জাল প্রবেশপত্র তৈরি করে এসএসসি পরীক্ষা দিতে এসে গ্রেফতার

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় জাল প্রবেশপত্র তৈরি করে এসএসসি পরীক্ষা দিতে এসে এক পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে উপজেলার সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন কেন্দ্রে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার জিসান শেখ  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দত্তডাঙ্গা গ্রামের মনির শেখের ছেলে ও পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেট একাডেমি অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র।

জানা গেছে, জিসান শেখ ২০২৪ সালের এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় ৭ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। এ কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে এসএসসির পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেয়নি। অপরদিকে একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রিফাত শেখ গত বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হয়।

এ বছর রিফাত শেখের প্রবেশপত্র এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ড জাল করে জিসান শেখ পরীক্ষা দিতে আসলে পরীক্ষা সিটে স্বাক্ষরের সময় সে ডিউটিরত শিক্ষকের হাতে ধরা পড়ে।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে সিজান শেখকে ৩ বছরের জন্য এসএসসি পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার ও পুলিশ ডেকে গ্রেফতারপূর্বক নিয়মিত মামলার নির্দেশ প্রদান করেন।

এ বছরের শুধু গণিত বিষয়ের পরীক্ষার্থী রিফাত শেখ বলেন, আমি এ বছর শুধু গণিত বিষয়ে পরীক্ষা দেব। শুনছি জিসান আমার প্রবেশপত্র এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ড জাল করে পরীক্ষা দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছে।

জিসান শেখের মা জেসমিন বেগম বলেন, জিসান টেস্ট পরীক্ষায় ৭ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিল। এজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ফরম পূরণ করতে দেয়নি। গত এক সপ্তাহ আগে আমার ভাসুরের জামাতা (জিসানের চাচাতো বোনের স্বামী) ইয়াসিন মিনা ২৫ হাজার টাকা নিয়ে জিসানকে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড এনে দেয়। এ প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে পরীক্ষা দিতে এলে পুলিশ আমার ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে জানার জন্য ইয়াসিন মিনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া জায়নি। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। ইয়াসিন মিনা  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মাঝিগাতী গ্রামের খালিদ মিনার ছেলে।

পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেট একাডেমি এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম তুহিন বলেন, রিফাত শেখ এবং জিসান শেখ দুজন আমার বিদ্যালয়ের ছাত্র। রিফাত শেখ গত বছর পরীক্ষা দিয়ে শুধু গণিত বিষয়ে ফেল করেছে। সে এ বছর শুধু গণিত বিষয়ে পরীক্ষা দেবে। তার রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জিসান জাল প্রবেশপত্র তৈরি করে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আটক হয়েছে। সে যেটা করেছে তাহা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ জিসান আটক না হলে সব পরীক্ষা দিলেও তার ফলাফল আসত না। 

কোটালীপাড়া থানার এসআই কাজল দাস বলেন, জাল প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড তৈরি করে পরীক্ষা দিতে আসার অপরাধে আটককৃত জিসান শেখের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা অপরাধ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ মামলায় জিসানের চাচাতো বোনের স্বামী ইয়াসিন মিনাকেও আসামি করা হবে।