• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে কুল চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে দুই ভাই

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেন্নাবাড়ি গ্রামের দুই ভাই তাদের ৫বিঘা জমিতে কুলের চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। খরচ উঠিয়ে তারা এ বছর এ জমি থেকে অন্ততঃ ৫লাখ টাকা লাভের মুখ দেখছেন। 

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন তারা। তাই এ কুলের আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। বিভিন্ন জাতের কুলের চাষ হচ্ছে মাঠের পর মাঠ। 

সদর উপজেলার ভেন্নাবাড়ি গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেন্নাবাড়ি গ্রামের শিক্ষিত যুবক প্রবীর নজন ও অপূর্ব নজন। দুই ভাই মিলে নিজের পৈত্রিক জমিতে বিভিন্ন ফলের চাষ করলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এতে ভেঙ্গে না পড়ে ঠিক করেন কুলের চাষের আবাদ করবেন। ইউটিউব দেখে আর চুয়াডাঙ্গা বিভিন্ন কুলের চারা এনে নিজেদের ৫ বিঘা জমিতে রোপন করেন। স্বল্প মেয়োদে কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। গাছে গাছে ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন জাতের কুল।

তাদের ক্ষেতে রয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান বল, ভারত সুন্দরী, কাশ্মেরী আপেল, বল সুন্দরী, থাই আপেল, সীড লেসসহ বিভিন্ন জাতের কুলের গাছ। প্রচলিত আপেল কুল ও বাউ কুলের চেয়ে আকারে বেশ বড় এই কাশ্মীরি আপেল কুল ও ভারতীয় জাতের বল সুন্দরী কুল। 

কুলের আবাদে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। ইতিমধ্যে কুল বিক্রি করেছেন ৪ লাখ টাকার, আর ক্ষেতে যে ফল রয়েছে তা বিক্রি করে উঠবে আরো ৪ লাখ টাকা। খরচ উঠিয়ে এ মৌসুমে প্রায় ৫ লাখ টাকা লাভ করবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এ জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। মাত্র চার মাসের মধ্যে ফল পাওয়া যায়, আর বছরে ফলন পাওয়া যায় অন্তত তিনবার। তাই বছর বছর কুল বাগান বাড়েই চলছে। গোপালগঞ্জে এ কুলের আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিকভিত্তিতে। অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে লাভজনক বেশি। এ কারণের চাষিরা এদিকে ঝুঁকছে।

কুল চাষী যুবক প্রবীর নজন জানান, আগাম প্রতি কেজি কুল ১’শ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন। বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় প্রতি কেজি কুল বিক্রি হলেও লাভবান হচ্ছেন তারা। ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার চারা বিক্রি করছেন। বিভিন্ন জাতের কুলের আবাদ করে বেকার যুবকরা তাদের বেকারত্ব ঘোঁচাতে পারেন বলে মনে করেন এই ফল চাষী।

অপর কুল চাষী যুবক অপূর্ব নজন জানান, নিজেরাই নিজেদের ক্ষেত দেখাশোনা করার পাশাপশি ফল বাছাই করে বিক্রির জন্য উপযোগী করে তোলেন। শুধু স্থানীয়রাই নয়, এ ক্ষেত দেখতে দূর দুরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন। আবার অনেকেই কুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এসব ফল রাসয়ানিক মুক্ত হওয়ায় স্থানীয় বাজারে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। ফলে পাইকাররা ক্ষেত বা বাড়ীতে এসেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আ: কাদের সরদার বলেন, এ জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে কুলের আবাদ করলে চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবার পাশাপশি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে। মাঠ ফসল থেকে কুল ফল চাষে দ্বিগুণ লাভ হওয়ার ফলে অনেকেই এ ফল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এসব চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি পরামর্শও দেয়া হয় বলে জানান, এই কৃষি কর্মকর্তা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ