• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

কাশি হলেই যক্ষ্মার ভয়? জেনে নিন এর সঠিক লক্ষণগুলো

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

আজকাল ঠাণ্ডা-কাশি যেন লেগেই থাকে। আর এই কাশি কিছুতেই ভালো হতে চায় না। যা একসময় মনের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। মনে হয় যক্ষ্মা হয়ে গেলো না তো! তাইতো জানা প্রয়োজন এর সঠিক লক্ষণগুলো।

মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Mycobacterium tuberculosis) নামক একটি জীবাণু এই রোগের জন্য দায়ী। যক্ষ্মা বা টিবি একটি সংক্রামক রোগ। যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীরা খুব রোগা হয়ে পড়েন। যক্ষ্মা রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ফুসফুস। তাছাড়া হৃৎপিণ্ড, অগ্ন্যাশয়, ঐচ্ছিক পেশী ও থাইরয়েড গ্রন্থি ছাড়া শরীরের প্রায় যে কোনো অঙ্গেই যক্ষ্মা রোগ হতে পারে। এমনকি কিডনি, মেরুদন্ড অথবা মস্তিষ্ক পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে যক্ষ্মায়। জীবাণু শরীরে ঢুকলেই কিন্তু যক্ষ্মা হয় না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে যক্ষ্মা হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। চলুন জেনে নেয়া যাক এর লক্ষণগুলো-

ফুসফুসে আক্রান্ত যক্ষ্মার ক্ষেত্রে

> সাধারনত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি

> জ্বর

> কাশির সঙ্গে কফ এবং রক্ত আসলে

> বুকে ব্যথা অথবা শ্বাস নেয়ার সময় অথবা কাশির সময় ব্যথা হওয়া

> ওজন কমে যাওয়া

> শারীরিক দুর্বলতা

> ক্ষুধামন্দা বা খাদ্যে অরুচি

> অবসাদ অনুভব করা

ফুসফুস বহির্ভূত যক্ষ্মার ক্ষেত্রে

> অন্ত্র ও খাদ্যনালীর যক্ষ্মার লক্ষণগুলো হল পেটফাঁপা, পেটব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বদহজম, পেটের মধ্যে বুটবাট শব্দ হওয়া। আবার কখনো কখনো পাতলা পায়খানা, খাবারে অরুচি ইত্যাদি।

> চামড়ায় যক্ষ্মা হলে চামড়া ফুলে যায়, লাল হয়ে ওঠে, ঘা হয় এবং কালো কালো দাগ হতে পারে। ঘা এর মাঝখানে কিছুটা নিচু থাকে।

> অণ্ডকোষ এবং এর আনুষঙ্গিক অঙ্গে যক্ষ্মা হলে অণ্ডকোষ ও এপিডিডামিস ফুলে যায়, ব্যথা হয়।

> গান্ড আক্রান্ত হলে গান্ড ফুলে যায়, লাল হয়ে যায় এবং ব্যথা হয়। শরীরের বিভিন্ন গান্ডের মধ্যে থেকে সাধারণত ঘাড়ের গান্ডগুলোতেই এই যক্ষ্মা বেশি হতে পারে।

> কিডনি আক্রান্ত হলে পেটের পেছনের দিকে কিডনির অবস্থানে ব্যথা হয়। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে। তবে অনেক সময় তা খালি চোখে দেখা যায় না। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়। আবার ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।

> জয়েন্ট, হাড় অথবা শিরদাড়া আক্রান্তের ক্ষেত্রে আক্রান্ত অঙ্গ ফুলে যাবে, ব্যথা হবে এবং শিরদাড়া বাঁকা হয়ে যেতে পারে।

> কখনো কখনো যক্ষ্মার কারণে ফুসফুসের অন্ত ও বহিরাবরণের মধ্যে এক ধরনের তরল জমে। এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পানির মতো দেখা যায়। আবার কখনো রক্ত বা দুধের মতো দেখা যেতে পারে। একে বলা হয় পরাল ইফিউশন। আবার একই কারণে হৃৎপিণ্ডেও এ ধরনের পদার্থ জমতে পারে। একে পেরিকার্ডিয়াল ইফিউশন বলে। এর ফলে বুকে ব্যাথা হয়, বুক ধড়ফড়, জ্বর, শ্বাস কষ্ট ও কাঁশি হতে পারে।

> তরুণীদের কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে, তার জরায়ুতে যক্ষ্মা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। আবার মেয়েদের যৌনাঙ্গ, জরায়ু ইত্যাদি অঙ্গে আক্রান্তের ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথা হয়। আবার পেটের দুই পাশে বেশি ব্যথা হতে পারে। পেটে হাত দিলে অনেক সময় শক্ত কিছু অনুমিত হতে পারে।

মনে রাখতে হবে, কারো শরীরে যক্ষ্মার সাধারণ লক্ষণসমূহ দেখা দিলে আর বিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ এ অবস্থায় যে কোনো লোকেরই যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ