একাত্তরের এই দিন : রাজৈর মুক্ত দিবস আজ
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৯
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে সাড়ে তিন শত মুক্তিযোদ্ধাসহ শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে ৪ ডিসেম্বর মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে রাজৈর থানার মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় পর্যুদস্ত পাক হানদার বাহিনী মাদারীপুরের রাজৈর থানা থেকে পালিয়ে পাশের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া এলাকায় চলে যায় এবং সেখানে ১৩৫ জন পাক হানাদার বন্দী হয়। মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা। মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছরেও নিহতদের অনেক পরিবারই যথাযথ সম্মানটুকুও পায়নি।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কমলাপুর, পাখুল্যা, লাউসর, কদমবাড়ি, মহিষমারী, ইশিবপুর ও কবিরাজপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর সাথে লড়াই শুরু করে। রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কমলাপুর সর্বেস্বর বৈদ্যের বাড়ি খলিল বাহিনীর প্রধান খলিলুর রহমান খানের নেতৃত্বে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে দেয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক পাকবাহিনীকে পরাস্ত করে দেশ মাতৃকাকে পুনরুদ্ধারের দিকে এগিয়ে যায়।
রাজৈরে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈর বড় ব্রিজ, আমগ্রাম ব্রিজ ও টেকেরহাট এলাকায়। এর মধ্যে বৌলগ্রাম, রাজৈর থানা ও পাখুল্যায় মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। এখানে অংশগ্রহণ করেন সাবেক রক্ষীবাহিনীর ডেপুটি ডিরেক্টর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) সরোয়ার হোসেন মোল্যা। সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত একটানা যুদ্ধ চলে।
দেশ যখন বিজয়ের দিকে এগিয়ে চলছে, ঠিক সেই মুহুর্তে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা মারমুখী হয়ে মুক্তিকামী মানুষের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে নিধনযজ্ঞ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাকবাহিনী ও দোসরদের চতুর্দিক ঘিরে ফেলে যুদ্ধ চালাতে থাকে। ৯ মাসের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় সাড়ে তিনশত মানুষ শহীদ হন।
১৯৭১ সালে ঈদের আগের রাতে রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের বৌলগ্রামে পাকবাহিনীকে অবরুদ্ধ করে রাখে মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে সর্বশেষ ৩ ডিসেম্বর মধ্য রাতে পাকবাহিনী রাজৈর ছেড়ে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে মুক্তিযোদ্ধারা টেকেরহাট বন্দরে তাদের আক্রমণ করেন। পাকবাহিনী এ সময় পালিয়ে গোপালগঞ্জের ছাগলছিড়া নামক স্থানে পৌঁছলে মুক্তিযোদ্ধারা ও স্থানীয় গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
গ্রামবাসীর সহায়তায় ১৩৫ জন পাক হানাদারকে বন্দী করেন মুক্তিযোদ্ধারা। রাজৈর হানাদার মুক্ত হয়। স্বাধীনতার ৪০ বছর পর মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু হওয়ায় দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে। দেশ কলঙ্কমুক্তের পথে এগুলেও রাজৈরের কুখ্যাত রাজাকার ও আলবদররা এখনও বিচারের আওতায় না আসায় ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালে পাকহানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদরের হাতে নিহত রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের সুতারকান্দি গ্রামের আদিত্য ভাবুকের ছেলে নিত্যানন্দ ভাবুক জানান, আমার বাবাকে রাজাকাররা বাড়ি এসে গুলি করে হত্যা করে। বাবা নিহত হওয়ার পর মা অনেক কষ্ট করে আমাদেরকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও কোনো সরকারই আমার বাবার প্রতি সম্মান দেখায়নি। এমনকি বিন্দুমাত্র সাহায্য দেয়নি আমাদেরকে। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন তিনি।
পাকবাহিনীর হাতে নিহত বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের অতুল আচার্য্যরে পুত্রবধূ আলো রানী আচার্য্য জানান, তার শ্বশুরকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ভারতের রোড নামক স্থানে বসে গুলি ও মাথা ইটের ওপর রেখে থেতলে নৃসংশভাবে হত্যা করে। অভাবী সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সংসার মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। এ পর্যন্ত কোনো সরকারই তাদেরকে সহায়তা দেয়নি। অতুল আচার্য্যরে পুত্রবধু আলো রানী আচার্য্য সরকারি সহায়তা কামনা করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউসুফ আলী মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে আলবদর রাজাকারদের বিচার কাজ শুরু করেছে। কিন্তু মাদারীপুরের রাজৈরে যারা কুখ্যাত রাজাকার, যারা আমাদের মা বোনের ইজ্জত হরণ করেছে, ঘর বাড়ি লুটতরাজ করছে, তাদের অদ্যাবধি বিচার শুরু করা হয়নি। তাদের বিচার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বলেন, রাজৈরের কুখ্যাত রাজাকারের বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা বা বিচারকাজ শুরু না করায় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ। রাজৈরের রাজাকার আলবদরদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান মিয়া বলেন, দেশকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য সাকা চৌধুরী, মুজাহিদ এদেরকে যেমন ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। রাজৈরবাসীও দাবি করেছে রাজৈরের চিহ্নিত রাজাকারদেরকে ফাঁসি দিয়ে রাজৈরকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদেরকে এই বিজয়ের মাসে বিচারের আওতায় আনা দরকার।
রাজৈর উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সেকান্দার আলী সেখ বলেন, রাজৈরের মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে রাজৈর থানা হানাদারমুক্ত করা হয়। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা রাজৈর থানা অবরোধ করে আক্রমণ করা হয়। পাখুল্লায় পাক আর্মির সাথে কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধ হয় এবং কয়েকজন পাকবাহিনী ও রাজাকার নিহত হয়। টেকেরহাট নদীতে মাইন পুতে পাকবাহিনীর গান বোট উড়িয়ে দেওয়া হয়। পাক আর্মিরা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে টিকতে না পেরে টেকেরহাট থেকে ৩ ডিসেম্বর রাতে পালিয়ে ফরিদপুর যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া নামক স্থানে ১৩৫ জন পাক আর্মি ধরা পড়ে। ৯ মাসের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় সাড়ে তিন শত মানুষ শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদরদের হাতে নিহতদের মধ্যে অনেক পরিবারই ৪৮ বছরেও সরকারি কোনো সাহায্য পায়নি তাদেরকে সাহায্য দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শাজাহান হাওলাদার বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় সরকারি উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে। সেখানে তাদের নাম লেখা হবে। আর্থিক সাহায্যের ব্যাপারটি ইউএনও বা জন প্রতিনিধিরা করতে পারেন।
এক সাগর রক্ত আর লক্ষাধিক মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও দেশের মাটিতে এখনও রাজাকাররা ঘুরে বেড়ায় এটাই যেন মুক্তিযুদ্ধদের কষ্ট। তাই এই বিজয়ের মাসেই বাকী সব যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবি তাদের।
- টিসিবির জন্য কেনা হবে সাড়ে ৬১ কোটি টাকার মসুর ডাল
- সিঙ্গাপুর থেকে ২ কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
- জিআই স্বীকৃতির সঙ্গে পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে হবে:শিল্পমন্ত্রী
- বাগেরহাটে বালু বোঝাই ট্রলির ধাক্কায় মা-ছেলে নিহত
- আম দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
- হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়ছে আরও তিন দিন
- শপথ নিলেন নবনিযুক্ত আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি
- বিশ্বনেতাদের প্রতি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বন্ধের আহবান প্রধানমন্ত্রীর
- গরমে মাথায় হাত মুরগি খামারির, আম চাষিরাও চিন্তায়
- ভারতের ৫২৭ খাদ্যপণ্যে বিষ : ইউরোপে নিষিদ্ধ
- স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত শনিবার
- মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো ২৮৮ সেনা-বিজিপিকে
- দুবাইয়ের পর এবার মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
- বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বেনজীর আহমেদের সম্পদের তথ্য চাইল দুদক
- হজ পারমিট দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব
- উপজেলা ভোট ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে
- বিএনপি আন্দোলনেব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে:কাদের
- ১৫ বছরে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়নি: এলজিআরডি মন্ত্রী
- এভিয়েশন শিল্পে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- বিএসইসির আদেশ জারি
৩ শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমতে পারবে না - বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার
- ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মে থেকেই অভিযান : মেয়র, ডিএসসিসি
- মডেল ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ কৃষকের মধ্যে সাড়া
- ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত সুরক্ষিত থাকবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
- হজযাত্রীদের সহযোগীতার আশ্বাস সৌদির
- টেলিযোগাযোগ আইনের খসড়া
আইনের আওতায় আসবে সব ধরনের অনলাইন সেবা - এআই নীতিমালা
সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ - তীব্র গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কী করবেন
- তাপপ্রবাহ : গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
- সেই নারী কাউন্সিলর চামেলীকে দল থেকে বহিষ্কার
- এশার নামাজ না পড়ে তারাবি পড়া যাবে?
- গোপালগঞ্জে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন এসপ
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হটকারি সিদ্ধান্ত: হাছান মাহমুদ
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশে
- নূহ (আ.) এর নৌকা পাওয়া গেলো আরারাত পর্বতে!
- শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের একান্তবৈঠকের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস
- আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর
- কত দিতে হলো মুক্তিপণ?
- মুকসুদপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধাক্কা, প্রাণ গেল দুই বাইকারের
- মুকসুদপুরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
- ঢাকায় মিলছে উটের দুধের চা
- কলকাতায় হিরো আলমকে সংবর্ধনা
- গোপালগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ
- সেনেগালের বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশি হাফেজ আবু রায়হানের ‘বিশ্বজয়’
- এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ
- বিয়ের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়ই মাহীর ‘পেশা’