• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

দৈনিক গোপালগঞ্জ

আজানের দোয়া পাঠের গুরুত্ব ও ফজিলত

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৪  

আজান বা আযান (আরবি: أَذَان আযান) হচ্ছে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য ইসলামি আহ্বান বা ডাকধ্বনি। দিনের নির্ধারিত সময়ে একজন মুয়াজ্জিন আজার পাঠ করেন।

আজান মুসলিমদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ফরজ বিধান নামাজ আদায়ের জন্য এটি দেওয়া হয়।

ইসলামে ঐতিহ্যগতভাবে মুসলমানদের ৫ ওয়াক্ত নামাজের জন্য দৈনিক ৫ বার মিনার থেকে উচ্চস্বরে আজান দেওয়া হয়। ফরজ নামাজের উদ্দেশ্য মসজিদে প্রবেশের জন্য এটি মুসলিমদের প্রথম ডাকধ্বনি। ইকামত নামে পরিচিত দ্বিতীয় ডাকধ্বনিতে মসজিদে উপস্থিত থাকা লোকেদের নামাজের শুরুর জন্য লাইনে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

যিনি আজান দেন তাকেই মুয়াজ্জিন বলা হয়। নামাজের যেমন গুরুত্ব রয়েছে, ঠিক তেমনি আজানেরও গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।

আজানের দোয়া

আজানের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। দোয়া পাঠের অনেক ফজিলতও তিনি বর্ণনা করেছেন। দোয়াটি হচ্ছে- اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّداً الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامَاً مَحمُوداً الَّذِي وَعَدْتَهُ 

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা রব্বা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াস সালাতিল কইমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াবআছহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়াআদতাহ’।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব। মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে (জান্নাতে প্রবেশের) এর মাধ্যমে (সবার মধ্যে বিশেষ) সম্মান দান করুন। তাকে প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাকে দিয়েছেন’।

আজানের পর দোয়া পাঠের ফজিলত

আজানের পর দোয়া পাঠের অনেক ফজিলত রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শুনে উল্লিখিত দোয়া পড়বে কেয়ামতের দিন তার জন্য আমার সুপারিশ থাকবে’। (বুখারি: ৬১৪)

অপর হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে আজানের জবাব দেবে কেয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ পাওয়ার অধিকারী হবে’। (মিশকাত)

সাদ ইবনু আবি ওয়াক্কাছ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আজান শুনে এ দোয়া পড়বে- أَشْهَدُ أَنَّ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ الله وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رضيت بالله ربًا وبمحمد ﷺ رسولًا وبالإسلام دينًا 

উচ্চারণ: ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহ, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু। রাদিতু বিল্লাহি রাব্বাও ওয়া বিমুহাম্মাদির রাসূলাও ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনা’।

অর্থ: ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই। আর মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহকে প্রভু হিসেবে, মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসেবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে খুশি হয়েছি’। যে এ দোয়া পড়বে, তার গুনাহসমূহ মাফ করা হবে। (মুসলিম ও মিশকাত)

আজান

প্রথমে আল্লাহু আকবার, ‘আল্লাহ মহান’ (৪ বার), অতঃপর আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই’ (২ বার), তারপর আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল’ (২ বার), তারপর হাইয়া আলাস সালাহ, ‘নামাজের জন্য আসো’ (২ বার) ও হাইয়া আলাল ফালাহ, ‘কল্যাণের জন্য আসো’ (২ বার); পরিশেষে আল্লাহু আকবার, ‘আল্লাহ মহান’ (২ বার) ও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই’। (১ বার)

ফজরের নামাজের আজানে পঞ্চম বাক্যের (হাইয়া আলাল ফালাহ) পর বলতে হয়, আস সালাতু খায়রুম মিনান নাওম, ‘ঘুম অপেক্ষা নামাজ উত্তম’ ( ২ বার) আর ইকামতে এই স্থানে বলতে হয় ‘কদ কমাতিস সালাহ’, ‘জামাত প্রস্তুত’ (২ বার)।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ