• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বাংলাদেশি ডিভাইস দিয়ে কেনা-বেচা হচ্ছে অতিরিক্ত সৌরবিদ্যুৎ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২০  

বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয়েছে অনেক আগেই। জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের বাইরে থাকা বাড়িগুলোতেই মূলত সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের প্রায় ৫০ লাখ বাড়িতে রয়েছে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা। তবে এই সৌরবিদ্যুৎ বেচা-কেনা হচ্ছে দেশের অন্তত ১৩টি গ্রামে।

সোলার প্যানেল থেকে বিভিন্ন বাড়িতে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, তা একটি ব্যাটারি স্টোরেজে জমা হয়। কিন্তু একবার সেই ব্যাটারির ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেলে সোলার প্যানেলের বাকি বিদ্যুৎ আর জমা হয় না। এর ফলে প্রচুর সৌরবিদ্যুৎ নষ্ট হয়৷

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত গ্রামের মানুষ তাদের ঘরে যে সোলার প্যানেল স্থাপন করেন, তাতে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩০ শতাংশ অব্যবহৃত থাকে। অর্থাৎ সোলার প্যানেল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ ব্যাটারির স্টোরেজে জমা হয়। কিন্তু একবার সেই ব্যাটারির ধারণক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেলে সোলার প্যানেলের বাকি বিদ্যুৎ আর জমা হয় না।

 

আর এই অব্যবহৃত বিদ্যুতের যেন অপচয় না হয়, এটা বিক্রি করে অন্যের চাহিদা যেন মেটানো যায়—এমন ভাবনা থেকে এই সৌর বিদ্যুৎ ভাগাভাগির কাজটি শুরু করে সোলশেয়ার নামে বাংলাদেশি একটি স্টার্টআপ। তাদের তৈরি সোলবক্স মিটার নামের একটি ডিভাইস দিয়েই কাজটি হচ্ছে।

সোলশেয়ারের প্রকল্প পরিচালক সালমা ইসলাম বলেন, ‘আমরা এমন এক ডিভাইস তৈরি করেছি যাতে বাড়তি বিদ্যুৎ জমা রাখা যাবে এবং এটা বিক্রি করে মানুষ অর্থও উপার্জন করতে পারবে। কেউ যদি ডিভাইসটি স্বয়ংক্রিয় মোডে রাখেন, ব্যাটারি পূর্ণ হওয়ার পর বাড়তি বিদ্যুৎ নিজে নিজেই বিক্রি হতে থাকবে।’

সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থার সঙ্গে এই ডিভাইস সংযুক্ত করলে বাড়তি বিদ্যুৎ একটি মাইক্রোগ্রিডে সরবরাহ করা যাবে। অন্য সোলশেয়ার ব্যবহারকারীরা এই গ্রিড থেকে চাইলে বাড়তি বিদ্যুৎ কিনতেও পারবেন। ফলে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে অপচয় কমানো সম্ভব হবে।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ পর্যন্ত ২৭টি মাইক্রোগ্রিড স্থাপন করে তাদের ডিভাইস ইনস্টল করেছে সোলশেয়ার। তাদের তথ্য অনুযায়ী অন্তত তিন হাজার পরিবার এই সৌর বিদ্যুৎ ভাগাভাগির সুবিধা নিচ্ছে, যাদের বেশিরভাগই কৃষক। যেহেতু বেশি টাকা খরচ হচ্ছে না, অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ বিক্রি এবং প্রয়োজনে কেনা যাচ্ছে—তাই এই ডিভাইস স্থাপনে আগ্রহ দেখাচ্ছে অনেক এলাকার মানুষ।

যেসব পরিবারের সোলার প্যানেল কেনার টাকা নেই, তারা এই ব্যবস্থায় যুক্ত হয়ে প্যানেল স্থাপন না করেই বিদ্যুৎ কিনতে পারবেন। ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা অ্যাশডেন জলবায়ু সুরক্ষায় উদ্ভাবনী সমাধানের জন্য সোলশেয়ারকে পুরষ্কার দিয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে অন্তত ২০ হাজার মাইক্রোগ্রিড পরিচালনা করার কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ