শাওয়ালের ছয় রোজার গুরুত্ব
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২০
ইসলাম এমন এক শান্তি প্রিয় জীবন ব্যবস্থা। যার মাঝে কোনো ধরণের কঠোরতার শিক্ষা পাওয়া যায় না। মুসলমান হিসেবে আমরা সৌভাগ্যবান যে, আমরা সেই মহান রাসুলের উম্মত। যিনি রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবে বিশ্ববাসীর জন্য প্রেরিত হয়েছেন। মুসলিম উম্মাহর জন্য পরিপূর্ণ শরিয়ত নিয়ে এসেছেন এবং সেই শিক্ষা নিয়ে এসেছেন যা বান্দাকে আল্লাহর সাথে মিলিত করে।
উম্মাতে মুহাম্মাদিকে তিনি সুমহান আধ্যাত্মিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত দেখতে চেয়েছেন। মানুষের কীভাবে পাপমুক্ত থাকতে পারবে এবং কীভাবে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারবে, এ সব বিষয়ের প্রতি তিনি বিভিন্নভাবে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন।
আল্লাহ তাআলার রহমতে মহামারি করোনাকালেও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ পবিত্র মাহে রমজানের দিনগুলোতে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে অতিবাহিত করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। রমজান শুরুর আগে ভেবেছিলাম একদিকে মহামারি করোনা আর অপর দিকে এতো বড় দিন এবং গরমে কীভাবে রোজাগুলো রাখবো? হয়তো বেশ কষ্ট হবে।
অথচ যে দিন থেকে রমজানের রোজা শুরু হলো আল্লাহ পাক প্রকৃতির মাঝে যেন জান্নাতি বাতাস বইয়ে দিলেন আর প্রতিটি মুসলমান অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে রোজার দিনগুলো ইবাদতের মধ্য দিয়ে সুন্দর ও আরামের সঙ্গে কাটিয়েছেন।
আমরা যারা রমজানের সবগুলো রোজা কেবল আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির খাতিরে রেখেছি তারা অবশ্যই বড় সৌভাগ্যবান। এখন রমজানের বিভিন্ন সৎকর্মগুলো বছরব্যাপী জীবিত রাখতে হবে। আমরা যদি বছরের প্রতিটি দিন আল্লাহ পাকের আদেশ-নিষেধ মেনে চলে জীবন অতিবাহিত করি তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন।
আমরা কেউ জানি না, আগামী রমজান লাভ করার সৌভাগ্য আমাদের হবে কিনা। রমজানের এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমরা তাকওয়া, অন্তরের পরহেজগারি, হৃদয়ের পরিচ্ছন্নতা এবং আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি যাবতীয় গোনাহসমূহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে আর আল্লাহ ও রাসুলের শিক্ষা মোতাবেক জীবন পরিচালিত করতে।
কিন্তু রমজানের রোজার দিনগুলো শেষ হতে না হতেই আমরা দেখতে পাই আমাদের স্বভাব-চরিত্র পূর্বের ন্যায় হয়ে যাচ্ছে। রোজার দিনগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার প্রতি যেমন আকর্ষণ ছিল রমজান শেষ হতে না হতেই নামাজের প্রতি কেমন যেন উদাসিনতা বেড়ে যাচ্ছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকভাবে আদায় করার প্রতি দেখা দিচ্ছে আলসতা, কথা বলার ক্ষেত্রেও আবার মিথ্যা বলা শুরু করে দিয়েছি, নানান খারাপ কাজে আবার যোগ দিচ্ছি।
রমজানের পূণ্যকর্মগুলো জারি রাখি
এক কথায় বলা যায় রমজান শেষ হতেই সব ধরণের অপকর্ম আবার শুরু হয়ে যায়। আমরা যদি মনে করি রমজানের রোজাতো রাখলামই এখন আর ধর্ম-কর্ম ঠিকভাবে পালন করে কি করবো আবার আগামী বছর রোজা রেখে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব।এমন চিন্তা-ভাবনা যদি কারো মনে জাগ্রত হয় তাহলে সে মারাত্মক ভুল করবে।
রোজার দিনগুলো হচ্ছে প্রশিক্ষণের দিন, এই প্রশিক্ষণ মোতাবেক বছরের এগার মাস অতিবাহিত করলেই আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভ সম্ভব হবে। আর না হয় এক মাস রোজা রাখার পর আবার যদি খারাপ কাজে জড়িয়ে যাই তাহলে এই রোজা আমাদের জীবনের কোনো পরিবর্তন বয়ে আনবে না।
আমাদের রোজা তখনই আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় হবে যখন আমরা রমজানের পর বাকি এগার মাস রমজানের মতই নিজের জীবন অতিবাহিত করব। রমজানে যে বিষয়গুলো প্রশিক্ষণ নিয়েছি তা বছরজুড়ে কাজে লাগাতে হবে, তবেই আমাদের রোজা আল্লাহর দরাবারে গ্রহণীয়তার মর্যাদা পাবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘(প্রতিদিন) পাঁচ বেলা নামাজ, এক জুমআ থেকে পরবর্তী জুমআ এবং এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান পর্যন্ত মধ্যবর্তী পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়ে যায়। শর্ত হলো, মানুষ যদি বড় বড় গোনাহ এড়িয়ে চলে।’ (মুসলিম)
আমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই দিক-নির্দেশনা, যা শুধু পাপ থেকেই মুক্ত রাখে না বরং মুক্তি ও পরিত্রাণের ব্যবস্থা হয় এবং আধ্যাত্মিকতা লাভ হয়। যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে, এক নামাজের পর পরবর্তী নামাজের কথা ভাববে, এটি হতেই পারে না যে, সে কোনো ধরণের পাপে লিপ্ত হবে বা অন্যের উপর জুলুম করা আরম্ভ করবে। আর কেউ যদি এমনটি করে তাহলে তার নামাজ, নামাজ নয় বরং সে সবচেয়ে বড় পাপে লিপ্ত।
শাওয়াল রোজা কেন রাখব
রমজান মাসের রোজার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখার গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে। হাদিসে এসেছে-
- হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে এবং পরবর্তীতে (ঈদের দিন বাদ দিয়ে) শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখে সেক্ষেত্রে সে যেন গোটা বছরই রোজা রাখলো।’ (মুসলিম)
- হজরত ছাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা প্রতিটি নেকি ১০ গুণ বৃদ্ধি করেন। সুতরাং রমজানের এক মাস রোজা রাখার দ্বারা ১০ মাস রোজা রাখার সাওয়াব হবে এবং ঈদুল ফিতরের পর ছয়টি রোজা রাখার দ্বারা পূর্ণ এক বছর রোজা রাখার সাওয়াব হবে।’ (ইমাম নাসাঈ ফিস সুনানিল কুবরা)
- হজরত ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখল, এরপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় গোনাহমুক্ত হয়ে গেল।’ (আল মুজামুল আওসাত)
- হজরত আবু আইয়ুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, এরপর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখল সে যেন এক যুগ (পূর্ণ বছর) রোজা রাখল।’ (আবু দাউদ)
এসব হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারলাম শাওয়াল মাসের রোজার গুরুত্ব কত ব্যাপক। শুধু রোজা রাখলেই হবে না বরং প্রকৃত অর্থে আল্লাহর সন্তুষ্টির খাতিরে রোজা রাখতে হবে।
নামাজ আর রোজার সমন্বয়ে মানুষের মাঝে আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তা এভাবে যে, নামাজ আত্মাকে পবিত্র করে এবং রোজা হৃদয়কে আলোকিত করে। ফলশ্রুতিতে নিষ্ঠাবান ব্যক্তি রোজা দ্বারা আধ্যাত্মিকতার এক নতুন রাস্তায় পরিচালিত হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির ছায়াতলে চলে আসে। কুরআনের ঘোষণাও এমনি যে, ‘রোজা তোমাদের মাঝে তাকওয়া অর্থাৎ খোদা-ভীতি সৃষ্টি করবে।’
এ তাকওয়া কিভাবে সৃষ্টি হবে? বস্তুতঃ রোজা এমন ইবাদত যা মানুষের প্রতিটি ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করে। যদি ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ না রেখে কেউ রোজা রাখে তবে তা রোজা নয় বরং অন্য কিছু। আল্লাহর ভয় এভাবেই সৃষ্টি হয়।
মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের মন-মেজাজ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আল্লাহর ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেয়। ফলে ধীরে ধীরে তার অবাধ্য আত্মা নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ে। ঐ সব কর্ম থেকে সে দূরে সরে পরে যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অসন্তুষ্টির কারণ হয়।
আমাদের সবার উচিত, রমজানের দিনগুলো যেভাবে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়েছি বছরের বাকী দিনগুলোও যেন সেভাবেই কাটাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে শাওয়াল মাসের ৬টি রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
- ৫০০ টাকায় জেলা প্রশাসনে চাকরি মিলল ৬ ইউপি সচিবের
- আ.লীগের সম্মেলন ও সব পর্যায়ের কমিটি গঠন বন্ধ: কাদের
- চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.৩, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু
- মেঘনায় হাইমচরে যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন, আহত ৮
- বিদেশিদের সাহায্যে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে বিএনপি: কাদের
- তাপপ্রবাহ: ৭ দিন বন্ধ স্কুল-কলেজ
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৫ মামলা, ১০ লাখ টাকা জরিমানা
- মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের ই-পাসপোর্ট সেবা শুরু
- দেশব্যাপী ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
- চাষাবাদ সহজ করতে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াচ্ছে সরকার : কৃষিমন্ত্রী
- কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ব্যয় নেমেছে অর্ধেকে
- এবার ঈদে দেশীয় পর্যটনে আয় ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
- বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী বাড়ছে যুক্ত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস ভাতা
- বন্ধুত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ রাশিয়া-বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি
- জাতিসংঘে উঠল পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে অর্জিত অগ্রগতির কথা
- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
- এবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে
- রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে যাচ্ছে এনবিআর
- বাংলাদেশে দূতাবাস খুলছে গ্রিস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- বঙ্গবন্ধু টানেলে জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফ
- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছেন আরও ৪ লাখ মানুষ
- ৫০ বছরে দেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো
- চালের বস্তায় জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে
- প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক
- বাগেরহাটে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর অস্বীকার ইরানের
- ভোট দিতে একসঙ্গে ঢালিউডের ‘তিন কন্যা’, জানালেন প্রত্যাশা
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
- বিশ্বে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে কেন
- জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
- ডাকাত ধরে কাঁধে করে নিয়ে এলেন এএসআই
- এশার নামাজ না পড়ে তারাবি পড়া যাবে?
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হটকারি সিদ্ধান্ত: হাছান মাহমুদ
- গোপালগঞ্জে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন এসপ
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশে
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে মুস্তাফিজকে!
- নূহ (আ.) এর নৌকা পাওয়া গেলো আরারাত পর্বতে!
- অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন যেভাবে
- শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের একান্তবৈঠকের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের
- আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- ভারত থেকে ৩শ’ টন পেঁয়াজ আমদানি
- আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর
- কত দিতে হলো মুক্তিপণ?
- মতুয়া আদর্শ বাস্তবায়নে মত বিনিময় সভা
- মুকসুদপুরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
- মুকসুদপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধাক্কা, প্রাণ গেল দুই বাইকারের
- ঢাকায় মিলছে উটের দুধের চা