• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের গ্রামে গ্রামে বসছে নিরাপদ পানির ফিল্টার

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২০  

মুজিববর্ষ উপলক্ষে নভেম্বর মাসের মধ্যেই গোপালগঞ্জের ২০ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সুপেয় পানির আওতায় নিয়ে আসার প্রত্যাশা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের।

প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯টি পুকুর খনন ও সংস্কার করে ‘পন্ড স্যান্ড ফিল্টার’ নামের  আধুনিক পিএসএফ ফিল্টার বসানো হচ্ছে। এসব ফিল্টারের নিরাপদ পানিতে জেলার বড় এক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা নিরাপদ হবে।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার বলেন, গোপালগঞ্জের কিছু জায়গায় সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। এছাড়া মাটির নিম্নস্তরে মাত্রাতিরিক্ত পাথর থাকায় এসব অঞ্চলে গভীর নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব হয় না।

তাই পাঁচটি উপজেলায় ২৯টি পুকুর খনন ও সংস্কার করেছে। প্রত্যেকটি পুকুরে সংযুক্ত করা হয়েছে সৌরশক্তি চালিত ‘পন্ড স্যান্ড ফিল্টার’ (পিএসএফ)। প্রতিটি ফিল্টার থেকে দিনে ১০ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবারাহ করা যাবে।

এতে সুপেয় পানির সুবিধা পাবে জেলার ছয় হাজার পরিবারের অন্তত ২০ হাজার মানুষ বলেন তিনি।

এরই মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা, কাঠি ও উলপুরর ইউনিয়নে দুইটি করে এবং দুর্গাপুর, সাহাপুর ও উরফি ইউনিয়নে একটি করে এই ফিল্টার চালু করা  হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় নয়টি ফিল্টার চালু করা হয়েছে। বাকি ২০টি ফিল্টার পানি সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যেই এগুলো চালু করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

প্রকৌশলী দীপক জানান, গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জরিপে দেখা গেছে, এসব এলাকার ১২ থেকে ২০ ভাগ মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানি বাহিত  রোগে ভুগছিলেন।

তাই মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পল্লী পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় এই সুপেয় পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়।

এ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রতন কুমার সাহা বলেন, পুকুর খনন সংস্কার করার পর পুকুরের চারপাশ কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ইট বিছিয়ে রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুকুরের সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে।

পুকুরপাড়ে সৌরশক্তি চালিত ফিল্টার স্থাপন করা হয়েছে। এ ফিল্টারে পুকুরের পানি তুলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পানি পরিশোধন করে সরবারাহ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি ফিল্টার থেকে বিনামূল্যে ২০০ থেকে ২৫০ পরিবার সুপেয় পানি পাচ্ছে।

“বোতলজাত পানির মতোই এ ফিল্টারের নিরাপদ পানি পান করে প্রতিটি মানুষ সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করবেন এমনটি আমরা প্রত্যাশা করছি।”

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্রামে বসেছে পিএসএফ ফিল্টার।

গোবরা ইউপি চেয়ারম্যান টুটুল চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নে মাটির নিচে পাথর তাই গভীর নলকূপ হয় না। অগভীর নলকূপের পানিতে আয়রন। দু’একটি গভীর নলকূপ বসানো হলেও পানিতে লবণ আসে।

“তাই আমার ইউনিয়নের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পুকুর খনন ও সংস্কার করেছে। পরে পুকুর পাড়ে পিএসএফ ফিল্টার বসিয়ে দিয়েছে।”

গোবরা ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্রামের গৃহবধূ নাজমা আক্তার বলেন, ফিল্টারের পানি খুবই ভালো।

‘বাজারের বোতলজাত পানির চেয়েও এই পানির স্বাদ ভালো।”

রান্না ও খাবারসহ অন্যান্য কাজে এ পানি ব্যবহার করছেন তারা।

পানি বাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকার প্রসঙ্গ তুলে ওই গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই পানি আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ