• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

চিরুনি অভিযানের প্রথম দিনে ১৩১ স্থাপনায় জরিমানা

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২০  

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সকল ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান (চিরুনি অভিযান) পরিচালনা করা হয়েছে।

শনিবার অভিযানের প্রথম দিনে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ১১ হাজার ৯৬৯টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ১৩১টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া আট হাজার ৩৮০টি বাড়ি-স্থাপনায় এডিস মশার বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় আটটি বাড়ি-নির্মাণাধীন ভবনের মালিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মোট ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যান্য বাড়ি ও স্থাপনার মালিককে সতর্ক করা হয়।

dengu

লার্ভা পাওয়া স্থানগুলো হচ্ছে- পরিত্যক্ত টায়ার, বালতি, ফুলের টব, বোতল, পানির মিটার, গ্যারেজ, পানির হাউজ, মাটির পাত্র, ভাঙা মগ, বাড়ির মেঝে, পানির ট্যাংক, প্লাস্টিকের পাত্র, ছাদের ড্রেন, দইয়ের পাত্র, পরিত্যক্ত কমোড, ডাবের খোসা, ভাঙা পাতিল, বেজমেন্ট, দুই বাড়ির মধ্যবর্তী স্থান ইত্যাদি।

জানা গেছে, ১০ দিনব্যাপী এ অভিযান শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরিচালিত হবে। চিরুনি অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের একটি সেক্টরে অর্থাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এভাবে আগামী ১০ দিনে সমগ্র ডিএনসিসি এলাকায় অভিযান সম্পন্ন করা হবে।

dengu

প্রতিটি সাবসেক্টরে ডিএনসিসির চারজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও একজন মশকনিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশককর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কিংবা কোথাও তিন দিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, কিংবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা, যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করছে। আজ থেকে চলমান এই চিরুনি অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ৯জন কীটতত্ত্ববিদ, ডিএনসিসির তিনজন কীটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্যবিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর ডিএনসিসির চিরুনি অভিযানসহ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে।

চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি-স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেজ তৈরি হবে। ডাটাবেজ অনুযায়ী পরবর্তীতেও তাদের মনিটর করা সহজ হবে।

dengu

আজ চিরুনি অভিযানে উত্তরা অঞ্চলে মোট ৫৯২টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৯টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। মিরপুর-২ অঞ্চলে মোট দুই হাজার ৩৯৮টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে চারটিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। ৯টির মালিককে মোট ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মহাখালী অঞ্চলে মোট এক হাজার ৫৭৪টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে ২৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। মিরপুর-১০ অঞ্চলে মোট এক হাজার ১৪৭টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে চারটিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদের সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে।

কারওয়ান বাজার অঞ্চলে মোট দুই হাজার ৯৯টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। হরিরামপুর অঞ্চলে মোট এক হাজার ৬৮৩টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে ২৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। দক্ষিণখান অঞ্চলে মোট এক হাজার ২৩৬টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। উত্তরখান অঞ্চলে ৯০০টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। ভাটারা অঞ্চলে মোট ৩২২টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। সাঁতারকুল অঞ্চলে ১৮টি বাড়ি-স্থাপনা পরিদর্শন করে কোনো এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। তবে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে কীটনাশক ছিটানো হয়েছে। এসব অঞ্চলে বাড়ির মালিকদের সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়।

dengu

অভিযান চলাকালে এলাকাবাসীকে এডিস মশার বিস্তাররোধে সচেতন করা হয় এবং জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধানসহ সকলকে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখার পরামর্শ প্রদান করা হয়। অভিযান চলাকালে ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ডিএনসিসির বর্জ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মী ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ