কচু পাতার আঁচড়ে হৃদয়ের ভাষা
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৯
আপন মনে একের পর এক তিনি ছবি আাঁকেন। দেয়ালে। ছবির বিষয়বস্তুও হরেক রকম। গ্রামীণ পরিবেশ, শহরের চিত্র, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। নায়ক-নায়িকা, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ-তরুণীর প্রেম। তিনি আঁকেন চলচ্চিত্রের গ্ল্যামার কন্যা ববিতা, কবরী, শাবানা, সুচরিতার ছবি। অনেকে ছবি আঁকেন অর্থের বিনিময়ে এবং রং তুলির আঁচড়ে। কিন্তু তার ছবি আঁকার উপকরণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনো অর্থকড়িরও ব্যবস্থা নেই এতে।
হ্যাঁ বলছিলাম এক খেয়ালি শিল্পীর কথা। নাম তার চান মিয়া। টাঙ্গাইল পৌর এলাকার এনায়েতপুরে তার বাড়ি। ৪৫ বছরের চান মিয়া টাঙ্গাইল শহরের অলি-গলিতে পরিচিত চানু মিয়া বা চানু ভাই নামে। শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড, ডিসি লেক, এসপি লেক, হাসপাতাল গেট, জেলা সদর রোড, জেল খানা এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় দেয়ালে দেয়ালে চোখে পড়ে তার নিপুণ কাজের।
তবে আর ১০টা শিল্পীর সাথে চানু মিয়ার পার্থক্য অনেক। অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে চানু মিয়া ছবি আঁকেন কচু পাতার আঁচড়ে। কিংবা কাঠ কয়লা বা রাস্তায় পড়ে থাকা ইটের টুকরো দিয়ে। ফুটিয়ে তোলেন হৃদয়ের ভাষা।
প্রতিদিন সকাল থেকে মাঠে গরু চরান চানু ভাই। আর মাঠের পাশে যদি কোনো দেয়াল থাকে নিমিষে শুরু হয়ে যায় তার শিল্পকর্ম। কচু পাতা, কয়লা বা ইটের টুকরো খুঁজে নিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে ছবি আঁকতে থাকেন সেই দেয়ালে। তার সেই ছবি দেখে কেউ বাহবা দেয়, আবার কেউবা করেন তিরষ্কার!
প্রেমের ছবি আঁকেন চানু মিয়া। তবে জীবনে প্রেমের ছোঁয়া পাননি ছোট থেকেই লাজুক স্বভাবের চানু মিয়া। অবশ্য তিনি প্রেমে পড়েছেন, তবে সেটা প্রকাশ করেননি। পুষে রেখেছেন নিজের মনে। যে কারণে পাড়ি দিচ্ছেন নিঃসঙ্গ জীবন। চানু মিয়ার জীবনের গল্প শুনতে চেয়েছিলো রাইজিংবিডি। এই প্রতিবেদককে তিনি শোনান তার মনের না বলা কথা। জানিয়েছেন নিজের পরিবার আর আপনজনদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টের কথা।
চানু মিয়া জানান, ছোট থেকেই ভাল ছাত্র ছিলেন তিনি। ছিল পড়াশোনার প্রতি প্রচুর আগ্রহ। সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকতেন তিনি। ছিল না কোন বন্ধু। ছোট থেকেই তার মধ্যে কিছু মেয়েলী স্বভাব থাকায় মা রুপজান ছেলেদের সাথে মিশতে দিতেন না। আর তাই বিনোদন হিসেবে পড়াশোনার ফাঁকেই বোন জামাইয়ের সাথে সিনেমা দেখতে যেতেন। না নিয়ে গেলে কান্না করতেন। রুপালী পর্দায় দেখতেন নায়কের সাথে ববিতা, শাবানা বা কবরীর প্রেম। তখন থেকেই ববিতাকে ভালো লাগতো চানু মিয়ার।
সেই সময় প্রেম শব্দটির আক্ষরিক অর্থ বুঝতে না পারলেও মনের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করতো ববিতার জন্য। আর সেই ভালো লাগা বাড়ি এসে তিনি ফুটিয়ে তুলতেন পেন্সিলের আঁচড়ে। আঁকতেন ববিতার ছবি। প্রাথমিকে পড়ার সময় স্কুলের এক হিন্দু মেয়েকে ভালো লাগে চান মিয়ার। কিন্তু ধর্মের অমিল থাকায় সেই ভাল লাগা কখনো প্রকাশ করেননি তিনি।
প্রাথমিকের গণ্ডি পেড়িয়ে ভর্তি হলেন শহরের বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে। তখন বন্ধুদের সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে রুপসী সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যেতেন। সিনেমা দেখে এসে স্কুলের খাতায় আঁকতেন ববিতার ছবি, আঁকতেন সিনেমার নানা দৃশ্য। এসব দেখে বন্ধুরা উৎসাহ দিতো। মাধ্যমিকে পড়ার সময় পাড়ার সমবয়সী এক মেয়ের প্রেমে পড়েছিলেন চানু মিয়া। কিন্তু নিজের লাজুক স্বভাব আর বড় গৃহস্থ পরিবারের মেয়ে বলে সেই ভালোবাসা কখনো প্রকাশ করার সাহস পাননি।
মাধ্যমিকে প্রায় সব সাবজেক্টেই লেটার মার্কস পান তিনি। কিন্তু ইংরেজিতে কয়েক নাম্বারের জন্য অকৃতকার্য হন। ২০০০ সালের ৪ জানুয়ারী মা রুপজান মারা যান। এর কিছুদিন পর একই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারী বাবা মধু মিয়াও চলে যান পরপারে। আর তখন থেকেই দুর্দশা ঘিরে ধরে তাকে। বাবা বহু জমি রেখে যাওয়ার পরও অর্থ কষ্টে কাটাতে হয় তাকে। ছয় ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট চান মিয়া। বাবার সম্পত্তির কোন ভাগও পাননি তিনি। বড় পাঁচ বোন আর চাচাতো ভাইয়েরা সব দখল করেছেন। পরিবারের কেউ দায়িত্ব নিয়ে তাকে বিয়েও করাননি। ফলে চানু মিয়াকে বেঁছে নিতে হয়েছে একাকী জীবন।
চানু মিয়া বলেন, ‘সকাল থেকেই মাঠে গরু চরাই। সেই গরুর দুধ বেঁচে নিজের চাহিদা মেটাই। সেটা দিয়েই বাবা সম্পত্তির অধিকারের জন্য মামলা করেছি। বাবার রেখে যাওয়া প্রায় ১০ পাখীর মতো জমি আছে। কিন্তু সব জমি আমার বড় বোনেরা আর চাচাতো ভাইয়ের ছেলে দখল করেছেন। টাকার অভাবে কখনো কোন দোকান থেকে কিছু কিনে খেতে পারি না। পরিবারের লোকেরা সবাইকে বলে আমি অসুস্থ, পাগল। আর এসবই আমার সম্পত্তি দখলের জন্যই।
ছবি আঁকার অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে চানু মিয়া বলেন, নিজের একাকিত্ব আর সব ভুলে থাকতে আমি ছবি আঁকি। সারাদিন বাড়িতে যাই না। গরু চরাই, মন খারাপ থাকলে ছবি আঁকি। এই রঙ্গিণ খেলা আমার ছোট থেকেই ভালো লাগে। রং কিনতে পারি না বলে কচু পাতা দিয়ে ছবি আঁকি।
অনেকেই আমার আঁকা ছবি দেখে খুশি হয়ে টাকা দেয়, কেউ ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ টাকাও দেয়। আমি কখনো নেই না। তারপরও জোর করে অনেকে দিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ দেয়ালে ছবি আঁকি বলে গালি দেয়। আমার আঁকা ছবি বেশি দিন থাকে না। কচু পাতার রস আর কয়লা দিয়ে আঁকা বলে বৃষ্টি হলেই সব ধুয়ে যায়।
তবে বাসস্ট্যান্ডে গেলে ছবি আঁকতে ভালো লাগে। গাড়ির শ্রমিকরা অনেক সময় রং দেয়, সেটা দিয়ে ছবি এঁকে তাদের দেখাই, তারা খুশি হয়। রং দিয়ে আঁকা বলে এই ছবিগুলো হয়তো অনেক দিন থাকবে। টাঙ্গাইলে আগে এক ডিসি ছিলেন, মাহবুব হোসেন। তিনি অনেক দিন লোক দিয়ে আমাকে তার বাসায় নিয়ে গেছেন, কাগজে ছবি আঁকতে দিয়েছেন। খুশি হয়ে ভালো মন্দ খাইয়েছেন, টাকাও দিয়েছেন।
প্রেমের ছবি আঁকা সম্পর্কে জানতে চাইলে চানু মিয়া বলেন, ‘অনেকে বলে আমার আঁকা ছবিতে প্রেম থাকে। সিনেমার দৃশ্যের ছবি আঁকলে বলে ববিতার মতো হয়েছে। এখন তো আর টাকার জন্য হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে পারি না। কারো সাথে তেমন কথাও বলি না, বলে কোন দোকানে বসে টিভিও দেখি না। ছোট সময় যা যা দেখেছি সেগুলোই আঁকি। ববিতার অনেক সিনেমার গান আমার মুখস্থ। এছাড়াও এই যুগের ছেলে মেয়েরা পার্কে ঘুরে, প্রেম করে। এই ছবিগুলো আমি আঁকি, মুক্তিযুদ্ধের ছবি আঁকি। আমার এই রঙ্গের খেলা ভালো লাগে। নিজের কষ্ট ভুলতে পারি।’
- গোপালগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ
- গোপালগঞ্জে ধ্রি হুইলার ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত
- ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন, পলকেই নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ
- টানা দুইদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, হিট এলার্ট জারি
- ৮৭ হাজার টাকার মদ খান পরীমণি, পার্সেল না দেওয়ায় শুরু হয় পাগলামি
- ৪ লাখ টাকায় হামলা করানো হয় সালমান খানের বাড়িতে
- বাগেরহাটে প্রাণি সম্পদ মেলা
- বিছানার ভেলায় চড়ে সদাই কিনছেন শারজাহবাসী
- সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক, বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: কাদের
- ৫ লাখ টাকায় সালমানের বাসায় গুলির নির্দেশ!
- মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস: প্রধানমন্ত্রী
- ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চর কনটেইনার টার্মিনাল
- মাঠ প্রশাসন সামলাতে হার্ডলাইনে সরকার
- ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা
- দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- এক সফটওয়্যারের আওতায় সব সরকারি চাকরিজীবী
- জলবিদ্যুতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আহ্বান নেপালের
- সর্বজনীন পেনশন প্রসারে ৮ বিভাগে মেলা
- হাওরে কৃষকের মুখে স্বর্ণালি হাসি
- পর্যটন শিল্পের বিকাশে কুয়াকাটায় বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ
- মুজিবনগর দিবস : সব অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার
- আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রাশিয়ার অস্ত্র, পাশে চীনও
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
১৬ মে যুক্তরাষ্ট্র যাবে টাইগাররা - পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রিসে `৯ম আওয়ার ওশান কনফারেন্সে` যোগ দিয়েছেন
- আমাদের লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাব বিজয়ের স্বর্ণ তরণ অভিমুখে
- বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো বিজিপির আরও ৪৬ সদস্য
- আট হাজারের বেশি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল
- জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: অর্থমন্ত্রী
- গোপালগঞ্জে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে চার নারীসহ নিহত ৫
- ডাকাত ধরে কাঁধে করে নিয়ে এলেন এএসআই
- এশার নামাজ না পড়ে তারাবি পড়া যাবে?
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হটকারি সিদ্ধান্ত: হাছান মাহমুদ
- গোপালগঞ্জে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন এসপ
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশে
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে মুস্তাফিজকে!
- নূহ (আ.) এর নৌকা পাওয়া গেলো আরারাত পর্বতে!
- অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন যেভাবে
- শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের একান্তবৈঠকের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের
- গোপালগঞ্জে ১১ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা
- আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস
- ভারতের যে গ্রামে গর্ভবতী হতে ছুটে যান বিদেশি মহিলারা!
- ভারত থেকে ৩শ’ টন পেঁয়াজ আমদানি
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর
- কত দিতে হলো মুক্তিপণ?
- সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সালামকে কোটালীপাড়ায় সংবর্ধনা