• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক গতি

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২০  

করোনার মধ্যেও গতিশীল হয়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। একক মাস হিসেবে সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। মাসটিতে বাস্তবায়নের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এই হার ছিল ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। যদিও তখন করোনার আক্রমণ ছিল না। অর্থাৎ করোনা-পূর্ব সময়ের তুলনায়ও বেশি হারে এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে গেল সেপ্টেম্বরে।

সাধারণত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি থাকে খুবই কম। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সার্বিকভাবে গত তিন মাসের এডিপি বাস্তবায়নের হারও বেড়েছে। এই হার কভিডের আগের একই সময়ের সমান। উভয় অর্থবছরেরই এ সময়ের এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এই হার এডিপি বাস্তবায়ন আগের পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্ট পর্যন্ত বাস্তবায়নের হার ছিল মাত্র ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হার ছিল ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই-আগস্টে এডিপিতে মোট ১৭ হাজার ৩০১ কোটি ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে কম ব্যয় সত্ত্বেও সমহারে বাস্তবায়নের কারণ হচ্ছে, গত অর্থবছরের তুলনায় এডিপিতে এবার বরাদ্দ কম।

সাধারণত বছরের প্রথম দিকে এডিপি বাস্তবায়নের গতি কম থাকে। এবার করোনার কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেও সে ধারা অব্যাহত ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বরে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক গতি এসেছে।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনায় স্থবিরতার পর বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মীরা ভালোভাবে কাজে ফিরেছেন। সে কারণেই গতি এত বেশি বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, যথাসময়ে এবং মানসম্মত এডিপি বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। করোনায় গত অর্থবছরে কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। এসব কারণে চলতি অর্থবছরে শুরু থেকেই এডিপির মান এবং যথাসময়ে শেষ করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট সব বিভাগ। বাস্তবায়নের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা মন্ত্রণালয়ের সচিবদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। মাস দুয়েক আগে আইএমইডির সচিব হিসেবে যোগ দেওয়া প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী আরও বলেন, আইএমইডি গতানুগতিক কাজের ধারা থেকে বেরিয়ে আসছে। বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে করোনার মধ্যেই এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। তার আশা, আগামীতেও বাস্তবায়নে এই গতি অব্যাহত থাকবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নে গত আগস্টে ৩০টি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালককে নিয়ে বৈঠক করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আগের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রকল্পের কেনাকাটা এবং গুণগত মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্কতার কথা বলা হয় ওই সভায়।

প্রতিবছরই এডিপিতে আগের বছরের তুলনায় বরাদ্দ বাড়ানো হয়ে থাকে। তবে কভিডের কারণে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রতার নীতির অংশ হিসেবে আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে টাকা কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনের বিবেচনায় কম গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ শতাধিক প্রকল্পের কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দ দুই লাখ ১৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা এক হাজার ৬৭৩টি। গত অর্থবছর এই পরিমাণ ছিল দুই লাখ ১৫ হাজার ১১৪ কোটি টাকা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ