• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অ্যাপসে যোগাযোগ বাড়ছে, নতুন অ্যাপে আগ্রহ তরুণদের

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২০  

দেশে করনোভাইরাসের সংকটকালে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ বেড়েছে। এরমধ্যে এগিয়ে আছে ওটিটি (ওভার দ্য টপ) সেবা বা যোগাযোগভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপস। মেসেঞ্জার সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও (ফেসবুকের সঙ্গে থাকায়) জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে নেই হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমো (আএমও) ইত্যাদি। অ্যাপসের ব্যবহারে তরুণরা অনেক এগিয়ে। তাদের আগ্রহ নতুন নতুন অ্যাপসে। ফলে এই সময়ে হাউস পার্টি, রিং আইডি, ব্রিলিয়ান্ট, কফি আড্ডার মতো অ্যাপগুলো চলে আসছে শীর্ষ তালিকায়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে এই তথ্য জানা গেছে।

করোনা সংকট শুরুর পর দেশে মোবাইল ফোনে কথা বলার হার কমে যায়। বেড়ে যায় ডাটার (ইন্টারনেট) ব্যবহার। মোবাইল অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটব সূত্রে জানা গেছে, গত কিছুদিন ধরে মোবাইলে ভয়েস কল ২০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। অন্যদিকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি বেড়েছে ডাটার ব্যবহার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অ্যাপসের ব্যবহার বাড়ায় ভয়েস কলের পরিমাণ কমেছে। আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে এক হাজার ৭৫০ থেকে এক হাজার ৮০০ জিবিপিএস (গিগাবিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। এরমধ্যে ৭৫০ জিবিপিএসের  বেশি ব্যবহার হচ্ছে মোবাইলে। ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ বেড়ে যাওয়ায় মোবাইল ইন্টারনেটে ব্যান্ডউইথের ব্যবহারও বেড়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সাড়ে তিন কোটি। আর ভাইবার ব্যবহার করে দেড় কোটি গ্রাহক। অন্যদিকে ফেসবুকের বৈধ আইডির সংখ্যা সাড়ে তিন কোটির কিছু বেশি। সেই হিসাবে মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রেনিউর ল্যাবের প্রধান নির্বাহী আরিফ নিজামী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা দেখেছি শহর এলাকায় হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার বেশি জনপ্রিয়। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় ইমো’র (আইএমও) ব্যবহার বেশি। ইমোর জনপ্রিয়তার কারণে কয়েকটি মোবাইল অপারেটর ইন্টারনেটের বিশেষ প্যাক অফার করছে। বিশেষ করে প্রবাসীদের কাছে এই অ্যাপ খুবই জনপ্রিয়। আমরা দেখেছি, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশেষ করে তরুণদের কাছে বেশি জনপ্রিয় স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রাম। ফটোবেজড চ্যাটিংয়ের ব্যবস্থা থাকায় জনপ্রিয়তার দৌড়ে আছে ইনস্টাগ্রাম। এছাড়া, করপোরেট লেভেলে ব্যবহার বেড়েছে হাউস পার্টি অ্যাপের।’ তিনি জানান, করোনাকালে সবচেয়ে এগিয়েছে টিক টক অ্যাপ। কয়েকগুণ বেড়েছে এর ব্যবহারকারী। চীনের এই অ্যাপ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব বেশ চিন্তিত— কেন চীনা প্রোডাক্টের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তরুণরা কেন এই অ্যাপের প্রতি ঝুঁকছে। এর বাইরে রাশিয়াভিত্তিক অ্যাপ টেলিগ্রামের সিকিউরিটি ভালো হওয়ায় অনেকেই এই অ্যাপের দিকে ঝুঁকছেন। লাইন নামের একটি অ্যাপও আমাদের দেশের তরুণদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে।

আরিফ নিজামী বলেন, ‘আমাদের দেশের একটি অ্যাপ, নাম ব্রিলিয়ান্ট, ভালো করছে। এটা দিয়ে দেশ-বিদেশে ফোন করা যায়। এই অ্যাপের বিশেষত্ব হলো— এটা দিয়ে শুধু এই অ্যাপেই নয় মোবাইলে, ল্যান্ডফোনেও ফোন করা যায়। যদিও এজন্য চার্জ দিতে হয়। অন্যদিকে ভালো করছে রিং আইডি নামের আরেকটি অ্যাপ।’

অ্যাপস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এমসিসি লিমিটেডের কফি আড্ডা নামের একটি অ্যাপ বেশ চলছে বলে জানা গেছে। নির্মাতারা বলছেন, এটা বন্ধু বানানোর অ্যাপ। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী এস এম আশ্রাফ আবীর বলেন, ‘করোনার এই সময়ে অ্যাপটি নিয়ে আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি। এরই মধ্যে অ্যাপস্টোর থেকে আড়াই লাখবার অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে। এটি লোকেশনভিত্তিক অ্যাপ।’ তিনি বলেন, ‘করোনার এই সময়ে যোগাযোগভিত্তিক অ্যাপের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। আমাদেরও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে নতুন নতুন অ্যাপের পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ঈদের পরে বহুমুখী অ্যাপের ব্যবহার দেখা যাবে। সেক্ষেত্রে তরুণরাই থাকবেন এগিয়ে।’

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ