• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

নেত্রকোনায় হাওরের পানি দেরিতে নামায় ফসল হানির আশঙ্কা

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  

নেত্রকোনায় হাওর থেকে এবার পানি দেরিতে সরায় ফসল উঠতে উঠতে ফের পানিতে তলিয়ে যাবার আশঙ্কায় কৃষকরা। অনেক জমিই এবার অনাবাদী থাকার আশঙ্কা করছেন তারা।

হাওরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাওর ডিঙ্গাপোতা। হাওর এলাকার উৎপাদিত ধানের অধিকংশই সেখানে ফলে। গত ২০১৭ সালের অকাল বন্যার পর থেকে জমি পত্তন (টংক) দেওয়াও কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। পানি না সরার কারণে পৌষ মাস পুরোটাই ভেস্তে গেছে কৃষকদের। মাঘে করতে হচ্ছে চারা রোপন। 
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার হাওরাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম ডিঙ্গাপোতা হাওর। বোরো ধানের চাষ হয় এ এলাকায়। কিন্তু এবার পানি দেরিতে সরায় কৃষকরা চারারোপন করতে পারেননি সময়মতো। সম্পূর্ণ পানি সরে গেলে চারা রোপন করে ধানগাছে ফলন ধরতে ধরতেই আবার হাওরে পানি প্রবেশ করে ফসল হানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এমনটি হওয়ায় অনেক জমি এখন পতিত থাকে। এর ফলে দিনে দিনে অনেক কৃষক অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।

এলাকার অন্যতম কৃষক গৌতম তালুকদার, অনুপ তালুকদার, কৌশিক তালুকদারসহ  অন্যরা বলেছেন, কোনও নিয়মনীতি মানা হয়নি বাঁধ বা স্লুইস গেইটে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঠিক সময় কাজ যেমন করে না। তেমনি গেইট খুলে দেয়া এবং লাগিয়ে দেয়ার কাজও করে না সঠিক সময়ে। আজকাল জমি পত্তন এমনভাবে কমে গেছে, ১২০০ টাকা থেকে নেমে ৫০ টাকা কাঠায় চলে এসেছে। তার উপর ধানের মূল্য কম। শ্রমিক মুজুরি বেশি। সব মিলিয়ে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে কৃষি কাজই বাদ দিয়ে দিয়েছেন। চলে গেছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অন্য পেশার কাজ করতে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (মোহনগঞ্জ উপজেলার পর শাখা-০১) বজলুর রহমান বলেন, সাগরের দিকে এদিকের পানি যায় বলে সাগরের ওয়াটার লেবেল এখনও অনেক উপরে ফলে এদিকের পানিও নীচে নেমে যেতে দেরি হচ্ছে। তবে তারা খনন কাজ করে যাচ্ছেন।

নেত্রকোনার কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান জমি পতিত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নানা ত্রুটির জন্য হাওরের এই সমস্যা। নদী খাল ড্রেজিং হচ্ছে না। সময়মতো গেইট খোলা হয় না। তিনি তাদের প্রতি অনুরোধ রাখেন যেন সময়মতো এসব দেখভাল এবং পরিষ্কার করা হয়।

পাশাপশি বিএডিসি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত বাঁধ স্লুইস গেইটকে তিনি দায়ী করেন। তারপরও আশা রাখছেন লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হবে বলে। 

এ বছর জেলার মোট আবাদি জমি ২,৭৯,৪৩৮ হেক্টরের মধ্যে পতিত রয়েছে ৪০,৯৭০ হেক্টর। তার মধ্যে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১,৮৩,৮৭০ হেক্টর।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ