• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

খাগড়াছড়িতে এক সপ্তাহে শতাধিক শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯  

শীতের শুরুতেই খাগড়াছড়িতে বাড়ছে নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল ও ৮ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে শতাধিক শিশু। আতঙ্কিত না হয়ে শিশুর বাড়তি যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিরোধের পরার্মশ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ডা. ইদ্রিস মিয়া জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে রোগীরা। তবে সিভিয়ার নিমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চট্টগ্রামে মেডিক্যালে রেফার করছে চিকিৎসকরা। গত এক সপ্তাহে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে শুধু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩১ জন এবং ৮ উপজেলা কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে শতাধিক শিশু। শীতে শিশুরা শ্বাসকষ্ট ও জ্বর ছাড়াও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ৬ মাস।

খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর অভিভাবক মিন্টু ত্রিপুরা, শিল্পী দাশ, রূপনা চাকমা জানান, পাহাড়ে ঠাণ্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের শ্বাসকষ্ট, ঠাণ্ডা, জ্বর ও সর্দি হচ্ছে। বেশির ভাগই ৪-৫ দিনের জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণেও শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  চিকিৎসক ও স্টাফরা ভালোভাবেই শিশুদের দেখশোনা করছেন বলে তারা জানান।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে লক্ষীছড়ি সদর উপজেলার বাসিন্দা লাচি মং মারমার ছেলে ৫ দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছে। লক্ষীছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ দিন চিকিৎসার পর তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

লাচি মং মারমার জানান, প্রথমে ঠাণ্ডা থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, পরে তা নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। চিকিৎসা নেওয়ার পর তার ছেলে এখন কিছুটা সুস্থ।

সিভিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মাটিরাঙা উপজেলার তবলছড়ি এলাকার করিম মিয়ার ৮ মাসের শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থা খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে নিউমোনিয়ার কোনও চিকিৎসা নেই। এখন চট্টগ্রামে নিয়ে যেতে হচ্ছে।’

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুজলা চাকমা জানান,‘আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগই সিরিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তাদের অবস্থাও ক্রিটিক্যাল। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ আছে এবং সেভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়নময় ত্রিপুরা নিউমোনিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে শিশুদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সর্তকতা অবলম্বন করলে এড়ানো যাবে নিউমোনিয়া।  বাড়ির পরিবেশ যাতে স্যাঁত স্যাঁতে না হয়, বাচ্চাদের সব সময় গরম কাপড় পড়িয়ে রাখতে হবে । অনেক সময় গরম কাপড়ের কারণে ঘেমেও শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে হবে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ