• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বিরল প্রজাতির লজ্জাবতি বানর উদ্ধার

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২০  

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এর সর্বশেষ তালিকায় লজ্জাবতি বানরকে (বেঙ্গল স্লো লরিস) সংকটাপন্ন (রেড লিস্ট) প্রজাতি হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে এমন বিরল-বিপন্ন প্রজাতির দেখা মিলেছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের পূর্ব সোনাই গ্রামের একটি আকাশমনি বাগানে। গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়রা বাগানে বানরটি দেখলে উদ্ধার করে বন বিভাগে খবর দেন। পরে উদ্ধার করা সঙ্কটাপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতি বানরের স্থান হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। তবে বানরটি সামান্য আহত হলেও চিকিৎসায় এখন মোটামুটি সুস্থ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাঁতমারা ইউনিয়নে একটি আকাশমনি বাগানে এলাকার তরুণরা বানরটি দেখে উদ্ধার করে। গত বুধবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে লজ্জাবতী বানরটি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়।  

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘একটি প্রাপ্তবয়স্ক লজ্জাবতি বানর আনা হয়েছে। বয়স তিন বছরের মত হবে। এটির দৈর্ঘ্য ১৮ ইঞ্চি ও ওজন সোয়া এক কেজির মত। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আগে থেকে আরেকটি পুরুষ লজ্জাবতী বানর আছে।’

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণি আইনে সংরক্ষিত লজ্জাবতী বানর আইইউসিএনের তালিকায় অনুসারে সংকটাপন্ন প্রজাতি। এরা নিশাচর। দিনের বেলা লোকালয়ে আসে না। এরা বাঁশ ঝাড়ে বেশি থাকে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি বিরল ও বিপন্ন বন্যপ্রাণি। দেশের চারটি বনাঞ্চলের এগুলোর দেখা মিলে। এর মধ্যে আছে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল ফটিকছড়ির হাজারিখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, মৌলভি বাজার লাউয়া ছড়া জাতীয় উদ্যান, হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও হবিগঞ্জের রেমা-কেলেঙ্গা বন্যাপ্রাণী অভয়ারণ্যে। মনে হয় এটি ফটিকছড়ির হাজারিখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে খাবার না পেয়ে লোকালয়ে আসছে। কারণ ওই বনে ইতোমধ্যে বেশ কিছু ফলজ গাছ কাটা হয়েছে। কার্যত তারা কাঠাল, জাম, ডুমুর, চাপালি ফলজাতীয় গাছের মধ্যেই বাস করে।’    

জানা যায়, লজ্জাবতী ছোট আকারের বানর। এটি ‘বেঙ্গল স্লো লরিস’ নামে পরিচিত। স্তন্যপায়ী শ্রেণির লরিসিডি পরিবারের সদস্য এই বানর বাংলাদেশের বন্যপ্রাণি আইনের তফসিল-১ অনুসারে সংরক্ষিত প্রাণি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus bengalensis। নিশাচর এই বানর দিনের বেলায় গাছের উঁচু ডালে নিজেদের আড়াল করে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে বলে জানা যায়।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ