• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গরিবের জন্য ১০ টাকায় চাল, আসছে নির্দেশনা

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২০  

২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার।

ওএমএসের (খোলা বাজারে বিক্রি) মাধ্যমে নির্দিষ্ট দোকান ও ট্রাক থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে একটি পরিবার একবারে সর্ব্বোচ্চ পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন।

একই সঙ্গে আটা, ডাল ও ভোজ্যতেলও বিক্রি করার চিন্তা করছে সরকার। বুধবার (২৫ মার্চ) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, ২৬ মার্চ থেকে ১০ দিন সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়ে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।

শহর এলাকায় বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ থাকবে। এতে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে শহর এলাকায় বসবাসরত খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী। হকার, রিকশা,-ভ্যান চালক, দিনমজুর, বাস ড্রাইভার, হেলপার ডারা রয়েছেন করোনা পরিস্থিতিতে তাদের এ সুবিধা দেওয়া হবে।

এ বিষয় বিবেচনা করে ওএমএস চালু করার পরিকল্পনা সরকারের। এরই অংশ হিসেবে সীমিত সময়ের জন্য হলেও শহরের দরিদ্র লোকদের ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে খাদ্য সচিব মোসামৎ নাজমা নারা খানম বলেন, এখন যে পরিস্থিতি চলছে সেটা এক প্রকার লকডাউন বলা য়ায। কারণ বাস, লঞ্চ, রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া লোকজন বাসা থেকে বেড় হচ্ছে না। ফলে হত দরিদ্র লোকজন বেকার হয়ে যাবে। এতে তাদের জীবন ধারণে সমস্যার সৃষ্টি হবে।  সেক্ষেত্রে সরকার তেজগাঁও, পোস্তগোলা ও নারায়ণগঞ্জের গুদামগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণের খাদ্য পণ্য মজুদ করেছে। তবে দুর্যোগপূর্ণ সময়ে সিদ্ধান্তগুলো নেয় ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

‘তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করি। খাদ্য মন্ত্রণালয় সব দিক থেকে প্রস্তুত আছে। ইতোমধ্যে আমাদের সকল জেলা উপজেলার খাদ্য কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রামীণ এলাকায় কার্ডধারী প্রায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে এ কার্যক্রম চালু নেই। এক্ষেত্রে নগরবাসীর জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে খোলাবাজারে (ওএমএস)  ১০৭ দোকানে ও ১৩ ট্রাকে করে এ চাল বিক্রি করা হয়। শুক্রবার ছাড়া সরকারি ছুটিতেও ওএমএস চালু রাখা হবে।  চালের পাশাপাশি আটাও বিক্রি করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন ২ মেট্রিকটন ৩০ টাকা কেজিতে চাল ও ১৮ টাকা কেজিতে আটা দেওয়া হচ্ছে। তবে ৩০ টাকা কেজির চাল মোটা হওয়ায় ওএমএসের চাল কেউ কেনে না। সরকার যদি ৩০ টাকা কেজির চাল ১০ টাকা কেজিতে দিতে বলে আমরা দেবো। আমাদের যথেষ্ট মজুদ আছে ও আমরা প্রস্তুত আছি।

তবে এ বিষয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দেবেন সেখানে এটি বাস্তবায়নের কথাও থাকতে পারে বলে জানান খাদ্যসচিব।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,  ৩০ টাকা দরে খোলাবাজারে (ওএমএস) এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরে ১ লাখ ৪০ হাজার মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু এবার বাজারে চালের দাম বেশি না হওয়ায় এর চাহিদা একেবারেই কম। তাই গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বরাদ্দকৃত চালের মাত্র ১ হাজার মেট্টিক টন বিক্রি হয়েছে। বাকি চাল এখনো অবিক্রিত রয়ে গেছে। এসব অবিক্রিত চালই আরও বেশি ভর্তুকি দিয়ে জরুরি অবস্থায় খোলাবাজারে দরিদ্র মানুষের কাছে ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে চায় সরকার। এজন্য সরকারকে অতিরিক্ত কোনো ভর্তুকিও দিতে হবে না। কারণ চলতি বাজেটে খাদ্য ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওএমএসের চাল বিক্রি না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

এখন ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি করলে আগের বরাদ্দকৃত ভর্তুকি ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় হয়ে যাবে বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান টিসিবি মুজিববর্ষকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে।

আসন্ন রমজানেও অন্য বছরের তুলনায় ৭ থেকে ১০ গুণ পণ্য নিয়ে মাঠে থাকবে টিসিবি। এ কার্যক্রমের আওতায় প্রতিজন ভোক্তা ৫০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ চার কেজি চিনি, ৮০ টাকা প্রতিলিটার হিসেবে সার্বোচ্চ পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল, ৫০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ দুই কেজি মসুর ডাল এবং ৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ