• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

চ্যালেঞ্জিং নদীশাসনের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ সম্পন্ন

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৯ জুন ২০১৯  

সব চ্যালেঞ্জ জয় করে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। মূলসেতুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নদীশাসন কাজও এগিয়ে চলেছে।  বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ এ সেতুকে উত্তাল পদ্মার ঢেউ থেকে নিরাপদ রাখতে উভয়পাড়ে কংক্রিট ব্লক ও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে চলছে এ নদীশাসন। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যে, নদীশাসনের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে গেছে। 

পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ পাঁচ ভাগে বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে- মূলসেতু নির্মাণ, নদীশাসন, পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ, দুই তীরে দু’টি সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং নির্মাণকাজের অবকাঠামো তৈরি। এরমধ্যে মূলসেতুর মতোই নদীশাসন কাজকেও চ্যালেঞ্জিং হিসেবে দেখেন সংশ্লিষ্টরা। কাজের ধরন বিষয়ে তারা বলছেন, পদ্মানদীর ভেতর থেকে ড্রেজিং (খনন) করে মাটি ফেলতে হয়। এরপর ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলতে হয়। এই ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়েই নদীর নিচ থেকে তীর পর্যন্ত বাঁধতে হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এতো চ্যালেঞ্জিং সত্ত্বেও নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৬০ শতাংশ। মোট ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৬ কিলোমিটার পাড় বাঁধা হয়ে গেছে। এ কাজের আর কোনো বড় চ্যালেঞ্জ নেই। পদ্মাসেতুর মূল কাজের সঙ্গে নদীশাসন কাজও সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ তাদের।নদীশাসন কাজের তদারকি করছেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু জাহিদ মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ  হুমায়ুন কবীর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদ্মার খরস্রোত চোখের পলকে সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। মাটির কিছু আচরণের কারণে অনেক সময় গর্ত সৃষ্টি হয়। ফলে জিও ব্যাগ ও ব্লক ভাসিয়ে নিয়ে যায় পদ্মা। তবে সব চ্যালেঞ্জিং কাজের অবসান হয়েছে। মূলসেতুর মতো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে নদীশাসন কাজ। দুই পাড় বাঁধার আগে পানির নিচেও সুরক্ষার কাজ করতে হয়। এই সুরক্ষার কাজও এগিয়ে গেছে। পাড় বাঁধার ৬ কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে নদীশাসন কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। 
 
৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে নদীশাসনের কাজ বাস্তবায়ন করছে চীনের সিনো-হাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নদীশাসন কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালে এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান আরও সময় নিয়েছে। নদীশাসন কাজে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ২২৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। 
দীর্ঘ সময় লাগার কারণ হিসেবে সিনো-হাইড্রো করপোরেশন বলছে, প্রকৃতিগত কারণে নদীশাসনের মূল সময় নভেম্বর-এপ্রিল। সেজন্য অপেক্ষা করতে হয় অক্টোবর পর্যন্ত। তারপরও কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। 

এই কাজে ১ কোটি ৩৩ লাখ কংক্রিটের ব্লক ও ২ কোটির বেশি বালুভর্তি জিও ব্যাগ লাগছে।  এরমধ্যে ৩২ লাখ ৭৭৬টি ব্লকের কাস্টিং হয়েছে, ডাম্পিং হয়েছে ৩৭ লাখ ৬৮ হাজার ৯৯০টি জিও ব্যাগের। এছাড়া মাওয়া-জাজিরা উভয়পাড়ের কিছু ট্রায়াল সেকশনে জিও টেক্সটাইল প্লেসমেন্ট ও হাফ ব্রিক ডাম্পিং সমাপ্ত হয়েছে। সিসি ব্লক ডাম্পিংয়ের কাজও সম্পন্ন হয়েছে উভয় পাড়ে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা আশা করছেন, নদীশাসন কাজ সম্পন্ন হলে সুরক্ষিত থাকবে পদ্মাসেতু এবং প্রকল্প এলাকায় নির্মিত সংযোগ সড়ক, অফিস ভবন, ল্যাবরেটরি, মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডুপ্লেক্স ভবনের মোটেল, ওভারহেড পানির ট্যাংক, বিদ্যুতের সাবস্টেশন, গার্ডদের বাসস্থানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ