• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

৩৬৫ রানে থামলো বাংলাদেশের ইনিংস

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২২  

প্রথম দিনের প্রথম সেশনে কোনো এক দুঃস্বপ্নই যেন তাড়া করেছিল বাংলাদেশী ব্যাটারদের। প্রথম সাত ওভারের মধ্যেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটার সাজঘরে ফেরেন। এমন বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তুলেন  লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে ঐতিহাসিক জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করার সঙ্গে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তাদের দুজনের বড় শতকে ভর করে শেষ পর্যন্ত প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

প্রথম ২৪ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর অবিচ্ছিন্ন ২৫৩ রানের জুঁটি গড়ে প্রথম দিনে আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি মুশফিক-লিটন। দিন শেষে দুজনেই সেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন।

৫ উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। সকালে দেখে-শুনে খেলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার লিটন এবং মুশফিক। তবে এদিন সাকলেও দুর্দান্ত সুইং পেয়েছেন কাসুন রাজিথা। এই পেসারের করা ইনিংসের ৯৩তম ওভারের প্রথম বল খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন লিটন দাস। এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে ২৭২ রানের জুঁটি ভাঙ্গেন রাজিথা। যা ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের রেকর্ড জুঁটি। লিটন সাজঘরে ফেরার আগে ২৪৬ বলে ১৪১ রান করেছেন। যা টেস্ট ক্রিকেটে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

লিটনের পর একই ওভারের চার নম্বর বলে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকেও ফিরিয়েছেন রাজিথা। দীর্ঘদিন পর দলে সুযোগ পাওয়া এই অলরাউন্ডার ফিরেছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরে করা লেংথ বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটকিপার নিরোশান ডিকওয়েলার গ্লাভসে জমা পড়লে ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আর তাতে ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন রাজিথা।

দ্রুত দুই উইকেট পড়ে গেলেও আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ সেখান থেকেই শুরু করেন মুশফিক। দিনের শুরুতে পেসারদের বিপক্ষে দেখে শুনে খেললেও স্পিনারদের বিপক্ষে খেলেছেন ফুরফুরা মেজাজে। এদিন দুর্দান্ত কিছু কভার ড্রাইভ কিংবা স্কয়ার কাট দেখা গেছে মুশফিকের ব্যাটে। তাছাড়া রিভার্স সুইপও বেশ সাবলীলভাবে খেলেছেন তিনি। রমেশ মেন্ডিসের করা ইনিংসের ১০১তম ওভারের দ্বিতীয় বল ফাইন লেগে ঠেলে দিয়ে দুই রান নেন মুশফিক। আর তাতে ২৯১ বল খেলে ১৫০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।

মোসাদ্দেক দ্রুত আউট হয়ে গেলেও ভালো শুরু করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। বিশেষ করে স্পিনারদের বিপক্ষে দারুণ কিছু শট খেলেছেন। তবে উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। লাঞ্চ বিরতির মিনিট দশেক আগে আসিথা ফার্নান্দোর লেন্থ বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপার ডিকওয়েলার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। এর আগে ৩৭ বলে ১৫ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

তাইজুলের পরপরই সাজঘরে ফিরেছেন খালেদ আহমেদও। আসিথা ফার্নান্দোর করা ১০৮তম ওভারের প্রথম বলে ডাক মেরে ফিরেছেন তিনি। পরের বলেই আবার এবাদত হোসেনের বিপক্ষে ক্যাচের আবেদন করেন আসিথা। আম্পায়ারও তাতে সাড়া দেন। বাংলাদেশের ইনিংস এখানেই থেমে যেতে পারতো। তবে সঙ্গে সঙ্গেই রিভিও নেন এবাদত। আর তাতে দেখা যায় বল তার ব্যাট স্পর্শ করেনি।

লাঞ্চের নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশের ৯ উইকেটের পতন হওয়ায় প্রথম সেশনের সময় কিছুটা বাড়িয়ে দেন আম্পায়াররা। এরপর মিনিট ত্রিশেক বাড়তি সময় খেলা চললেও বাংলাদেশ আর কোনো উইকেট হারায়নি। ৯ উইকেটে ৩৬১ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে রান তোলায় মনযোগ বাড়ান মুশফিক। এক প্রান্তে নড়বড়ে এবাদতকে সঙ্গে নিয়েই ডাবল সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান মুশফিক। ১১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মিড অনে রেখে দুই রান নেয়ার চেষ্টা করেন দুই ব্যাটার। এক রান সম্পন্ন করতে পারলেও দুই রান নিতে গিয়ে রান আউটে কাটা পড়েন এবাদত। আর তাতে ৩৬৫ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। মুশফিক ১৭৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন)-

বাংলাদেশ (১ম ইনিংস): ৩৬৫/১০ (১১৬.২ ওভার) (মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১; রাজিথা ৫/৬৪, আসিথা ৪/৯৩)

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ