• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

পূজা মণ্ডপে নো মাস্ক, নো এন্ট্রি!

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২০  

প্রতি বছর দেশসেরা ও ব্যয়বহুল পূজা অনুষ্ঠিত হতো নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক নগরী বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে। ৭১ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরিসহ ভিন্ন ভিন্ন থিম তৈরি করে দেশ-বিদেশে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল ঐতিহ্যবাহী চৌমুহনীর পূজা মণ্ডপগুলো। 

চিত্রকর্ম মূর্তির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট তুলে ধরে জায়গা করে নিয়েছিলো বিশ্ব গণমাধ্যমে। তবে করোনার কারণে এবার নেই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন, দুর্গাপূজা পালন হলেও এবার পালন হবে না দুর্গোৎসব।

এ বছর নোয়াখালীর নয়টি উপজেলার ১৩১ স্থানে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। তবে এবার মণ্ডপের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কমেছে প্রতিমা তৈরির কাজও। তাই বাধ্য হয়ে কম মূল্যে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন কারিগররা। রং ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

তবে পূজার্থীরা আশা করছেন, এবার দুর্গা মায়ের প্রতি তাদের প্রার্থনা থাকবে, এবার করোনার কারণে না হলেও আগামীতে যেন তারা সবাইকে নিয়ে আবারো জাঁকজমকভাবে দুর্গোৎসব করতে পারে।

বিজয়া সার্বজনীন পূজা মন্ডপের সাংগঠনিক সম্পাদক জয় ভূঞা জানান, দুর্গাপূজার আয়োজন অন্যান্য বছর নোয়াখালীর পূজা মণ্ডপগুলোতে থাকতো উৎসবমুখর ও কর্মব্যস্ত পরিবেশ। দেশ-বিদেশ থেকে দর্শনার্থী আসতো পরিদর্শনে। ঢাক-ঢোলের বাদ্য মুখরিত থাকতো পূজা মন্ডপগুলো। এবার তা অনেকটা নেই বললেই চলে। 

চৌমুহনী ত্রিনয়নী পূজা মন্ডপের সভাপতি প্রদীপ নারায়ণ সাহা জানান, এরই মধ্যে বেশির ভাগ মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ, চলছে রংয়ের কাজ। তুলির আঁচড়ে শিল্পীরা সাজিয়ে তুলছেন দেবী দুর্গাকে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নোয়াখালী শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পাপ্পু সাহা জানান, এবার দুর্গাপূজা পালন হলেও পালন হচ্ছে না দুর্গোৎসব, থাকছে না আরতী প্রতিযোগিতা, মেলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা মন্ডপে প্রবেশ করতে হবে, সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, নোয়াখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক বিনয় কিশোর রায় জানান, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ২৬টি বিধি-নিষেধ ও পূজা উদযাপন কমিটির নির্দেশনা মেনে স্বল্প পরিসরে পূজা উদযাপন করবে নোয়াখালীর সব পূজা মণ্ডপগুলো। 

বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুর হোসেন মাসুদ জানান, সরকারের পক্ষ থেকে সব পূজা মণ্ডপে দেয়া হচ্ছে সব সহযোগিতা ও বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজা মন্ডপের প্রবেশ পথে নো মাস্ক, নো এন্ট্রি লিখা সম্বলিত স্টিকার লাগিয়ে দেয়া হবে।

নোয়াখালীর এসপি আলমগীর হোসেন জানান, নিরাপদে পূজা উদযাপনের জন্য পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি মোবাইল টিমও কাজ করবে। একই সঙ্গে আমরা প্রতিদিন পূজা মণ্ডপগুলো মনিটরিং করবো।

এ বছর দেবী দুর্গা আসবে দোলায় এবং বিদায় নেবে গজে (হাতি)। পঞ্জিকা মতে আগামী ২৬ নভেম্বর মহা দশমী সমাপ্তির মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসব। 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ