• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের সূচনা গুগলের

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯  

তবে কি ‘কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি’র যুগ শুরু হল! মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগলের সর্বশেষ আবিষ্কার বিশ্বজুড়ে তেমন শোরগোলই ফেলে দিয়েছে। তারা দাবি করেছে, কম্পিউটিং বা পারফরম্যান্স বিবেচনায় প্রচলিত সব কম্পিউটারকে ছাপিয়ে গিয়েছে গুগল। অর্থাৎ, তারা নাকি কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করে ফেলেছে।
গত কয়েক বছর ধরে চলছিল এক রুদ্ধশ্বাস কম্পিটিশন। সে প্রতিযোগিতায় নাকি প্রথম হয়েছে গুগল। গত অক্টোবরে প্রকাশিত ‘নেচার’ পত্রিকায় ৭৮ জন বিজ্ঞানী একটি পেপার লিখেছেন। সেখানে তাঁরা বলছেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটার প্রসেসরের পরীক্ষা চালায় গুগল। নতুন এই প্রসেসর মুহূর্তে যে গণনা করেছে সবথেকে শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারের একই গণনা করতে কয়েক হাজার বছর সময় লাগবে। এই বিষয়টিকেই বলা হয় কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি। অর্থাৎ, যখন কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে কোনও প্রতিষ্ঠান বা দেশ ওই সব জটিল সমস্যার সমাধান অত্যন্ত কম সময়ে করতে পারবে, তখনই বলা হবে যে তারা কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি অর্জন করেছে।
জানা গিয়েছে, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং করতে সক্ষম ‘সিকামোর’ নামের ৫৩ কিউবিটস (কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মৌলিক একক) একটি বিশেষ চিপ ব্যবহার করেছে গুগল। ফলে এটি জটিল গণনা ২০০ সেকেন্ডে শেষ করতে সক্ষম হয়েছে সেই কম্পিউটার। যা বিশ্বের সেরা সুপার কম্পিউটারের করতে সময় লাগবে ১০ হাজার বছর। প্রথাগত কম্পিউটার বিটসের চেয়ে বহুগুণ বেশি কাজ করতে পারে কিউবিটস।
কম্পিউটার বোঝে শুধুমাত্র বাইনারি ভাষা। যা মাত্র দুটি সংখ্যা — ০ ও ১। এই বাইনারি সংখ্যাপদ্ধতি দিয়ে সব ধরনের কাজ সারে এখনকার কম্পিউটার। তবে একই সঙ্গে ০ ও ১-এর প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার ০ ও ১—দুটিরই প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। আবার একই সময়ে একই সঙ্গে ০ ও ১-এর প্রতিনিধিত্ব করতে পারে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। এই জায়গাতেই এগিয়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। গবেষকেরা এই আবিষ্কারকে ১৯০৩ সালে রাইট ভাইদের প্রথম এরোপ্লেন আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে এ কম্পিউটারের পূর্ণ সুফল পেতে আরও সময় লাগবে।
যদিও, গত সেপ্টেম্বরেই ফাঁস হয়েছিল কোয়ান্টাম কম্পিউটার নিয়ে গুগলের পরীক্ষার কথা। তাতে দাবি করা হয়, গুগল এরই মধ্যে তৈরি করে ফেলেছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। তারপর অক্টোবরে ৭৮ জন বিজ্ঞানীর পেপার প্রকাশিত হয় ‘নেচার’ পত্রিকায়। বলা হয়ে থাকে, কোয়ান্টাম কম্পিউটারের নাগাল যে বা যারা পাবে, তারাই পুরো বিশ্বের নিয়ন্ত্রণ করবে। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রথাগত কম্পিউটার যে অল্পসংখ্যক জটিল সমস্যার সমাধান করতে হাপিয়ে ওঠে, সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান এক লহমায় করতে পারবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। ফলে ওষুধ থেকে শুরু করে তেলশিল্প, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সবক্ষেত্রেই বিপ্লব আনবে এই কম্পিউটার।
ঝুঁকিও ঢের আছে। যদি, উন্নত কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি হয়েই যায়, তবে বর্তমানের প্রচলিত ইন্টারনেটের যাবতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে। ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য ইকনমিস্ট’ জানিয়েছে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার যে প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকবে, সে চাইলেই কোটি কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিজেদের ঝুলিতে ভরে নিতে পারবে। ফলে একে ‘ভয়ঙ্কর’ কম্পিউটারও বলা যেতে পারে। কিন্তু, আর এক মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা আইবিএম জানিয়েছে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার নয়। গুগল আসলে আজকের সুপারকম্পিউটারকে আকার, আয়তনে ছোট করছে।  

২১০ কোটি ডলারে ফিটবিট অধিগ্রহণ করল গুগল
দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে ফিটনেস ডিভাইস মার্কার ‘ফিটবিট’ কিনে নিল গুগল। সংস্থা সূত্রে খবর, ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এই অধিগ্রহণ চূড়ান্ত হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই স্মার্টওয়াচের বাজারে অ্যাপলকে টেক্কা দিতে চাইছে গুগল। কিন্তু অ্যাপল, স্যামসাং-এর দাপটে একেবারেই সুবিধা করতে পারছে না তারা। সেই কারণেই ফিটনেস ট্র্যাকার প্রযুক্তির সেরা প্রতিষ্ঠান ফিটবিট কেনার চেষ্টা করছিল বিশ্বের সেরা সার্চ ইঞ্জিন। অবশেষে সেই চেষ্টায় সফল হল তারা। এবার গুগল ফিটনেস ট্র্যাকার এবং স্মার্ট ঘড়ির বাজারে কতটা সফল হয়, তা অবশ্য সময় বলবে।
অন্যদিকে, ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়েছিল ফিটবিটও। ফিটবিটের সহপ্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও জেমস পার্ক জানিয়েছেন, গুগল আমাদের জন্য আদর্শ সংস্থা। গুগলের প্রযুক্তি এবং গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম ফিটবিটের পরিষেবা আরও উন্নত করবে। ১২ বছর আগে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পার্ক। ১০০ মিলিয়নেরও বেশি ডিভাইস বিক্রি করেছে ফিটবিট। তবে পরে অন্যান্য সংস্থা বাজারে আসায় তাদের প্রযুক্তির চাহিদা কমে এসেছে। তবে গুগল অধিগ্রহণের পর তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা করছেন গ্রাহকরা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ