• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

মাটি ফেলে পাকা রাস্তা কাচা,দুর্ভোগে জনজীবন

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২০  

মুজিববর্ষে যখন সরকারি সেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছ দিতে সরকার ও কর্মকর্তারা বদ্ধপরিকর, ঠিক সেই সময় গ্রামের হতদরিদ্র সাধারণ মানুষ মাটি ব্যবসায়ীদের কারণে হাত পা ভেঙ্গে জখম হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।

বছরের পর বছর ধরে কতিপয় মাটি ব্যবসায়ী পাকা রাস্তাগুলো মাটি ফেলে কাচায় পরিণত করলেও তাদেরকে প্রতিরোধে কেউ নেই এবং তাদের প্রতি আইন প্রয়োগ হয় না।

ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল জরিমানা করার বিধান থাকলেও ঝিনাইদহের প্রশাসন রয়েছে নিয়মিত মিটিং সভা সমাবেশ নিয়ে। দিবস পালনের ফাটা বাঁশে আটকে গেছে সব কার্যক্রম। অভিযোগ নিয়ে তাদের দরজায় পৌছানো মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ তারা অফিসে থাকেন না।

এ কাজ সে কাজ নিয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দিনব্যাপী ব্যাস্ত থাকায় যারা ট্যাক্স দিয়ে বেতন পেতে সহায়তা করছেন তাদের সমস্যা নিরসনের সুযোগই বা কোথায় ? অভিযোগ পাওয়া গেছে ঝিনাইদহের পশ্চিমাঞ্চলে ৭/৮ জন মাটি ব্যবসায়ীর কারণে এলজিইডি, সওজ ও জেলা পরিষদের কোটি কোটি টাকার রাস্তা মাটি ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে। রাস্তার উপর মাটি ফেলে তা বৃষ্টির কাদায় আবার কাচা রাস্তার মতো দশা হচ্ছে। অনেক সময় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। মোটরসাইকেল আরোহীরা চলাচল করতে পারছেন না।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, পশ্চিমের সাধুহাটী, মধুহাটী, সাগান্না, হলিধানী ও কুমড়োবাড়িয়া ইউনিয়নে পুকুর খনন করে ইটভাটায় বালি ও মাটি বিক্রির নাটেরগুরু হচ্ছে ৬/৭ জন লোভী মানুষ। এরা হলেন হলিধানীর কোলা গ্রামের জসিম, রামচন্দ্রপুর গ্রামের ওসমান, বাথপুকুর গ্রামের আলী আকবর, আইয়ুব আলী, দিপংকর, নজরুল ইসলাম ও ঝিনাইদহের রয়েল। এদের মাটি টানা গাড়ি হলিধানী থেকে বাজারগোপালপুর,রাঙ্গিয়ারপোতা, মামুনশিয়া, বাজারগোপালপুর থেকে ডাকবাংলা ত্রিমোহনী ভায়া চুলকানির (জিয়ানগর) বাজার, নারায়নপুর ত্রীমোহনী থেকে বাজারগোপালপুর, বাথপুকুর এবং ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া থেকে হরিণাকুন্ডু সড়কটি চলাচলের অযোগ্য করে তুলেছে।

হলিধানীর মুল্লা বাড়ির পুকুর থেকে মাটি তুলে বিক্রি করার ফলে ভেদোর বাড়ি থেকে হলিধানী ও বাজারগোপালপুর অভিমুখের রাস্তা দিয়ে মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রলি থেকে মাটি পরে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে রাস্তা। কোলা গ্রামের জসিম ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের ওসমান প্রতিদিন রাস্তা পরিস্কার করার অঙ্গীকার করলেও তারা তা পালন করেন নি।

জোহান ড্রিম ভ্যালির সামনেও কাদা পানিময় পরিবেশ থেকে বাঁচতে স্থানীয় ইটভাটার মালিক রাস্তায় বালু ফেলতে দেখা গেছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বছরের পর বছর ধরে এই বেআইনী কাজ কারবার চলে আসলেও আইন প্রয়োগের মাত্রা খুবই কম বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে দিনকে দিন এ সব মাটি ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে হলিধানী এলাকার মাটি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন ও ওসমান আলী পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের ভাষ্য তারা মাটি নয় বালি বিক্রি করেন। এই ব্যবসার সাথে যুক্ত উসমান বলছেন তারা রাস্তা পরিস্কার করে দিচ্ছেন।

এলাকাবাসি শাহাজান মিয়া জানান, তিনি লেবার দিয়ে রাস্তা পরিস্কার করে দেন। এখন আর কোন সমস্যা। তিনি বিপজ্জনক রাস্তা তৈরীর জন্য অপর মাটি ব্যবসায়ী জসিমকে দোষারোপ করেন। কিন্তু সরেজমিন গিয়ে সত্যতা মেলেনি। রবং পাকা রাস্তা কাচায় পরিণত হয়ে আছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বদরুদ্দোজা শুভ গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, বিষয়টি আমার নলেজে আছে। এ বিষয়ে আমি মিটিংয়ে বসেছি, কি করা যায়। যারা রাস্তা নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ