• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অগ্রযাত্রাকে রুখতে ‘ইভিএম’কে বিতর্কিত করতে চাইছে ঐক্যফ্রন্ট?

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২০  


বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ইতিমধ্যে মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় প্রাপ্তি বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অন্য রকম উচ্চতায়। বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্বে অর্জন করে নিয়েছে নিজেদের একটি সম্মানজনক স্থান। যেখানে বিশেষজ্ঞরা তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক এই উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আখ্যায়িত করছেন ডিজিটাল নবজাগরণ হিসেবে। সেখানে একটি পক্ষ দেশের এই অগ্রযাত্রাকে থামাতে নানামূখি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। এখনও মান্ধাতা আমলের ‘এনালগ’ পদ্ধতি অনুসরনের পক্ষপাতি তারা। 

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আব্দুর রবের বক্তব্যে এমন ধারণা ফুটে উঠেছে। তিনি বলেছেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো অবস্থাতেই ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার মেনে নেবে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এভাবে ভোট করলে তা পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া পদ্ধতি ও ব্যবস্থাকে অশুভ অভিঘাতের দিকে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তাদের এমন ধ্যান ধারনা থেকে বেরিয়ে আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন। 

বিশেষজ্ঞরা জানান, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট প্রয়োগে মেশিন বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি অণুসৃত হয় বলে সামগ্রিক প্রক্রিয়াটি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নামে পরিচিত। এর অন্য নাম ই-ভোটিং। এতে একটি মেশিনে প্রায় চার হাজারটি পর্যন্ত ভোট দেয়া যায়। সর্বোচ্চ ৬৪ জন প্রার্থীর তালিকা থাকে। বাটন চাপ দিয়ে অক্ষরজ্ঞানহীন ব্যক্তিও ভোট দিতে পারে। একটি ভোট দিতে আনুমানিক ১৪ সেকেন্ড সময় লাগে।
একজন ভোটারের কোনভাবেই একটির বেশি ভোট দেয়ার সুযোগ থাকে না। সাধারণ ব্যালট ভোটের মতো কেন্দ্রেও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্টরা, নেতাকর্মীরাসহ পর্যবেক্ষকরাতো থাকবেই। মেশিনটিতে একটি পূর্ব-প্রোগ্রামিং করা মাইক্রোচিপ থাকে যা প্রতিটি ভোটের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে হিসেব করে প্রদর্শন করে।

এতে ব্যালট কাগজে সিল মারার পরিবর্তে ভোটার পছন্দের প্রতীকের পাশের সুইচ টিপে দ্রুত ভোট দিতে পারেন। এতে একদিকে নির্ভূল পদ্ধতি জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করতে পারেন। অন্যদিকে দ্রুত গতিতে ভোটদান সম্পন্ন হওয়ায় ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বরতদের চাপ কম থাকে। 

ইভিএম তথা ডিজিটাল পদ্ধতিকে এদেশের তরুন সমাজ গ্রহন করলেও কিছু অনগ্রসর রাজনীতিবীদে এ পদ্ধতির বিরোধীতা করছেন। তবে এটা যে কেবল বিরোধীতার খাতিরেই বিরোধীতা তা দেশের জনগণ বুঝে গেছেন। তাই তারা আধুনিক পদ্ধতিকেই স্বাগতম জানিয়েছেন। 

গত বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়া চতুর্থ ধাপে ছয় জেলার ৬ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানকার ভোটাররা কোন সমস্যা ছাড়াই দ্রুত ভোট দিতে পেরে খুশি হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিএমে ভোট স্বচ্ছ ও দ্রুত ফল ঘোষণা সম্ভব।সেখানকার দায়িত্বরত নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইভিএম এ ভোট স্বচ্ছ হয়েছে। 
দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের ধারনা, একটি পক্ষ নিজেদের অপারগতাকে জনগণের কাধে চাপিয়ে সুবিধা নিতে চাইছেন। জনবিচ্ছিন্ন ওই গোষ্ঠী আগাম হারের শংকা অনুমান করতে পেরে আধুনিক ও ডিজিটাল পদ্ধতির ভোটকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদেরকে বিরোধীতার খাতিরে বিরোধীতা না করে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অংশিদারিত্বের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। 


 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ