• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

এখনও এনএসসির চেয়ারম্যান বীরেন, ভাইস চেয়ারম্যান জয়!

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০  

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) চেয়ারম্যান কে? অনেকে বলবেন, এ আবার কেমন প্রশ্ন! যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপিই তো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওয়েবসাইট বলছে অন্য কথা।

এক বছর ৮ মাস আগে দেশের ২৯তম যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন গাজীপুর-২ আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেল। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর পদাধিকার বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও চেয়ারম্যান হয়েছেন তিনি।

কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে উল্লেখিত নির্বাহী কমিটির তালিকায় তার নাম নেই। সেখানে এখনও আছে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের নাম। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আগের সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ছিলেন বীরেন শিকদার। যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী ছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ খান জয়।

যার ফলে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার আগপর্যন্ত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন বীরেন শিকদার এবং ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন আরিফ খান জয়। এর মধ্যে বীরেন শিকদার ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সংসদ সদস্য হলেও আরিফ খান জয় মনোনয়নই পাননি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওয়েবসাইটের (এনএসসি.গভ.বিডি) প্রচ্ছদে চেয়ারম্যান হিসেবে মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি এবং ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেনের নাম ও জীবন-বৃত্তান্ত দেয়া থাকলেও ‘এনএসসি সম্পর্কিত’ ক্যাটাগরিতে নির্বাহী কমিটির সদস্য পরিচিতিতে তারা নেই। সেখানে এখনও আছে ৫ বছর আগে প্রকাশিত তালিকা, যেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে আছে বীরেন শিকদার ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আরিফ খান জয়ের নাম।

সর্বশেষ হালনাগাদ ৩০ নভেম্বর ২০১৫। বোঝাই যাচ্ছে গত ৫ বছরে ওয়েবসাইটের এই জায়গাটায় হাত পড়েনি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের মহা ব্যস্ততাই হয়তো এর কারণ। অনেকে বলে থাকেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা প্রেষণে আসেন, কিছুদিন থাকেন আবার বদলি হয়ে যান। তারা চাকরিই করেন, খেলাধুলার উন্নয়নে তাদের কোনো মনযোগ থাকে না।’ ওয়েবসাইটে পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম না থাকাটাই এর বড় উদাহরণ।

এক সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে নির্দিষ্ট কিছু ফেডারেশনের সভাপতিরা সদস্য থাকতেন। পরিবর্তিত এনএসসি অ্যাক্টে প্রতিবছর নির্বাহী কমিটির সদস্য থাকবেন ৭ টি ফেডারেশনের সভাপতি, বছর শেষে সেখানে ঢুকবে পরের ৭ ফেডারেশন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক তৈরি ফেডারেশনের তালিকা অনুসারে সাতটি করে নাম অন্তর্ভূক্ত হবে নির্বাহী কমিটিতে।

২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর হালনাগাদ করা তালিকায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব হিসেবে আছেন অশোক কুমার বিশ্বাস। তিনি বদলি হয়ে অনেক আগে চলে গেলেও নামটি রয়ে গেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন হয়তো বলবেন- এটা আর এমন কী? ভুলে তালিকা সংশোধন করা হয়নি। তাতে তো বীরেন শিকদার এবং আরিফ খান জয় প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী হয়ে যাননি? তা ঠিক। কিন্তু একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান নিজেদের শীর্ষব্যক্তির নামের স্থানে ২০ মাস ধরে অন্যজনের নাম ঝুলে থাকা মোটেও শোভনীয় নয়।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। করোনার সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে বেরিয়েছেন অস্বচ্ছল খেলোয়াড়, কোচ ও সংগঠকদের সাহায্য করতে। নিজ নির্বাচনী এলাকায়ও তার বিচরণ ছিল প্রশংসনীয়। তার সেবা থেকে বাদ যায়নি কোনও শ্রেণির অসহায় মানুষ।

যে কারণে করোনাযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। সেই প্রতিমন্ত্রীর নাম তারই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ঠিকঠাক মতো ওঠেনি দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। অথচ এই ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেটের জন্য বড় একটা বাজেটও আছে প্রতিষ্ঠানটির। তাহলে তাদের কাজ কী?- প্রশ্নটা থেকেই যায়।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ