ইসলামের দৃষ্টিতে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২১
‘তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।’ কেউ কেউ এটাকে হাদিস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী এটা সরাসরি হাদিস নয়, তবে এর অর্থ বিভিন্ন হাদিস দ্বারা সমর্থিত। আল্লাহ চরিত্র অর্জন বলতে বুঝানো হয়েছে তার ওই আখলাক, যা মানুষের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব তা অর্জন করা। যেমন ক্ষমা করা, দয়া দেখানো, ভালো কাজের প্রতিদান দেয়া ও সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদি।
আল্লাহ তায়ালার অন্যতম একটি গুণ হচ্ছে ন্যায় বিচার করা। তিনি নিজে ন্যায়পরায়ণ শাসক। জমিনে তার প্রতিনিধি মানুষকে তিনি ন্যায় বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন। ন্যায় বিচার শুধু মামলা-মোকাদ্দামার সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট নয়। বরং মানুষের আচার-ব্যবহারেরও রয়েছে ন্যায়-বিচার ও ভারসাম্য রক্ষার বিষয়। নিম্নে কোরআন ও হাদিসের আলোকে ন্যায় বিচারের গুরুত্ব ও এর প্রতিবন্ধকতাগুলো তোলে ধরা হয়েছে।
ইনসাফ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব
হজরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা.) বলেন, তিনটি গুণ যে অর্জন করতে পারবে তার ঈমান পূর্ণতা পাবে। ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা, মানুষকে সালাম দেয়া ও অস্বচ্ছলতায় থেকেও দান করা। (সহীহ বুখারী) ইনসাফের জন্য মানুষের দুটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হয় আমানতদারিতা ও ইখলাস। ইখলাস ও আমানতদারিতা থেকে বিচ্যুতি ঘটলে মানুষ কখনো ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না।
আল কোরআনেও বহু জায়গায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠার কথা এসেছে। আল্লাহ তায়ালা সূরা হাদিদে বলেন, ‘নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে নির্দশনাদি দিয়ে প্রেরণ করেছি এবং তাদের সঙ্গে নাজিল করেছি কিতাব ও মাপার পাল্লা, যেন মানুষ ন্যায় বিচার কায়েম করতে পারে।’(সূরা হাদিদ, আয়াত নং-২৫) অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন, যাতে মানুষ আকীদা-বিশ্বাস, আখলাক ও আমলের ক্ষেত্রে ন্যায়ের পথে চলতে পারে। শিথিলতা ও বাড়াবাড়ির রাস্তা পরিহার করে চলে। আর আল্লাহ তায়ালা পাল্লা দিয়েছেন যেন লেদদেন ও বেচাকেনায় কমবেশি না করে ইনসাফের রাস্তায় চলে। উভয়টি ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ মেজাজের বহিপ্রকাশ।
ইনসাফ ও ভারসাম্য রক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে অন্যত্র তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ আদেশ করেন ইনসাফ, মঙ্গলসাধন, ও আত্মীয়স্বজনকে দান করার এবং নিষেধ করেন অশ্লীলতা, মন্দ কর্ম ও সীমালঙ্ঘন থেকে।’ (সূরা নাহ্ল-৯০) আয়াতে তিনটি বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক. মানুষের আকীদা-বিশ্বাস, কাম-কাজ, স্বভাব-চরিত্র, লেনদেন, আবেগ-অনুভূতি সবই ন্যায় ও ইনসাফের মানদন্ডে নির্নিত হতে হবে, বাড়াবাড়ি বা শিথিলতার কারণে কোন দিক ঝুঁকে বা উপরে ওঠে যেতে পারবে না। কঠিন থেকে কঠিন শত্রুর সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রেও ন্যায়ের পাল্লা ফেলে দেয়া যাবে না। মানুষ নিজেকে নেকি কল্যাণের প্রতীক বানিয়ে অন্যের মঙ্গল কামনা করবে। ইনসাফেরও উর্ধ্বে ওঠে দয়া ও ক্ষমা এবং সহানুভূতি ও সমবেদনার অভ্যাস গড়বে। তিন. আত্মীয়স্বজনের হক আদায় করা।
সূরা হুজরাতে বলা হয়েছে, ‘যদি মুসলমানদের দুদল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়ে , তবে তোমরা তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দাও। অত:পর যদি ওদের একদল অন্য দলের উপর চড়াও হয় তাহলে তোমরা সকলে সেই চড়াওকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর বিধানের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে, তবে উভয় দলের মাঝে ন্যায়ের সঙ্গে বিচার করে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন। (আয়াত নং-৯)
সহীহ বুখারীতে এসেছে নবী করিম (সা.) বলেন, সাত শ্রেণির লোক হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের ছায়া পাবে। প্রথম শ্রেণি হচ্ছেন ন্যায়পরায়ণ শাসক। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, যারা দুনিয়াতে ন্যায় বিচার করে হাশরের ময়দানে তারা আল্লাহর সামনে মনিমুক্তার মিম্বারের উপর বসবে।’ (সুনানে নাসায়ী)
ইনসাফ প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা
ইনসাফ যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলোও তেমন জটিল। কোরআনের ভাষায় মৌলিকভাবে দু’টি কারণে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা থেকে বিচ্যুত হয়-
স্বজনপ্রীতি ও ভালোবাসা
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ইনসাফের পূর্ণ প্রতিষ্ঠাকারী, আল্লাহর জন্য সাক্ষ্য প্রদানকারী হয়ে যাও, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা (তোমাদের) মাতাপিতা ও আত্মীয়স্বজনের বিপক্ষে হয়। অতএব তোমরা ইনসাফ করার বিষয়ে অন্তরের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না।’ (সূরা নিসা, ১৩৫) উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদানকারী ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যদি নিজেদের, পিতামাতা ও নিকটাত্মীয়র বিপক্ষে গিয়েও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাও করতে হবে। মুফাস্সিরগণ বলেন, একথা বলার কারণ হচ্ছে, মানুষকে সতর্ক করা। কারণ, এদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়েই মানুষ ইনসাফের পথ থেকে বিচ্যুত হয়। যদিও এখানে কিছু শ্রেণির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু এর মূল বিষয় হচ্ছে পারস্পরিক সম্পর্ক। অর্থাৎ সম্পর্কের কারণে মানুষ ইনসাফের পথ থেকে সরে আসে, যাকে স্বজনপ্রীতি বলা হয়।
বর্তমানে স্বজনপ্রীতি মহামারির রূপ নিয়েছে। আদালত, প্রশাসন, রাজনীতি ও সামাজিক সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে মানুষ নিজের লোকদেরকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে মানুষ ইনসাফ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হজরত আলী (রা.) এর ঘটনা ইতিহাসের গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। একজন ইহুদি হজরত আলী (রা.) এর তরবারি নিয়ে মামলা দায়ের করে। আলী (রা.) এর পক্ষে সাক্ষী ছিলেন নিজের দুই ছেলে। কাজি মামলা খারেজ করে ইহুদির পক্ষে রায় দেন। কারণ পিতার পক্ষে সন্তানের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ কাজি ও হজরত আলী (রা.) মাঝে ধর্মীয় দিক থেকে সম্পর্ক ছিল। কারণ দু’জনেই মুসলমান। তাছাড়া তিনি ছিলেন খলিফাতুল মুসলিমিন। ইহুদি এই ন্যায় বিচার দেখে মুসলমান হয়ে যায়।
বিদ্বেষ ও শত্রুতা
হিংসা বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে মানুষ সুবিচারের পথ থেকে সরে আসে। আল্লাহ তায়ালা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আর কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদের সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করো, এটাই তাকওয়ার বেশি নিকটবর্তী।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত নং-৮) তাকওয়া অর্জনের অনেক মাধ্যম রয়েছে। তবে শত্রু-মিত্র সকলের সঙ্গে ইনসাফ করা, এক্ষেত্রে শত্রুতা-মিত্রতার ভাবাবেগে পরাভূত না হওয়া এই স্বভাবই তাকওয়া হাসিলের সর্বাধিক শক্তিশালী ও নিকটতম উপায়। আল্লাহ তায়ালা সকলবে সুবিচার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
- শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে ভেসে আসছে গোলাগুলির শব্দ
- উপজেলা নির্বাচন: ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ
- আইপিইউর এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের চেয়ারম্যান হলেন স্পিকার
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- একনেকে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন
- ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার
- ডি মারিয়ার পরিবারকে হত্যার হুমকিদাতারা গ্রেফতার
- কৈলাশটিলায় প্রতিদিন ২ কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস উৎপাদন করা হবে
- ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
- আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস
- বিমানবন্দরে গুলিতে আত্মহত্যার চেষ্টা নিরাপত্তারক্ষীর
- ৯ বছর পর রোমে বিমান
- ৫০ বছর পর মা-মেয়ের মিলন
- সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১১ প্রকল্প অনুমোদন
- হুন্ডির একটি চক্রই পাচার করেছে ৪০০ কোটি টাকা, গ্রেফতার ৫
- মুকসুদপুরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- কূপ খননে তিন বিদেশী কোম্পানি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হচ্ছে
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা
- ঢাকায় দুদিনের সফরে আসছেন কাতারের আমির
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে যত পরিকল্পনা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার
- ভুটানের রাজার সফর
কুড়িগ্রামে নতুন বাণিজ্য সম্ভাবনা - বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস ১৯৭৫ সালের পর বিকৃত করা হয়েছে
- কাশিয়ানীতে নসিমন চাপায় শিশু নিহত
- বিএনপি সত্যিই ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে পারে কি না: প্রধানমন্ত্রী
- গোপালগঞ্জে লাইন দিয়ে ন্যায্যমূল্যে পন্য কিনছেন ক্রেতারা
- ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদ দুইদিনের রিমান্ডে
- সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ
- গোপালগঞ্জে সেবাশ্রমের পূঁজারীকে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা
- ২৬ বছর বয়সেই মারা গেলেন নীল সিনেমার অভিনেত্রী
- চিরনিদ্রায় শায়িত প্রবীণ আলেম মাওলানা লুৎফর রহমান
- লামিশার মৃত্যুর আগের লেখা কাঁদাচ্ছে সবাইকে
- `মুশতাকের কাছে ৩০ লক্ষ টাকা ও ফ্লাট চাচ্ছে বাবা` মুখ খুললেন তিশা
- কোন পুরুষকে পেতে পাগল ছিলেন ঐশ্বরিয়া, জড়িয়েছিলেন ঝগড়ায়
- ডাকাত ধরে কাঁধে করে নিয়ে এলেন এএসআই
- মুকসুদপুরে বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছেলে
- সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ
ভুটানকে উড়িয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ - শিশুকে শাসনের ব্যাপারে জেনে রাখুন কিছু কৌশল
- গোপালগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কায় নিহত ১
- আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে মুস্তাফিজকে!
- ভিকারুননিসার ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল
- গোপালগঞ্জে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে চার নারীসহ নিহত ৫
- মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে লাগবে না এজেন্সির সহায়তা
- কোটালীপাড়ায় ৩দিন ব্যাপী কবি সুকান্ত মেলার উদ্বোধন
- গোপালগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে নিহত অজ্ঞাত এক নারী
- গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী