• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, গৌরবদীপ্ত বার্তা দিতে চায় আওয়ামী লীগ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

করোনার মেঘ কাটিয়ে জাতীয় জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘ক্ষুধা-দারিদ্র্য-শোষণ-বঞ্চনামুক্ত সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও জাতির পিতার লালিত স্বপ্নপূরণের বার্তা দিতে চায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকল নাগরিকের জন্য শান্তি ও স্বস্তির জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুবর্ণজয়ন্তীর গৌরবদ্বীপ্ত অঙ্গীকার ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির আলোকে জাতির কাছে ছড়িয়ে দিতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

দলের নেতারা জানান, জাতীয় কমিটির কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হবে। দলীয়ভাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এখনও কোনো কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়নি। চলতি মাসে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনসহ সাংগনিক বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি সুবর্ণ স্মরণিকা প্রকাশনা বের করা হবে। নেত্রী ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের দেশে ইতোমধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের টিকা প্রদান শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনো আমাদের দেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির হার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাই সবার আগে আমরা জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটি মাথায় রেখে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কর্মসূচিতে কোনো চমক থাকবে না, তবে কর্মসূচিগুলো জাতীয় ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আলোকে তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এরইমধ্যে আমাদের দলের পক্ষ থেকে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য তৃণমূলে চিঠিও ইস্যু করা হয়েছে। চিঠিতে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালনের জন্য উপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, প্রার্থনা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, র‌্যালি, দুস্থ ও এতিমদের মাঝে খাবার-মিষ্টি বিতরণ, সাজসজ্জা-আলোকসজ্জা নানা কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে সভা-সমাবেশ, প্রতিনিধি সভা ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাংলাদেশ আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নরেন্দ্র মোদির সফরের বিষয় চূড়ান্ত করতে আগামী ৪ মার্চ দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম সলিহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগামী মার্চে ঢাকা সফর করবেন বলে জানান মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহিদ। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ঢাকা সফরে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান।

তিনি গত ২ ডিসেম্বর তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে পরে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে অংশ নিতে ঢাকায় আসবেন বলেও জানা গেছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মুজিববর্ষে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর উদযাপন কর্মসূচিগুলো জাঁকজমকপূর্ণ উদযাপন করা যায়নি। তাই মুজিববর্ষের মেয়াদ প্রায় ৯ মাস বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এতে বলা হয়েছে, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে সরকার ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ সময়কে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে। মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিগুলো কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ে যথযাথভাবে করা সম্ভব হয়নি। সে কারণে সরকার মুজিববর্ষের সময়কাল ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত ঘোষণা করা হলো।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ পালনের উদ্যোগ নেয় সরকার। সরকারের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও মুজিববর্ষ উদযাপনকে তাৎপর্যপূর্ণ করতে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু গত বছরের মার্চ মাসে করোনা মহামারির সংকটের কারণে গত বছর ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দেশে সাধারণ ছুটি পালিত হয়। তবে জনসমাগম এড়িয়ে ভার্চুয়ালি ও সীমিত পরিসরে মুজিববর্ষে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করা হয়।

১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহেনা ও দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তার আগে ২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় মুজিববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ কয়েকজন বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকার ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে জনসমাগমপূর্ণ মুজিববর্ষের সকল কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

টানা মেয়াদে রয়েছে সরকার পরিচালনার রয়েছে আওয়ামী লীগ। সাত দশকের লড়াই-সংগ্রামের অভিযাত্রায় আওয়ামী লীগ বাংলার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। দলের নেতারা জানান, জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ। শক্তির উৎস সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ এই পথচলার পরিক্রমায় দেশের সকল গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল আন্দোলনের সাহসী মিছিলের সারথী আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ হচ্ছে সমাজের অগ্রসর চিন্তা-চেতনা, আদর্শ ও লক্ষ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রসেনিক। মৌলিক লক্ষ্যসমূহ অপরিবর্তিত থাকলেও সময়ের বিবর্তনে দলের চিন্তাধারা, কর্মসূচি, কৌশল এবং গঠনতন্ত্রও যুগোপযোগী করে এগিয়ে যাবে, এই বার্তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতির সামনে ছড়িয়ে দেয়া হবে। আর স্বাধীনতার সুবর্ণ শপথে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা-রূপরেখায় নব বার্তা দেবেন আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

নেতারা আরও জানান, ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ২০১৯’র অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিল কর্তৃক সংশোধিত ও অনুমোদিত ঘোষণাপত্রের ৪(৫) এবং ৪(৬) ধারায় মুজিববর্ষ পালনে আমাদের অঙ্গীকার এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন’র অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছি। আমাদের দলের ঘোষণাপত্রে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা আছে।

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অঙ্গীকারে বলা আছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে মূল তাৎপর্য হলো মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল আকাঙ্খা ক্ষুধা-দারিদ্র্য-শোষণ-বঞ্চনামুক্ত সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা’ বিনির্মাণ। সাম্য, মানবিক মর্যাদাবোধ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতি সামনে রেখে হাজার ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশের আপামর জনসাধারণ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এর মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির রাজনৈতিক মুক্তি ঘটলেও হাজার ৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর এদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তির পথে ব্যাঘাত ঘটে।

‘বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্বে সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অভিযাত্রায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারাবদ্ধ। ক্ষুধা নিবারণে, দারিদ্র্য হ্রাসে, শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে, গড় আয়ুতে, কৃষি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্য আজ বিশ্ব পরিমণ্ডলে স্বীকৃত। তবে এখনও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অনেক প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনা তার মেধা প্রজ্ঞা নিষ্ঠা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের দ্বারা সকল বাধা-বিপত্তি সন্ত্রাস দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করে দেশকে অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তার নেতৃত্বে রূপকল্প ২০২১ সেই ভিত গড়ে দিয়েছে।

রূপকল্প-২০২১ এর লক্ষণসমূহ পূরণে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এরইমধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য সমূহ বহুলাংশে অর্জিত হওয়ায় জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৮.১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো বিনিনির্মাণ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন এবং বেসরকারি খাতের বিকাশ উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হওয়ায় দেশ আজ সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে,প্রশস্ত হয়েছে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ। জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের পাশাপাশি উচ্চতর মানবিক দর্শনেও বিশ্বাসী। তারই ধারাবাহিকতা রক্ষায় তিনি নতুন পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প-২০৪১ ঘোষণা করেছেন। এই রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও উন্নত আবাসভূমি। বাঙালি হবে সারা বিশ্বের মাঝে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত জাতি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন কে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বহুমুখী ও আড়ম্বরপূর্ণ কর্মযজ্ঞ নির্ধারণ করা হবে। এ বছরটি বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাই আমরা বৃহত্তর পরিসরে জাতীয় সংস্কৃতির সুমহান ঐতিহ্য ও লোক সংস্কৃতির আলোকে নানা আঙ্গিকে, বর্ণবৈচিত্র-বিভায় উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সকলকে সংঘবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুমহান আদর্শের আলোয় আলোকিত হয়ে জাতি-ধর্ম-গোত্র-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য শান্তি ও স্বস্তির জীবন বিধান নিশ্চিত করাই হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গৌরবদ্বীপ্ত অঙ্গীকার।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাননীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনিমার্ণে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরে থেকে আমরা আমাদের নেত্রীর নেতৃত্বে রূপকল্প-২০২১’এর লক্ষ্য পূরণে প্রশংসনীয় সাফল্য পেয়েছি। ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন এবং বেসরকারি খাতের বিকাশ উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষমতার কারণে দেশ আজ সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। এ ধারাবাহিকতা রক্ষায় নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প-২০৪১ ঘোষণা করেছেন। এই রূপকল্প বাস্তবায়ন হলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও উন্নত আবাসভূমি। প্রধানমন্ত্রী ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা শুরু করেছেন। আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে এ বছরটি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনিমার্ণের লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেছি, আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই, এ বার্তাটিই জাতির মাঝে স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীতে ছড়িয়ে দিতে চাই।’

বি এম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অর্জনের পিছনে যেসকল দেশের অসামান্য অবদান ও সহযোগিতা রয়েছেন, সে সব দেশের সরকার প্রধানরা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উদযাপনকে অর্থবহ ও তাৎপর্যময় করবেন বলে আমরা আশা করছি।’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ব্যাপারে আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর পাশাপাশি আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো। এ লক্ষ্যে আমরা কমিটিও করেছি। কিন্তু করোনার কারণে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী জাঁকজমকভাবে পালন করতে পারিনি। আমাদের জাতীয় কমিটি আছে, জাতীয় কমিটির কর্মসূচি সাথে সমন্বয় করে দলীয়ভাবে কর্মসূচি উদযাপন করা হবে। আর আওয়ামী লীগ কীভাবে উদযাপন করবে, সে বিষয়ে শিগগিরই আমাদের ওয়ার্কিং কমিটির একটা মিটিং হবে; সে মিটিংয়ে ফাইনালি অ্যাপ্রুভাল (কর্মসূচি) হবে।’

সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী ফারুক খান আরও জানান, আমি যতটুকু জানি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসবেন, তার্কি (তুরস্কের) প্রধানমন্ত্রী আসবেন এবং আরও দুই একটি দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানরা আসবেন। আরও অনেকের আসার কথা থাকলেও করোনার কারণে আসতে পারছেন না। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তিতে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে জাতীয় আকাঙ্ক্ষার যে অর্থবহ বার্তা, তা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ছড়িয়ে চাই।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ