• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অবৈধভাবে খালে বাঁধ দিয়ে বিএনপি নেতার মাছ চাষ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০  

এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি, চাষাবাদ ও নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে ওই দুর্ভোগের মুখে পড়েছে ওই এলাকার দেড় শ’ পরিবার। তবে ওই পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা রাখাল চন্দ্র হালদার জানান, রামশীল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন জয়ধর ও তার ভাই রামশীল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ জয়ধর খাগবাড়ি বিষ্ণু মন্দির সংলগ্ন খাগবাড়ি খালের মুখের কালভার্টের নিচে মাটি, নেট, বাঁশ দিয়ে বাঁধ দিয়েছেন।

 খালের অপর প্রান্তে মাটি দিয়ে বাঁধ দিয়ে সাড়ে ৩ শ’ মিটার খাল দখল করে ৮ বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছেন। পানি চলাচল বন্ধ হওয়ায় বৃষ্টিতে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকের বাড়ি-ঘর, বাড়ির আঙ্গিনার শাক-সবজি ডুবে যাচ্ছে। নৌ চলাচল ও পণ্যপরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। চাষাবাদে কৃষক খালের পানি ব্যাহার করে জমিতে সেচ দিতে পারছে না।

তিনি বলেন, “খালের বাঁধ অপসারণ করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি। এতে কৃষক খালের পানি ব্যবহার করে ৫ শ’ হেক্টর  জমিতে ধান চাষ করতে পারবে, ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে “

খাগবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ভরত চৌধুরী ( ৬২) বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি খাগবাড়ি বিষ্ণু মন্দিরের পাশ দিয়ে পশ্চিম দিকে একটা খাল ছিল। খালটি এই গ্রামের পশ্চিম পাশের জলাশয়ে গিয়ে মিশেছে।

এই খালে সেচ পাম্প বসিয়ে গ্রামের অনেক কৃষক বোরো মৌসুমে ধান চাষ করতো। বর্ষার মৌসুমে নৌকা চলাতো। এই গ্রামের ক্ষমতাধর ব্যক্তি মনোরঞ্জন জয়ধর ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে খালটি দখল করে মাছ চাষ করছে। ওই এলাকার নিরীহ মানুষের ক্ষতি হলেও কেউ ভয়ে মুখ খুলছে না। এলাকার কোনো মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে তারা অত্যাচার নির্যাতন করে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা  সর্বানন্দ মল্লিক বলেনখাগবাড়ি বিষ্ণু মন্দির থেকে জয়ধর বাড়ি পর্যন্ত ওই খালটি ছিলো, মল্লিক বাড়ি পর্যন্ত নৌকা চলতো। আমরা এই খাল দিয়ে নৌকা নিয়ে যাতায়াত করতাম। এখন খালের মুখে বাঁধ দেওয়ার ফলে আমারা নৌকা নিয়ে যাতায়াত করতে পারিনা। আমরা বোরো মৌসুমে খালের পানি ব্যবহার করে জমিতে সেচও দিতে পারি না।

রামশীল ইউপি চেয়ারম্যান খোকন বালা বলেন, খাগবাড়ি বিষ্ণু মন্দির সংলগ্ন খালের মুখে বাঁধ দিয়ে এলাকার একটি প্রভাবশালী পরিবার মাছ চাষ করেছেন বলে আমি শুনেছি। জনস্বার্থে বাঁধটি কেটে দেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা বিশ্বনাথ জয়ধর খালের জায়গা নিজেদের দাবি করে বলেন, “ওই জায়গার বৈধ কাগজপত্র আমাদের আছে। তাই জায়গাটি ফেলে না রেখে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সেখানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হয়েছে।”

কোটালীপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, “সরকারি অনুমতি ছাড়া এভাবে মাছ চাষ অবৈধ। তদন্ত করে বিষয়টির ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

কোটালীপাড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহাসিন উদ্দীন বলেন, “বিষয়টি আমি বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। দু’এক দিনে মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।”

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ