• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

ফিরে দেখা আ’লীগ সরকারের সফলতা : স্বাস্থ্য সেক্টর

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২ জানুয়ারি ২০২০  

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। খাদ্য ঘাটতির দেশকে খাদ্যে স্বনির্ভর করেছে। দারিদ্র্য কমিয়েছে। অর্থনীতিকে গতি দিয়েছে। দরিদ্র নিম্ন আয়ের দেশকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করেছে। অসংখ্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন ঘটিয়েছে। শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে। স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ কথা দিয়ে কথা রেখেছে।১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পাকিস্তানী আমলের নৈরাজ্য পুনরায় ফিরে আসে। এমনকি ১৯৮২ সালের ওষুধনীতিরও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ ও মূল্য সংক্রান্ত নিয়মের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো হয় ১৯৯৪ সালে বিএনপির শাসনামলে। আক্ষরিক অর্থেই স্বাস্থ্য খাতের জনবান্ধব নীতিমালা থেকে সরকার সরে আসে।

বর্তমান সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এলে স্বাস্থ্য খাত পুনরায় জনবান্ধব হতে থাকে। তিনি স্বাস্থ্যকে গণমুখী ও জনবান্ধব করার জন্য ১৯৯৮ সালে দরিদ্র মানুষের প্রতি লক্ষ্য রেখে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচীকে একত্র করার ফলে সেবা পাওয়া আরও সহজ হয়। তিনি আইপিজিএমআরকে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন এবং হাসপাতালকে উন্নততর সেবায় সজ্জিত করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালগুলোকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। ফলে বিশেষত গরিব মানুষ উন্নত সেবা পেতে থাকে। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য ১টি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরু করেন, যা ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়।বঙ্গবন্ধুকন্যা ২০০৯ সালে পুনরায় সরকারে আসার পর গরিব মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন কাজ পুনরায় চালু করেন এবং এ পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১৩ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক, যেগুলোতে ৩১টি ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে সরকারী ৩০ ও ৭৪টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে, যেগুলোর শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সরকারী ও বেসরকারী সব মেডিক্যাল কলেজের সিলেবাসকে উন্নত এবং একমুখী করেছেন।

এভাবে প্রতি বছর সারাদেশে ১০ হাজার চিকিৎসক স্বাস্থ্যসেবায় যোগ দিতে পারবেন। সব জেলা হাসপাতালকে তিনি ২৫০ শয্যা, যেগুলো ২৫০ শয্যার ছিল সেগুলোকে ৫০০ শয্যা এবং ৫০০ শয্যার হাসপাতালকে এক হাজার শয্যায় রূপান্তরিত করেছেন। কিছু সমস্যা সত্ত্বেও সরকারী হাসপাতালগুলো এখনও গরিব মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার জায়গা। বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি এসব করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি সব সরকারী হাসপাতালে রোগীপ্রতি খাবারের বরাদ্দ দ্বিগুণ করে দিয়েছেন। এ ছাড়া নতুন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৩৬টি। দেশে এই প্রথম জেলা হাসপাতালগুলোতে কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের জন্য নতুন হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া উন্নত বিশ্বের মতো নতুন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। প্রত্যন্ত গ্রামের হাসপাতাল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’ প্রকল্পে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামের রোগীরাও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত পাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। রোগীরা এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে কম যাচ্ছে এবং জটিল ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দেশেই গ্রহণ করতে শুরু করেছে। খাদ্যে ভেজাল মেশানোর যে অপতৎপরতা এদেশে ইংরেজ আমল থেকে চলে আসছে তা নিয়ন্ত্রণ যুগোপযোগী করে বিশুদ্ধ খাদ্য আইন ২০১৩ জারি হয়েছে। এখানে আগের আইনগুলোতে বর্ণিত মোলায়েম শাস্তির পরিবর্তে ভেজাল খাবারের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ জারি হয়েছে এবং ফরমালিনের আমদানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এর ফলে বাজারের সবজি, ফল, মাছ ও দুধে ফরমালিন মেশানোর প্রবণতা কমেছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। ভোক্তা অধিকার রক্ষা অধিদফতর স্থাপন করা হয়েছে।

 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ