প্রয়াত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকার
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০
![](https://www.dainikgopalganj.com/media/imgAll/2018November/115-2002211152.jpg)
একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। তিনি ওই সময় ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। মৃত্যুর আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের স্মৃতিচারণ করে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। অপ্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায় সহজ ছিল না। অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। কেননা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাষার ব্যাপারটা খুবই স্পর্শকাতর।’
তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিকে যেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হয়, সেই চেষ্টা প্রথম শুরু করেন কানাডায় একদল প্রবাসী বাংলাদেশি। তারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি দল গঠন করেন। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা দেয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘ সদর দফতরে আবেদন করে দলটি। জাতিসংঘ ইস্যুটি ইউনেস্কোতে তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়। কারণ ইউনেস্কো ভাষার দিক দেখাশোনা করে থাকে। ওই গ্রুপটির প্রেসিডেন্ট প্রয়াত রফিকুল ইসলাম প্যারিসে অবস্থিত ইউনেস্কো সদর দফতরে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেন। কিন্তু জাতিসংঘের মতোই ইউনেস্কোও একটি আন্তঃসরকার সংস্থা। তাই এই সংস্থা কোনো বেসরকারি গ্রুপ কিংবা ব্যক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে না। তাই তারা ইউনেস্কোর কোনো সদস্য দেশের মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাঠাতে বলে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘প্রয়াত রফিকুল ইসলাম আমার সঙ্গে এবং ইউনেস্কোতে কর্মরত এক বাংলাদেশি কর্মকর্তা তোজাম্মেল (টনি) হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা উভয়েই তাকে উৎসাহিত করি এবং কিভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে সে বিষয়ে তাদের পরামর্শ দেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোরালো সিদ্ধান্ত নেন এবং তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবটি বাংলাদেশ সরকারের অফিসিয়াল প্রস্তাব হিসেবে ইউনেস্কোতে জমা দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দেন। সাধারণ সম্মেলনের মাত্র দু’দিন আগে আমরা এই নির্দেশ পাই।’ কিভাবে প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর অনুমোদন লাভ করল তা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবের ব্যাপারে ইউনেস্কো সদর দফতর আপত্তি উত্থাপন করে। দুই কারণে এই আপত্তি ছিল। প্রথমত, প্রস্তাবের প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে তার পেছনে আর্থিক সংশ্লিষ্টতার প্রয়োজন হবে। সেই অর্থ কিভাবে আসবে এমন প্রশ্ন তুলে ইউনেস্কো সদর দফতর আপত্তি জানায়। ইউনেস্কো সদর দফতর খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলে। তারপর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে পেশ করার আগে লিঙ্গুইস্টিক প্লুরালিজম অ্যান্ড মাল্টিলিঙ্গুয়াল এডুকেশন বিষয়ক অ্যাডভাইজরি কমিটির মাধ্যমে ইউনেস্কো নির্বাহী বোর্ডে জমা দিতে বলা হয়। ইউনেস্কোর আর্থিক সংকটের কারণে এই প্রস্তাবের আর্থিক সংশ্লেষের বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ করার কথাও বলা হয়।’
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমি ইউনেস্কোর সদর দফতরের অবস্থান গ্রহণ করিনি। টনি হককে সঙ্গে নিয়ে ইউনেস্কোর উপ-মহাপরিচালক কলিন পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করি। আমরা কলিন পাওয়ারকে বোঝাই যে, আমাদের খসড়া প্রস্তাবের উদ্দেশ্য হল- সব মাতৃভাষার সুরক্ষা ও সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা। সদর দফতরের প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে প্রক্রিয়া সম্পাদন করতেই অনেক ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বাজেটের ব্যাপারে আমরা বলেছি যে, সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিজেদের উদ্যোগেই জাতীয়ভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে। ফলে এ প্রস্তাব পাস হলে তার জন্য ইউনেস্কোর আলাদা কোনো বাজেটের প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক কলিন পাওয়ার এই ইস্যুর গুরুত্বের ব্যাপারে পরিপূর্ণ অবহিত ছিলেন। কারণ, তিনি জানতেন বিশ্বে সাত হাজারের বেশি ভাষা রয়েছে। তার মধ্যে বহুল প্রচলিত ভাষার সংখ্যা হাতেগোনা। ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক দাফতরিক কাজের কারণে এসব ভাষা ক্রমেই বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট ভাষাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। কলিন পাওয়ার সদর দফতরের আপত্তি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের প্রস্তাবটি সাধারণ সম্মেলনের দ্বিতীয় কমিশনে পেশ করার নির্দেশ দেন।
মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমি কমিশনের চেয়ারম্যান স্লোভাকিয়ার নাগরিক জে বোলমারের সঙ্গে দেখা করি এবং খসড়া প্রস্তাবটি অনুমোদনের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানাই।’
তিনি বলেন, প্রস্তাব পাশের প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল ইউনেস্কোর ১৮৫ সদস্যের সমর্থন আদায় করা। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করার সময় ছিল না। ফলে লবিং করার সব কাজ প্যারিসেই করতে হয়েছিল। ইউনেস্কো প্রতিনিধি দলে পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা অন্তর্ভুক্ত থাকেন বিধায় তারা অনেক স্বাধীনতা ভোগ করেন। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের প্রস্তাবে কো-স্পন্সর হয় ২৮টি দেশ। এসব দেশ হল- ভারত, পাকিস্তান, ইরান, শ্রীলংকা, সৌদি আরব, ইতালি, মিসর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আইভরি কোস্ট, রাশিয়া, ফিলিপাইন, ওমান, সুরিনাম, স্লোভাকিয়া, হন্ডুরাস, কমরস, গাম্বিয়া, চিলি, ডমিনিকান রিপাবলিক, পাপুয়া নিউ গিনি, প্যারাগুয়ে, বাহামা, বেনিন, বেলারুশ, ভানুতো, মাইক্রোনেশিয়া এবং লিথিওনিয়া। প্রথমে স্পন্সরে থাকলেও পরে পাকিস্তান তাদের স্পন্সরশিপ প্রত্যাহার করে। ইউরোপের বড় দেশগুলোর মধ্যে শুধু ইতালি কো-স্পন্সর হলেও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগাল মৌখিকভাবে প্রস্তাব সমর্থন করেছিল। স্পন্সর দেশগুলোর কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছিল যাতে বৃহত্তর আঙ্গিকে প্রস্তাবটি তোলা হয়। এতে বেশি দেশের সমর্থন মিলবে। কারণ ভাষার বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় ছিল, একক কোনো দেশ যদি প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই কিংবা লিঙ্গুইস্টিক কমিটির মাধ্যমে ইউনেস্কো বোর্ডে পাঠাতে প্রস্তাব করত তবে এই প্রস্তাব পাস করানো কঠিন হয়ে পড়ত। এ কারণে তিনি (সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী) ১২ নভেম্বর প্রস্তাবটি দ্বিতীয় কমিশনে উত্থাপন করেন। প্রস্তাবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, ভাষা দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ইউনেস্কোর দায়িত্ব হচ্ছে ভাষার সংরক্ষণ করা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ভাষার জন্য মানুষ আত্মত্যাগ করেন। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটা বিরল ঘটনা। এরপর পর্দার আড়ালে অনেক কাজ হয়েছে। কো-স্পন্সররা জোরালো সমর্থন দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ইউনেস্কোর মহাপরিচালক কচিহিরো মাতাসুরা আনুষ্ঠানিকভাবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেন।
![দৈনিক গোপালগঞ্জ দৈনিক গোপালগঞ্জ](https://www.dainikgopalganj.com/media/PhotoGallery/2018November/Add-2001151341-2002090630.jpg)
- মোবাইল ডেটা চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত রোববার: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
- ঐক্যের ডাকে প্রমাণ হয়েছে জামায়াত-বিএনপির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য:কাদের
- ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি চলার পরামর্শ
- আজ ১২ ঘণ্টা ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হবে
- দেশের উন্নয়ন করাই কি অপরাধ, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
- মেট্রোরেল কবে চালু হবে বলা যাচ্ছে না: সেতুমন্ত্রী
- সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ মারা গেছেন
- স্বল্প দূরত্বের ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত বাতিল
- কারফিউ উঠবে কিনা, সিদ্ধান্ত শুক্রবার
- আজও ৭ ঘণ্টা শিথিল কারফিউ
- ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ মেট্রোস্টেশন পরিদর্শন,আবেগাপ্লুত শেখ হাসিনা
- ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক আর নেই
- ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক আর নেই
- নাশকতা মামলায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ২২৮
- স্থগিত হওয়া সব পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর
- পিছিয়ে পড়েও ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ
- সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ আর নেই
- বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন ঘেরাও-অগ্নিসংযোগ
- মজাদার আমের পুডিং
- ডায়াবেটিস রোগীদের কতটুকু কাঁঠাল খাওয়া উচিত?
- মসজিদের আদব ও শিষ্টাচার
- প্রিয় স্বামী, তোমাকে তালাক দিলাম’, দুবাই রাজকন্যার পোস্ট
- প্যারিসে গাড়ির ধাক্কায় নিহত ১, আহত ৬
- বশেমুরবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা, ক্যাম্পাস না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
- গাজায় যুদ্ধের সব নিয়ম ভেঙেছে ইসরায়েল, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৮১
- মসজিদে যেসব কাজ নিষিদ্ধ
- চট্টগ্রামে আরেকটি টানেল নির্মাণে চীনের প্রতি আহ্বান
- কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষ-প্রাণহানি: তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি
- কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার একমত: আইনমন্ত্রী
- আন্দোলনকারীরা চাইলে আজই আলোচনায় বসবে সরকার: আইনমন্ত্রী
- যারা সহিংসতাকে উস্কে দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ: কাদের
- বিয়েতে হাজির না হওয়ায় প্রেমিকের গোপনাঙ্গ কেটে নিলেন প্রেমিকা
- বন্ধুত্বের পরিসর
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন, স্পেন ও ব্রাজিল সফর - গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানকে হত্যা মামলায় জেল হাজতে প্রেরন
- স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে আবেদ আলীসহ ৭ আসামি
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা
- বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই বাংলাদেশের মুক্তি ও সাফল্য-মুখ্য সচিব
- এবার থানায় ঢুকল রাসেলস ভাইপার
- রুনা খান যা করলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম
- মুকসুদপুরে বিনামূল্যে খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ
- মুকসুদপুর প্রেসক্লাব ফ্যামেলি ডে অনুষ্ঠিত
- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজের আহ্বান
- মুকসুদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল যুবকের
- গোপালগঞ্জে বেড়েছে দুধ-ডিম ও মাংসের উৎপাদন
- গোপালগঞ্জে এক রাতে ফুটলো তিনটি রাতের রাণী ‘নাইট কুইন’
- গোপালগঞ্জে মাথায় ডিম ভেঙে শিক্ষককে লাঞ্ছিত
- ফকিরহাটে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১২
- গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হলেন তাহিরপুরের ইউএনও
- কাশিয়ানীর গ্রাম থেকে নকল পন্যের কারখানা সন্ধান
- মাঠে নেই আন্দোলনকারীরা, সাঁজোয়া যান নিয়ে প্রস্তুত পুলিশ
![দৈনিক গোপালগঞ্জ দৈনিক গোপালগঞ্জ](https://www.dainikgopalganj.com/media/PhotoGallery/2018November/Screenshot_3-1911071128.png)