• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অনুমোদন পেলো ধানের নতুন তিনটি জাত

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২  

জাতীয় বীজবোর্ডের অনুমোদন পেল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত আরো তিনটি নতুন ধানের জাত। গতকাল সোমবার  জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৮তম সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

ব্রি উদ্ভাবিত নতুন তিনটি জাতের মধ্যে ব্রি ধান ১০৩ আমন মৌসুম, ব্রি ধান ১০৪ ও ব্রি হাইব্রিড ধান ৮ বোরো মৌসুমের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ধানের জাতগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ব্রি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান ১০৩ আমন মৌসুমের একটি জাত। জাতটির কৌলিক সারি BR (Bio) 8961- AC26-16। ব্রি ধান ২৯-এর সঙ্গে FL378 এর সংকরায়ণ করা এবং পরবর্তী সময়ে F1 generation-এ অ্যান্থার কালচার পদ্ধতি (জীবপ্রযুক্তি) ব্যবহার করে এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। এ জাতটির পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১২৫ সেমি। ডিগ পাতা খাড়া। দানা লম্বা ও চিকন। ১০০০ পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৩.৭ গ্রাম। ধানে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৪%। এ জাতটির গড় জীবনকাল ১৩২ দিন। ধানের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৬.২ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে জাতটি প্রতি হেক্টরে ৮.০ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

ব্রি ধান ১০৪-এর কৌলিক সারি বিআর ৮৮৬২-২৯-১-৫-১-৩। কৌলিক সারিটি ব্রিতে ২০০৭ সালে আইআর ৭৪০৫২-২১৭-৩-৩-এর সঙ্গে বিআর ৭১৫০-১১-৭-৪-২-১৬- এর সংকরায়ণ করে এবং পরবর্তীকালে বংশানুক্রম সিলেকশনের (Pedigree Selection) মাধ্যমে উদ্ভাবিত হয়। ব্রি গাজীপুরের গবেষণা মাঠে হোমোজাইগাস কৌলিক সারিটি নির্বাচন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত হোমোজাইগাস কৌলিক সারিটি পাঁচ বছর ফলন পরীক্ষার পর ২০১৯ সালে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর গবেষণা মাঠে ও ২০২০ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। 

২০২১ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি কর্তৃক স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় বেশি ফলন দিয়েছে। (পিভিটি) সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দল কর্তৃক সুপারিশের পর জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৮ তম সভায় ব্রি ধান ১০৪ বোরো মৌসুমের উন্নত গুণাগুণসম্পন্ন জাত হিসেবে ছাড়করণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্রি ধান ১০৪-এ আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা, পাতার রং সবুজ। পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ৯২ সেন্টিমিটার। জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৭ দিন। ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২১.৫ গ্রাম। এ জাতের ধান বাসমতি টাইপের তীব্র সুগন্ধিযুক্ত। এ ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৯.২ ভাগ। এছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮.৯ ভাগ এবং ভাত ঝরঝরে।

এ জাতের জীবনকাল ব্রি ধান ৫০-এর প্রায় সমান। ধানের গুণগত মান ভালো অর্থাৎ চালের আকার আকৃতি অতিরিক্ত লম্বা চিকন (Extra Long Slender) (৭.৫ মি.মি. লম্বা) এবং রং সাদা। প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় ১০টি অঞ্চলে ব্রি ধান৫০-এর চেয়ে ব্রি ধান ১০৪-এর ফলন প্রায় ১১.৩৩% বেশি। পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শীর্ষ ছয় স্থানে। এটি ব্রি ধান ৫০-এর চেয়ে ১৭.৯৪% বেশি ফলন দিয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ