• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

ইফতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৪  

পবিত্র রমজানের রহমত দশকের ৭ম দিন। রোজাদারের কাছে প্রতিটি মুহূর্ত আনন্দের। কারণ এ মাসে মহান আল­াহর  অফুরন্ত রহমতের বারিধারা পৃথিবীতে বর্ষিত হয়। সারাদিনের উপবাসের ক্লিষ্ট যাতনার অবসানে যখন ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসে, তখন আর তর সয় না। দিনের শেষে ইফতারের অপেক্ষা করা সত্যি এক অপূর্ব আনন্দের মাত্রা জোগায় প্রত্যেক রোজাদারের নিকট। ইফতারের সময় রোজাদার অনাবিল প্রশান্তি অনুভব করে থাকেন এবং ইফতারের পর দৈহিক ও আত্মিক তৃপ্তির এক পরম সুখানুভূতিতে নিজেকে পরম সৌভাগ্যবান বলে মনে করে থাকেন। রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হলো ইফতার।  হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল­াহ (সাঃ) বলেছেন, হাদিসে কুদসিতে মহান আল­াহ তায়ালা বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয় যারা দ্রুত ইফতার করে’ (তিরমিজি শরিফ)। ইফতার শব্দটি আরবি ‘ফাতর’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ভঙ্গ করা বা ছিঁড়ে ফেলা। এখানে ‘ফিতর’ যে অর্থ প্রদান করে, তা হচ্ছে এমন খাদ্য যা দ্বারা রোজা ভঙ্গ করা হয়। একজন রোজাদারের যথাসময়ে ইফতার করা একান্ত প্রয়োজন। সারাদিন রোজা পালন করে যথাযথভাবে সময়মতো ইফতার করার গুরুত্ব অত্যধিক। সূর্যাস্তের পর বেশি দেরি না করে ইফতার করা উত্তম। বৈধ কারণ ছাড়া বিলম্বে ইফতার করা মাকরুহ বা দুষণীয়। এর মধ্যে অনেক কল্যাণ নিহিত আছে। সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা মোস্তাহাব বা উত্তম। 
রাসুলে করীম (সাঃ) এরশাদ করেন, মানুষ যতদিন বিলম্ব না করে  ইফতারি করবে ততদিন কল্যাণের ওপর থাকবে (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী)। উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হুজুর (সা.) বলেছেন, যখন রাত আসে, দিন চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায় তখন  ইফতার করবে (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ)। আর এক হাদিসে আছে, আমার উম্মত সুন্নতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, যতদিন পর্যন্ত ইফতার করার জন্য নক্ষত্র উদয়ের অপেক্ষা না করবে (ইবনে হিব্বান, হাকিম)। ইহুদি ও খ্রিস্টানদের অভ্যাস ছিল যে তারা যতক্ষণ পর্যন্ত নক্ষত্র উদিত হয়েছে এরূপ না দেখত ততক্ষণ ইফতার করত না। এটি ছিল তাদের যুক্তিহীন কাজ। এর বিপরীতে হুজুর (সাঃ) আমাদেরকে তাড়াতাড়ি ইফতার করার শিক্ষা দিয়েছেন। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে থেকে খাদ্যসামগ্রী সামনে নিয়ে অপেক্ষা করা সুন্নাত। 

কারণ, এ সময়ে মানুষ খুবই ক্ষুধার্ত থাকে এবং একমাত্র আল­াহর ভয়ে খাবার সামনে হাজির থাকা সত্তে¡ও মুখে তোলে না। এতে মহান আল­াহ খুব খুশি হন। কারণ, ইফতারের সময়টা হলো বিনয় ও আল­াহর জন্য ধৈর্য্য ধারণের চরম মুহূর্ত। এ সময় জাহান্নাম থেকে মুক্তিদানের মুহূর্ত। তাই আসুন আমরা ইফতারির সুন্নতের এহতেমাম করি। 

লেখক: আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ