• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

কানের মধ্যে তৈরি হয় মোম, এটি কি ক্ষতিকর

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০১৯  

কান শরীরের অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি ইন্দ্রিয়। কানের মোম সম্পর্কে কি আপনার জানা আছে? কানের মোমকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সেরুমেন। এটি ধূসর, বাদামী, কমলা বা লাল রঙের এক প্রকার চটচটে পদার্থ। যা মানুষ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর কানের গহ্বরের বহির্ভাগে ক্ষরিত হয়। এটি জিনগত কারণে দুইরকম হতে পারে-

নরম/ভিজে (প্রকট বৈশিষ্ট্য)- বেশিরভাগ আফ্রিকান এবং ইউরোপীয়ান মানুষের ক্ষেত্রে মধুর ন্যায় বাদামী, গাঢ় বাদামী, বা গাঢ় কমলা রঙের আর্দ্র সেরুমেন ক্ষরিত হয়।

শুকনো/পালকের মত (প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য)- এশিয়ার পূর্বাংশের বাসিন্দা এবং আমেরিকার স্থানীয়দের ক্ষেত্রে এই শুকনো, ধূসর রঙের সেরুমেন ক্ষরিত হতে দেখা যায়।

কর্ণকুহরের তরুণাস্থিযুক্ত অংশে সেরুমেন তৈরি হয়। সিবেসিয়াস গ্রন্থির সান্দ্র ক্ষরণ এবং রূপান্তরিত অ্যাপোক্রাইন ঘর্মগ্রন্থি থেকে ক্ষরিত নন ভিসকস পদার্থের মিশ্রণে উৎপন্ন হয় কানের মোম। এটি মূলত মৃত চর্মকোশ দিয়ে তৈরি। যার মধ্যে রয়েছে ৬০ শতাংশ কেরাটিন, ১২ থেকে ২০ শতাংশ সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যালকোহল, স্কোয়ালেন্স এবং ৬ থেকে ৯ শতাংশ কোলেস্টেরল।

কানের মোম খুঁচিয়ে পরিষ্কার করা উচিত নয়, যদি এর ক্ষরণ স্বাভাবিক থাকে। কারণ কানের মোমের রয়েছে কিছু উপকারিতা-

১. এটি কর্ণকুহরকে পরিষ্কার রাখে। কানে ঢুকে পড়া কোনো পদার্থকে সঙ্গে নিয়ে সেটি আবার কান থেকে বেরিয়েও যায়।

এবার জেনে নিন কানের ময়লা কীভাবে পরিষ্কার করবেন?

কানের দু’টি কাজ- শোনা এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই কানের নিয়মিত যত্ন নেয়া দরকার। কানের ভেতরের অংশ রক্ষার জন্য যদিও মোমে রয়েছে।  ধুলোবালির সংস্পর্শে তাতে ময়লা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করলে বধিরতাও আসতে পারে। অসাবধানবশত কানের ভেতরে পানি ঢুকলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে পুঁজের মতো তরল সৃষ্টি করে। একে কথ্য ভাষায় ‘কানপাকা’ বলে।  এ ছাড়াও কানের সমস্যা থেকে মানসিক বিকৃতিও আসতে পারে।    

কান পরিষ্কারের জন্য তুলো লাগানো ‘স্টিক’ অর্থ্যাৎ কটনবাড ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। চিকিৎসকের পরামর্শে কানের ‘ড্রপ’ ব্যবহার করে কানের শক্ত ময়লা নরম করতে হবে। পাঁচ-সাত দিন পরপর ড্রপ ব্যবহার করলে উপশম মেলে। তাছাড়া, খাবার খাওয়ার সময়, কথা বলার সময়ে বা হাঁটাচলার সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই কানের পেশির সঞ্চালনে কানের ময়লা বেরিয়ে আসে। বরং তুলো লাগানো কাঠি বা অন্য কোনো সূচালো জিনিস দিয়ে কানের ময়লা পরিষ্কারের চেষ্টা করলে তা কানের আরও ভেতরে চলে গিয়ে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ