• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায় একাকিত্ব

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২০  

একাকিত্ব এমন একটা জিনিস খুব দীর্ঘক্ষণ যেটির সঙ্গে কাটানো যায় না। মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব তাই মানুষের সঙ্গ প্রয়োজন পড়ে। কখনও কখনও একা থাকতে ভালো লাগে তবে সেটি এক নাগাড়ে অনেকদিন নয়। একাকীত্ব অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায় বলে দাবি উঠেছে গবেষণাপত্রে। জীবনে সম্পূর্ণভাবে একা হয়ে যাওয়া শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা ভাল নয়, সেই বিষয়ে কমবেশি সব মানুষেরই ধারণা রয়েছে। কিন্তু একাকিত্ব যে কতটা ক্ষতিকর, তা সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় আবারও সামনে এসেছে।

মার্কিন মনস্তত্ত্ববিদ এফ ডায়ান বার্থ আধুনিক জীবনযাত্রার এই সঙ্কটের দিকে আলোকপাত করে একটি প্রতিবেদনে বলেছেন, ‘একাকিত্বের কারণে যেমন স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে, তেমনই একাকিত্ব থেকে অকালমৃত্যুর প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।’

বার্থ তাঁর প্রতিবেদনে ২০১৬ সালে ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা রিপোর্টের উল্লেখ করেছেন। ওই গবেষণা রিপোর্টে বলা হয় যে একাকিত্বের কারণে মানুষের শরীরে কিছু বিশেষ ধরনের রাসায়নিকের মাত্রা হ্রাস পায়। যে রাসায়নিকগুলি আঘাত ও অসুস্থতা প্রতিরোধে শরীরকে সাহায্য করে। যত একাকিত্ব বাড়বে, ততই কমবে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং তার ফলে বড় ধরনের অসুখবিসুখ নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে।

তবে একাকিত্ব যে সব সময় সঙ্গীর অনুপস্থিতি বা অভাবের কারণে আসে তা কিন্তু নয়। অনেক মানুষই কিন্তু স্বেচ্ছায় একাকিত্ব বেছে নেন। আবার যাঁরা স্বভাবগতভাবেই অন্তর্মুখী, তাঁদের কাছে একাকিত্ব অনেকটা স্বাভাবিক। অন্তর্মুখী মানেই যে তিনি একাকিত্ব উপভোগ করবেন, এমনটা নয় অবশ্য। এমন অনেক অন্তর্মুখী মানুষ রয়েছেন, যাঁরা সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মানসিক-শারীরিক উপস্থিতি চেয়ে থাকেন মনে মনে কিন্তু পান না।

মোট কথা হল, সঙ্গী বা সঙ্গিনী পাশে থাকলে একজন মানুষের জীবনে যন্ত্রণা কমে এবং স্বস্তি বাড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে তেমনটা না হলে প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন নষ্ট হয়, তেমনই মানুষের বাঁচার ইচ্ছেও একটু একটু করে নষ্ট হতে থাকে। সামগ্রিক ভাবেই মনের উপর চাপ পড়তে থাকে, ডিপ্রেশন গাঢ় হতে থাকে। সেখান থেকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা যেমন হতে পারে, তেমনই উদ্বেগ থেকে জন্ম নিতে পারে অ্যাজমার মতো অসুখ।

ডায়ান বার্থ বলছেন, যদি বন্ধু, সঙ্গী, আত্মীয়স্বজন কেউ না থাকে অথবা তেমন কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে না চান কেউ, তাহলে অন্ততপক্ষে যেন সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইন কমিউনিটিগুলির সঙ্গে যুক্ত থাকেন একা মানুষেরা। এতে একাকিত্বের চাপ কমবে অনেকটা। তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে এলেই যে একাকিত্ব উবে যাবে ম্যাজিকের মতো তা নয়। পাশাপাশি সঙ্গী নির্বাচনে একটু সতর্কও থাকতে হবে।

ডায়ানের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমেই খুব গভীর সম্পর্কে না গিয়ে বরং নিজের প্রোফাইলেই শেয়ার করুন মনের কথা। সেখানে বাড়ুক কমেন্টস, আলোচনা। হোক মতবিনিময়। একাকিত্ব কাটাতে এটা হতে পারে দারুণ একটা উপায়।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ