ দিয়েছে। সিরিয়া থেকে ফিরে ঢাকায় বিমান বন্দরে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে।
তাই বলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায়, বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানের মতো তালেবান নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তা করার দরকার নেই। তবে হেফাজতি আদর্শের মাদরাসা ও এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর নজরদারির দরকার আছে। নজরদারি দরকার তালেবান আদর্শের ইসলামি দলগুলোর ওপরও। যদিও আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশি তালেবানের সঙ্গে আফগান তালেবান বাহিনীর অফিসিয়াল কোনো সম্পর্ক এখনও তৈরি হয়নি এবং এখানকার ইসলামপন্থি দলগুলোর সঙ্গেও তাদের অফিসিয়াল কোনো সম্পর্ক এখনও নেই। তবে তারা যে ধরনের আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র শাসন করতে চায়, নারীকে দেখতে চায়, ক্ষমতায় যেতে চায়- সেটি তারা তালেবানের মধ্যে দেখতে পায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে এই বাংলাদেশি তালেবানরা আফগান তালেবানের বিজয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছে। এই ধর্মান্ধ, মাথামোটা শ্রেণি তাদের মতের সঙ্গে কারও মত না মিললে ভারতের দালাল বলে গালি দেয়। আস্তিককে নাস্তিক বলা এদের মজ্জাগত স্বভাব। ভিন্ন ধর্মালম্বী সম্পর্কে এরা অসহিষ্ণু। মাথার মধ্যে সারাক্ষণ জেহাদ। এদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ভারতীয় হিন্দু জঙ্গিরাও, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়াকে না রেখেছে সোশ্যাল, না রেখেছে মিডিয়া। শুধু ঘৃণার চাষ হচ্ছে এখানে। সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এখানে নজর দেওয়া দরকার।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট, ইরাক ও আফগান যুদ্ধ-সংবাদ সংগ্রহের জন্য খ্যাত।
- গোপালগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ
- গোপালগঞ্জে ধ্রি হুইলার ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত
- ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন, পলকেই নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ
- টানা দুইদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, হিট এলার্ট জারি
- ৮৭ হাজার টাকার মদ খান পরীমণি, পার্সেল না দেওয়ায় শুরু হয় পাগলামি
- ৪ লাখ টাকায় হামলা করানো হয় সালমান খানের বাড়িতে
- বাগেরহাটে প্রাণি সম্পদ মেলা
- বিছানার ভেলায় চড়ে সদাই কিনছেন শারজাহবাসী
- সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক, বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: কাদের
- ৫ লাখ টাকায় সালমানের বাসায় গুলির নির্দেশ!
- মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস: প্রধানমন্ত্রী
- ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চর কনটেইনার টার্মিনাল
- মাঠ প্রশাসন সামলাতে হার্ডলাইনে সরকার
- ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা
- দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- এক সফটওয়্যারের আওতায় সব সরকারি চাকরিজীবী
- জলবিদ্যুতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আহ্বান নেপালের
- সর্বজনীন পেনশন প্রসারে ৮ বিভাগে মেলা
- হাওরে কৃষকের মুখে স্বর্ণালি হাসি
- পর্যটন শিল্পের বিকাশে কুয়াকাটায় বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ
- মুজিবনগর দিবস : সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার
- আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রাশিয়ার অস্ত্র, পাশে চীনও
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
১৬ মে যুক্তরাষ্ট্র যাবে টাইগাররা - পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রিসে `৯ম আওয়ার ওশান কনফারেন্সে` যোগ দিয়েছেন
- আমাদের লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাব বিজয়ের স্বর্ণ তরণ অভিমুখে
- বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো বিজিপির আরও ৪৬ সদস্য
- আট হাজারের বেশি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল
- জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: অর্থমন্ত্রী
- গোপালগঞ্জে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে চার নারীসহ নিহত ৫
- ডাকাত ধরে কাঁধে করে নিয়ে এলেন এএসআই
- এশার নামাজ না পড়ে তারাবি পড়া যাবে?
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হটকারি সিদ্ধান্ত: হাছান মাহমুদ
- গোপালগঞ্জে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন এসপ
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশে
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে মুস্তাফিজকে!
- নূহ (আ.) এর নৌকা পাওয়া গেলো আরারাত পর্বতে!
- অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন যেভাবে
- শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের একান্তবৈঠকের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের
- গোপালগঞ্জে ১১ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা
- আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস
- ভারতের যে গ্রামে গর্ভবতী হতে ছুটে যান বিদেশি মহিলারা!
- ভারত থেকে ৩শ’ টন পেঁয়াজ আমদানি
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর
- কত দিতে হলো মুক্তিপণ?
- সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সালামকে কোটালীপাড়ায় সংবর্ধনা