• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

করোনার টিকা আবিষ্কারের গবেষণায় বাঙালি নারী

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২০  

প্রাণঘাতী করোনায়ভাইরাসে (কোভিড-১৯) মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একইসঙ্গে শনাক্তের সংখ্যাও বেড়েছে। মরণঘাতী এ ভাইরাসের প্রতিষেক আবিষ্কারে দেশে দেশে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকও চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষণা।

সেখানকার জেনার ইনস্টিটিউটের যে দলটি এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারে ব্যস্ত, সেই দলের অন্যতম সদস্য সুমি বিশ্বাস। তিনি একজন বাঙালি। তার ও তার সহকর্মীদের সাফল্যের দিকে এখন শুধু ব্রিটেন নয়, গোটা বিশ্ব তাকিয়ে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদেন এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বেঙ্গালুরুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পড়ার পর ২০০৫ সালে ব্রিটেনে যান সুমি। এরপর একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি পেরিয়েছেন। প্রথমে ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’-এ যোগ দেন তিনি। সেখানে ১১ মাস কাজ করার পরে ২০০৬ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে ডি-ফিল করতে।
২০১৩ সালে জেনার ইনস্টিটিউটে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করেন এই বাঙালি ইমিউনোলজিস্ট। তিন বছরের মাথায় এই প্রতিষ্ঠানেরই সহযোগী অধ্যাপক হন তিনি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধীনে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নাম স্পাইবায়োটেক। সেই প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও সুমি।
তিনি মূলত ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে জেনার ইনস্টিটিউটে যে গবেষণা চলছে, সেই দলের নেতৃত্বেও রয়েছেন সুমি। মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে সুমিদের বানানো প্রতিষেধক।
এই বাঙালি নারী এখন কোভিড ১৯-এর প্রতিষেধক নিয়ে যে দলে কাজ করছেন, সেখানে রয়েছেন ১৫ জন বিজ্ঞানী। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন সারা গিলবার্ট।
এছাড়া আড্রিয়ান হিল ও টেরেসা ল্যাম্বের মতো বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন সেই দলে। লকডাউনের জন্য বেশিরভাগ বিজ্ঞানীই এখন বাড়ি থেকে কাজ করছেন। যাদের ল্যাবে যেতে হচ্ছে, তারাও যথাযথ সাবধানতা নিচ্ছেন। তবে গবেষণা নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ততার জন্য আপাতত সংবাদমাধ্যমকে তারা কেউই সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে রেখেছেন।
এ বছরের জানুয়ারিতে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করে সারার দল। গত সপ্তাহে প্রতিষেধকটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু হয়ে গেছে। সেই ট্রায়াল ইতিমধ্যে গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এ প্রচেষ্টায় ৮০ শতাংশ সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল সারার দল।
আপাতত গোটা বিশ্বে করোনার প্রতিষেধক তৈরির জন্য ১০০টিরও বেশি প্রকল্পে কাজ চলছে। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে জানিয়েছে, আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে গেলে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।
যে কটি প্রকল্পে কাজ চলছে, তার মধ্যে সাতটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন। লন্ডন ইম্পিরিয়াল কলেজও একটি প্রতিষেধক বানানোর চেষ্টা করছে, যার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা জুন মাসের মধ্যেই।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ