সবার হাতে বই তুলে দিতে হেঁটে চলেছেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
কাঁধে ঝোলানো ব্যাগভর্তি বই, পরনে পুরনো কাপড়, গলায় পেঁচানো মাফলার, লাঠিতে ভর করে গ্রামের পথ ধরে হেঁটে চলেছেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম। না, কিছু বিক্রি করতে নয়, সবার হাতে বই তুলে দিতে তার এই যাত্রা। ১০ বছর ধরে প্রতিদিনই এভাবে কাঁধে ঝোলাভর্তি বই নিয়ে হেঁটে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বই বিলি করছেন কোনো স্বার্থ ছাড়াই। তার একটাই চাওয়া বই পড়ে যেন সকলে একটু জ্ঞান লাভ করে। তাই তো এলাকাবাসী তার নাম দিয়েছে জ্ঞানের ফেরিওয়ালা।
বলছিলাম গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমরিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সুনীল কুমার গাঙ্গুলীর কথা। ৭৫ বছর বয়সে এসেও প্রতিদিন কাঁধে ঝোলাভর্তি বই নিয়ে গ্রামে গ্রামে হেঁটে বই পৌঁছে দেন বিভিন্ন বয়সী পাঠকের হাতে। আবার আগের দেওয়া বইটি পাঠকের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে আসছেন নিজে গিয়ে। বৃদ্ধাদের দেন ধর্মের বই, শিক্ষার্থীদের দেন মনিষীদের বই, ছোটদের দেন গল্পের বই। এছাড়াও অজপাড়াগাঁয়ে নিজ বাড়ির আঙিনায় ছোট পরিসরে ছয়শত বই নিয়ে গড়ে তুলেছেন পাঠাগার। সেই পাঠাগারেও প্রতিদিন বই পড়তে আসছে অসংখ্য পাঠক। পাঠাগারে বইয়ের তালিকার কোন পছন্দের বই যদি পাঠক পড়তে চান সেটিও তিনি পৌঁছে দেন পাঠকের বাড়ি গিয়ে। পড়াশেষ হলে আবার নিজে গিয়ে ফেরত নিয়ে আসেন।
ADVERTISEMENT
জানা যায়, ছেলেবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি প্রচুর আগ্রহ ছিল সুনীল গাঙ্গুলীর। কিন্তু বই কেনার ও পড়ার সামর্থ্য ছিল না। বাড়ির পাশে এক চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে বই ধার করে পড়তেন। কিন্তু পরের কাছ থেকে বই ধার করে পড়ে তার মনের খোরাক মেটাতে পারতেন না। তখনই তিনি ঠিক করেছিলেন, কোনদিন সামর্থ্য হলে একটি পাঠাগার করবেন। সেই পাঠাগারের বই নিজে পড়বেন, অন্যকেও পড়তে দেবেন। তার সেই সামর্থ্য অবশেষে হলো চাকরি থেকে অবসরের পরে। পেনশনের টাকায় পাঠাগারের জন্য বই কিনলেন। সেসব বই তিনি কাঁধে করে মানুষের দ্বারে গিয়ে বিলি করেন।
dhakapost
আরও জানা যায়, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন সুনীল গাঙ্গুলী। ২০১৫ সালে অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার আগের বছর ২০১৪ সালে নিজ বাড়ির আঙিনায় পুত্রবধূর নামে গড়ে তোলেন চন্দ্রিকা জ্ঞান পাঠাগার নামে একটি পাঠাগার। তার এই পাঠাগারে ছয় শতাধিক বই আছে। পাঠাগার তৈরির আগে থেকেই স্বল্প পরিসরে বই সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতেন তিনি।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এই জ্ঞানের ফেরিওয়ালার সঙ্গে কথা হয়। এ সময় তিনি জানান নানা জানা অজানা গল্প।
শেষ বয়সে আপনি এই অজপাড়াগাঁয় একটি পাঠাগার তৈরি করলেন, সেই পাঠাগারের বই আবার নিজে গিয়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। এখান থেকে আপনার চাওয়া কী?
সুনীল গাঙ্গুলী: ছোটবেলা থেকেই আমার বই পড়ার প্রচুর আগ্রহ ছিল। কিন্তু গরিব পরিবারে জন্ম হওয়ায় আমার বই কেনার সামর্থ্য ছিল না। বাড়ির পাশে এক চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে বই ধার করে পড়তাম। তাতে আর মনের খোড়াক মিটতো না। তখন থেকেই আশা ছিল টাকা-পয়সা হলে বাড়িতে একটা পাঠাগার দেব। আর আমার জন্মই অজপাড়াগাঁয়, বড় হয়েছি কুসংস্কার ও দারিদ্র্যতার মধ্য দিয়ে। এই কুসংস্কার ও দারিদ্র্যতা থেকে বের হতে আমাদেরকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাহলে বের হওয়া সম্ভব। তার জন্য বই পড়তে হবে। এ কারণেই পাঠাগারটি গড়ে তোলা। এখান থেকে যেন একটু হলেও মানুষ জ্ঞান অর্জন করতে পারে। জ্ঞানপিপাসু মানুষের হাতে বই তুলে দিতে চাই। পিছিয়ে পড়া এই জনপদকে সামনে এগিয়ে নিতে চাই। এটাই আমার চাওয়া।
পাঠাগারে বইয়ের সংখ্যা কত? পাঠক কোন ধরনের বই পড়তে আগ্রহ বেশি? পুত্রবধূর নামে পাঠাগারের নামকরণ কেন করলেন?
সুনীল গাঙ্গুলি: ২০১৪ সালে চাকরি থেকে অবসরে যাই। ওই বছরই বাড়ির আঙিনায় আড়াইশ বই নিয়ে একটি পাঠাগার গড়ে তুলি। প্রথমে পাঠকের উপস্থিতি অনেক কম ছিল। আমি পেশায় একজন শিক্ষক ছিলাম কোনো বাড়িতে গেলে সবাই আমাকে ভালোবাসতেন সম্মান করতেন। গ্রামের লোকজন আমার মুখে গল্প শুনতে ভালোবাসতেন। ২০১৫ সাল থেকে ব্যাগে করে পাঠাগার থেকে বই নিয়ে গিয়ে সবাইকে পড়তে উদ্বুদ্ধ করতাম। এক্ষেত্রে একটু কৌশল অবলম্বন করতাম, যেমন- বৃদ্ধাদের দিতাম ধর্মের বই, শিক্ষার্থীদের দিতাম মনিষীদের উক্তির বই, ছোটদের দিতাম গল্পের বই। একটি বই দিয়ে বলতাম ‘বইটা পড়েন। আমি আগামী সপ্তাহে এসে জেনে যাব, কেমন লাগলো এবং নিয়ে যা। পরের সপ্তাহে বইটা পড়া শেষ হলে অন্য বই দিয়ে আসতাম। আস্তে আস্তে পাঠকের সংখ্যা বাড়তে থাকলো তখন আরও কিছু বই কিনলাম। সব মিলিয়ে এখন বইয়ের সংখ্যা সাড়ে ছয়শ। এখন পাঠকের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ অনেক বেড়েছে।
আর পুত্রবধূর নামে করার কারণ হচ্ছে, আমার একটি মাত্র ছেলে। কোন মেয়ে নেই ছেলেকে বিয়ে দিয়েছি। বৌ মা খুব ভালো মানুষ। আমাকে একদম বাবার মতো সেবাযত্ন করে। আমার বয়স হয়েছে আমি তো আর বেশি দিন বাঁচব না। আমি মারা গেলে আমার নাতি-নাতনিরা যাতে তার মায়ের প্রতি ভালোবাসায় পাঠাগারটি আগলে রাখে, সে জন্যই তার নামে পাঠাগারটি করেছি।
হেঁটে হেঁটে এতো পথ পাড়ি দেন এই বৃদ্ধ বয়সে। কষ্ট হয় না?
সুনিল গাঙ্গুলি: ছোটবেলা থেকেই আমরা কর্মজীবী মানুষতো তাই বসে থাকতে পারি না। হাঁটলে ভালোই লাগে। আবার বয়স হয়েছে একটু তো কষ্ট হয়। কিন্তু যখন একজন পাঠক একটি বই পড়ে বলে খুব ভালো লেগেছে তখন আর কষ্ট থাকে না।
এবিষয়ে সুনীল গাঙ্গুলির সাবেক সহকর্মী অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সমেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলী বলেন, আমাদের এই অজপাড়াগাঁয়ের মানুষের মধ্যে তিনি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন। নিঃস্বার্থভাবে মানুষের মধ্যে বই বিলি করে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন তিনি। পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তিনি আমাদের জ্ঞানের ফেরিওয়ালা।
কুমরিয়া গ্রমের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রতি সপ্তাহে দাদু আমাদের নতুন বই দিয়ে যান আর পুরান বইটি নিয়ে যান। পাঠাগারের বইয়ের তালিকা দেখে পছন্দের বই নাম বলে দেই তিনি পৌঁছে দিয়ে যান। আমরা এই বইয়ের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতে পারছি।
কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজন বিশ্বাস বলেন, তিনি প্রশংসার দাবি রাখেন। এই অজপাড়াগাঁয়ের মানুষের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের জ্ঞানের ফেরিওয়ালা।
- একটি মহল গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে
- আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে গেলেন প্রধানমন্ত্রী
- সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ
- মোবাইল ডেটা চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত রোববার: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
- ঐক্যের ডাকে প্রমাণ হয়েছে জামায়াত-বিএনপির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য:কাদের
- ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি চলার পরামর্শ
- আজ ১২ ঘণ্টা ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হবে
- দেশের উন্নয়ন করাই কি অপরাধ, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
- মেট্রোরেল কবে চালু হবে বলা যাচ্ছে না: সেতুমন্ত্রী
- সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ মারা গেছেন
- স্বল্প দূরত্বের ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত বাতিল
- কারফিউ উঠবে কিনা, সিদ্ধান্ত শুক্রবার
- আজও ৭ ঘণ্টা শিথিল কারফিউ
- ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ মেট্রোস্টেশন পরিদর্শন,আবেগাপ্লুত শেখ হাসিনা
- ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক আর নেই
- ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক আর নেই
- নাশকতা মামলায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ২২৮
- স্থগিত হওয়া সব পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর
- পিছিয়ে পড়েও ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ
- সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ আর নেই
- বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন ঘেরাও-অগ্নিসংযোগ
- মজাদার আমের পুডিং
- ডায়াবেটিস রোগীদের কতটুকু কাঁঠাল খাওয়া উচিত?
- মসজিদের আদব ও শিষ্টাচার
- প্রিয় স্বামী, তোমাকে তালাক দিলাম’, দুবাই রাজকন্যার পোস্ট
- প্যারিসে গাড়ির ধাক্কায় নিহত ১, আহত ৬
- বশেমুরবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা, ক্যাম্পাস না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
- গাজায় যুদ্ধের সব নিয়ম ভেঙেছে ইসরায়েল, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৮১
- মসজিদে যেসব কাজ নিষিদ্ধ
- চট্টগ্রামে আরেকটি টানেল নির্মাণে চীনের প্রতি আহ্বান
- যারা সহিংসতাকে উস্কে দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ: কাদের
- বিয়েতে হাজির না হওয়ায় প্রেমিকের গোপনাঙ্গ কেটে নিলেন প্রেমিকা
- বন্ধুত্বের পরিসর
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন, স্পেন ও ব্রাজিল সফর - গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানকে হত্যা মামলায় জেল হাজতে প্রেরন
- স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে আবেদ আলীসহ ৭ আসামি
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা
- বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই বাংলাদেশের মুক্তি ও সাফল্য-মুখ্য সচিব
- এবার থানায় ঢুকল রাসেলস ভাইপার
- রুনা খান যা করলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম
- মুকসুদপুরে বিনামূল্যে খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ
- মুকসুদপুর প্রেসক্লাব ফ্যামেলি ডে অনুষ্ঠিত
- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজের আহ্বান
- মুকসুদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল যুবকের
- গোপালগঞ্জে বেড়েছে দুধ-ডিম ও মাংসের উৎপাদন
- গোপালগঞ্জে এক রাতে ফুটলো তিনটি রাতের রাণী ‘নাইট কুইন’
- গোপালগঞ্জে মাথায় ডিম ভেঙে শিক্ষককে লাঞ্ছিত
- ফকিরহাটে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১২
- গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হলেন তাহিরপুরের ইউএনও
- কাশিয়ানীর গ্রাম থেকে নকল পন্যের কারখানা সন্ধান
- মাঠে নেই আন্দোলনকারীরা, সাঁজোয়া যান নিয়ে প্রস্তুত পুলিশ