• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অমুসলিম বা মুসলিমকে নাম বিকৃতি করা বা গালি দেয়া যাবে কি?

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৯  

প্রশ্ন: ১. কোনো কাফির, মুশরিক, বিদ’আতি, ইসলাম বিদ্বেষীকে গালি দেওয়া কি জায়েয আছে? ফেসবুকে যেটা অহরহ দেখা যায়, কোনো নাস্তিক ইসলাম বিরোধী কথা লিখে দিল আর সেখানে শত শত মুসলমানরা গালির পর গালি দিয়ে যান।
২. অনেকে ওদের নামকে বিকৃত করে বলেন বা লেখেন। যেমন: ‘জাফর ইকবাল’ কে লেখেন ‘জাফ্রিক বাল’;  ‘ইমরান এইচ সরকার’ কে লেখেন ‘ইমরান এইডস ছারখার’ ইত্যাদি।
 
আরও অনেকে আছেন যারা লা মাজহাবি শায়েখদের নাম বিকৃত করেন ‘মতিউর রহমান’কে ‘মতি চোরা’ ‘জাকির নায়েক’কে ‘জাকির নালায়েক’ ‘জাকির নায়ক’ ইত্যাদি। এসব কি জায়েয হবে না এসবের দ্বারা গোনাহ হয়?
 উত্তর প্রদানে বাধিত করবেন।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
 
উত্তর: কাফির দুই প্রকার। এক হল, জিম্মী তথা মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারী কাফের। আরেক হল হারবী বা মুসলমানদের সাথে যুদ্ধরত কাফের।
 
মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারী কাফের হবার কারণে গালাগাল করা বা নাম বিকৃত করা জায়েজ নয়।
 
আর মুসলমানদের দুশমন বা যুদ্ধরত কাফেরকে গালি দেয়া বা তার নাম বিকৃত করা উচিত নয়। কঠোর কথা বলা জায়েজ। তবে সরাসরি গালি দেয়া বা নাম বিকৃত করা শোভনীয় নয়।
 
তবে মতভেদের কারণে কোনো মুসলমানের নাম বিকৃত করা বা তাকে গালি দেয়া জায়েজ নয়।
 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের কিছু সন্তান তাদের পিতা সূত্রে বর্ণনা করেন যে, যারা ছিলেন পরস্পর ঘনিষ্ঠ। তিনি বলেনঃ সাবধান! যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তির উপর যুলম করবে বা তার প্রাপ্য কম দিবে কিংবা তাকে তার সামর্থের বাইরে কিছু করতে বাধ্য করবে অথবা তার সন্তুষ্টিমূলক সম্মতি ছাড়া তার কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করবে, কিয়ামাতের দিন আমি তার বিপক্ষে বাদী হবো। [সূনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৩০৫২]
 
আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  মু’মিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৯৭৭]
 
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার একদল ইয়াহূদী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললঃ আসসামু আলাইকা। (তোমার মরণ হোক)। আমি এ কথার অর্থ বুঝে বললামঃ আলাইকুমুস্ সামু ওয়াল লানাতু। (তোমাদের উপর মৃত্যু ও লা‘নাত)। নাবী  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ! তুমি থামো। আল্লাহ সর্ব হালতে নম্রতা পছন্দ করেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা যা বললোঃ তা কি আপনি শুনেননি? রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বললেনঃ এ জন্যই আমিও বলেছি, ওয়া আলাইকুম (অর্থাৎ তোমাদের উপরও)। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬২৫৬]
 
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ কোন মুসলিমকে গাল দেয়া ফাসিকী কাজ (জঘন্য পাপ) আর কোন মুসলিমকে হত্যা করা কুফরী। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭০৭৬]

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ