• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

ফিরে দেখা সরকারের সফলতা : মেগা প্রজেক্ট কর্নফুলী টানেল

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২০  

বর্তমান সরকারের বিশেষ উল্লেখযোগ্য ও সাহসী পদক্ষেপগুলোর একটি হচ্ছে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ। এ টানেলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এশিয়ান হাইওয়ে হয়ে ভারত ও মিয়ানমারকে সংযুক্তির মাধ্যমে রিজিওনাল কানেক্টিভিটি তৈরি করবে। এ টানেলের নির্মিত হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে দূরুত্ব হ্রাস পাবে। এ টানেলের দুই পাশে ৬ কি.মি. অ্যাপ্রোচ রোড থাকবে। এ টানেল তৈরির ফলে দেশের পূর্বাঞ্চলে নতুন শিল্পকারাখানা গড়ে উঠবে। অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে এ টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

ভারতে সড়ক যোগাযোগে স্থলভাগে টানেল থাকলেও নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নিচে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেল নির্মাণের জন্য চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কম্পানির (সিসিসিসি) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে অনেক আগেই।

২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। এরই মধ্যে চীন অর্থায়ন করবে প্রায় চার হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বাকি টাকা সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে। কিন্তু প্রকল্প শুরু করতে দেরি হওয়ায় এবং নির্মাণের মেয়াদকাল ২০২২ সাল নির্ধারণ হওয়ায় নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাবে।

নকশা অনুযায়ী দৈর্ঘ্য হবে তিন হাজার পাঁচ মিটার বা তিন কিলোমিটারের চেয়ে সামান্য বেশি। চট্টগ্রাম নগরীর নেভাল একাডেমি পয়েন্ট দিয়ে তলদেশে ঢুকে তা বেরোবে ওপারে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কম্পানি (কাফকো) এবং চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) মাঝামাঝি স্থান দিয়ে। নদীর তলদেশে এর গভীরতা হবে ১৮ থেকে ৩১ মিটার। মোট দুটি টিউব নির্মিত হবে। এর একটি দিয়ে গাড়ি শহরপ্রান্ত থেকে প্রবেশ করবে, আরেকটি টিউব দিয়ে ওপার থেকে শহরের দিকে আসবে। টানেলের প্রতিটি টিউব চওড়ায় হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার বা ৩৫ ফুট এবং উচ্চতায় হবে ৪ দশমিক ৮ মিটার বা প্রায় ১৬ ফুট। একটি টিউবে বসানো হবে দুটি স্কেল। এর ওপর দিয়ে দুই লেনে গাড়ি চলাচল করবে। পাশে হবে একটি সার্ভিস টিউব। মাঝে ফাঁকা থাকবে ১১ মিটার। যেকোনো বড় যানবাহন দ্রুত স্বাচ্ছন্দে চলতে পারবে এই টানেল দিয়ে।

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু বিনিয়োগ ধরে রাখার মতো জমি এখন আর চট্টগ্রাম শহরে নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর ওপারকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের হাব করতে টানেলটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

টানেল নির্মাণকে কেন্দ্র করে কর্ণফুলী নদীর ওপারে বিনিয়োগ শুরু করেছে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর ওপারে আংশিক চালু রয়েছে কোরিয়ান ইপিজেড। পাশাপাশি বিচ্ছিন্নভাবে কিছু শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। টানেল নির্মাণের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সরকার আনোয়ারায় একটি ইকোনমিক জোন স্থাপন করছে। পাশাপাশি চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ ‘চায়না ইকোনমিক জোন বাস্তবায়িত হচ্ছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ